আনন্দবাজার: বিশ্ব জুড়ে দারিদ্রের ছবিটা এখনও কতখানি ভয়ানক, ফের তা তুলে ধরল রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিসংখ্যান। ভারতের পরিস্থিতি যে আশঙ্কাজনক, দেখাল সেটাও। তাদের প্রকাশিত দারিদ্র সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে ১১০ কোটি মানুষ তীব্র দারিদ্রের অন্ধকারে ডুবে রয়েছেন। তাঁর অর্ধেকই মূলত ৫টি দেশের। যার মধ্যে সকলের আগে ভারত। এখানে অতি দরিদ্র মানুষ ২৪.৪০ কোটি। পাকিস্তানে ৯.৩০ কোটি, ইথিয়োপিয়ায় ৮.৬০ কোটি, নাইজেরিয়ায় ৭.৪০ কোটি, কঙ্গোতে ৬.৬০ কোটি মানুষ রয়েছেন এই তালিকায়। মোট দরিদ্র মানুষের প্রায় অর্ধেকই (৫৮.৪০ কোটি) শিশু।
তবে আফগানিস্তানে সেই হার ৫৯%। ওই ১০০ কোটি ছাড়ানো মোট দরিদ্রদের প্রায় ৪০% সংঘর্ষে জর্জরিত এবং কমজোরি দেশগুলির বাসিন্দা বলেও জানিয়েছে রিপোর্ট।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে ওই রিপোর্ট তৈরি করেছে ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) এবং অক্সফোর্ড পভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ। সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্ব জুড়ে দরিদ্রদের ৮৩ শতাংশই গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। একই সংখক গরিব মানