শিরোনাম
◈ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দলের যত হিসাব ◈ (২৬ অক্টোবর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার  ◈ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কাউকে শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হবে না: জাতিসংঘকে সেনাপ্রধান ◈ থাইল্যান্ডে ভ্রমণপ্রত্যাশী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ই-ভিসা চালুর সিদ্ধান্ত ◈ জবি ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ্যে এলো ◈ ১৫ কোটি টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক কপি ‘দ্য লিটল প্রিন্স’ ◈ ক্রেস্টে শেখ হাসিনার নাম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ◈ নিলামে উঠবে আওয়ামী এমপি-মন্ত্রীদের ১৮ বিলাসী গাড়ি ◈ এমপি হোস্টেলে ৫ই আগস্টের পর দুটি ভবন ছাড়া বাকি সব ভবন খালি ◈ ব্যাংকের ভেতরেই ব্যাগ কেটে গ্রাহকের পেনশনের লাখ টাকা চুরি (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৬ অক্টোবর, ২০২৪, ০২:১১ রাত
আপডেট : ২৬ অক্টোবর, ২০২৪, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাওবাদীদের কড়া বার্তা দিলো মোদি সরকার

আর কোনোভাবেই ভারতে মাওবাদী সন্ত্রাসকে সহ্য করা হবে না। ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মুলস্রোতে ফিরুন নতুবা ভয়ংকর পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকুন। রীতিমতো দিনক্ষণ ঘোষণা করে এবার মাওবাদীদের কড়া বার্তা দিলো মোদি সরকার।

সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই আলটিমেটাম জারি করে এবং মাওবাদীদের সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, মাওবাদীদের হয় আত্মসমর্পণ করতে হবে অথবা শিগগিরই নিরাপত্তা বাহিনীর সর্বাত্মক অভিযানের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত থাকতে হবে। মাওবাদীরা সহিংসতা ত্যাগ করার জন্য আমার আবেদন না শুনলে, আমরা শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করব।

ছত্তিশগড়ে মাওবাদী সহিসংতার শিকার ৫৫ জন ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করার সময় এই কড়া বার্তা দিয়েছেন।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাওবাদের সম্মুখীন সব রাজ্যকে মাওবাদী হুমকির অবসান ঘটাতে এবং প্রতিটি মাওবাদীর আত্মসমর্পণকে নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক যুদ্ধের পথে যেতে নির্দেশ দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, ছত্তিশগড়ের চারটি জেলা বাদে সারা দেশ থেকে এই বিপদকে মুছে ফেলতে সক্ষম হয়েছে কেন্দ্র। মোদি সরকার লাল সন্ত্রাসবাদের এই হুমকিকে নিশ্চিহ্ন করতে বদ্ধপরিকর। মাওবাদী কার্যকলাপ বন্ধ করতে একটি দ্বিমুখী কৌশল নেওয়া হয়েছে। এক মতার্দশগত লড়াই ও মাওবাদীদের অর্থসংগ্রহে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। এজন্য ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্র সরকার শহরাঞ্চলে কর্মরত মাওবাদীদের চিহ্নিত করে। এনজিওর আড়ালে এই অর্থসংগ্রহ বন্ধে পদক্ষেপ নেয়। এজন্য ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট (এফসিআরএ) নিয়মগুলো এতটাই কঠোর করা হয়েছিল যে ভারতে মাওবাদী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপকে উৎসাহিত করার জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো এই ধরনের সব তহবিল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি এবং শহুরে নকশালদের এই দেশবিরোধী পরিকল্পনা উন্মোচন করার জন্য একাধিক তদন্ত চালিয়েছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জানা গিয়েছিল, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে মাওবাদীরা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও সহজে কাজ করতে সক্ষম হয়েছিল। কারণ শহুরে এলাকায় তাদের বন্ধুরা বিদেশি তহবিল সংগ্রহ করেছিল এবং তাদের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যেতে পারছিল। এই অর্থায়নের জন্য নকশালরা অত্যাধুনিক অস্ত্র যেমন, হালকা মেশিনগান, রাইফেল, কার্বাইন ও প্রচুর গোলাবারুদ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিল।

তদন্তে দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে, এই নকশালদের নেটওয়ার্কের মোট সংগ্রহ ১ হাজার কোটি থেকে বেড়ে আড়াই হাজার কোটি রুপি হয়েছে। প্রতি বছর অস্ত্র সংগ্রহের আনুমানিক বাজেট ২০০ কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই অর্থের একটি বড় অংশ সশস্ত্র ইউনিট স্থাপন, প্রচার শাখা চালানো এবং ক্যাডার নিয়োগের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। পাশাপাশি এই তহবিলের একটি ভালো পরিমাণ অর্থ শহুরে নকশালরা ব্যক্তিগত কাজের জন্যও ব্যবহার করেছিল। গোয়েন্দা সূত্রে এমনটিই জানা গেছে।

জানা গেছে, শহুরে নকশালদের মোকাবিলা কেন্দ্রের অগ্রাধিকারের শীর্ষে ছিল। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোকে ওই ধরনের ব্যক্তিদের অপারেশনের প্রধান ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাতে জানা গিয়েছিল যে, সুরাট-পুনে করিডোর, কলকাতা, কোয়েম্বাটুর ও বেঙ্গালুরু ছিল এদের এপি-সেন্টার, যেখান থেকে ওই ব্যক্তিরা কাজ করত। এর পাশাপাশি দেখা গেছে, শহর ও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে চলাচলের সেতুবন্ধন করার জন্য ওই ব্যক্তিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এনজিও সংগঠন ছিল।

রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র’)-এর সাবেক কর্মকর্তা অমর ভূষণ এ বিষয়ে বলেছেন, শহরাঞ্চলে যারা কাজ করেন তারা তাদের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এটি করেন। যদিও বেশ কয়েক বছর ধরে গ্রামীণ এলাকায় মাওবাদীদের দিকে নজর দেওয়া হয়েছিল, শহরে যারা তাদের জন্য কাজ করছে এবং তাদের মধ্যস্থতাকারীদের দিকে কোনও মনোযোগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া ওই ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ এগুলো নকশালদের তহবিল সরবরাহ এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের ফ্রন্টে পরিণত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেছেন, একটি দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যা প্রচার করা হয়েছিল যে, আরবান নকশালবাদের ধারণাটি একটি মিথ। যদিও এই মিথ ভেঙে দেওয়ার পর দেখা গেছে যে, ওই ব্যক্তিরাই অস্ত্র ও তহবিল সরানোর জন্য পাইপলাইন তৈরি করেছিলেন। আর তা করার জন্য তারা স্থানীয় মাফিয়া এবং অন্যান্য বহিরাগতদের সাহায্য নিচ্ছিল।

মাওবাদীদের ২০২৬ সালের মধ্যে নিশ্চিহ্ন করতে কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৪ সাল থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করেছে। ২০১৯ সালের পর প্রায় ২৫০টি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। গত এক বছরে মাওবাদী অধ্যুষিত মূল এলাকায় ৩২টি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে, গত বছরে অন্তত ১১৫ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে এবং ১২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও ১৫০ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে।

বস্তারের আবুজমারহের জঙ্গলে বন্দুকযুদ্ধে প্রায় ২৮ জন মাওবাদী নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে যে পাঁচজন নিহত হয়েছেন তারা ছিলেন সিনিয়র কমান্ডার। এই বছরের এপ্রিলে বস্তার বিভাগের কাঙ্কের জেলায় ২৯ জন মাওবাদী নিহত হয়েছিল। বস্তার অঞ্চলে একক অভিযানে সম্ভবত এই প্রথমবারের মতো এত বেশি সংখ্যক নকশাল নিহত হয়েছিল। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়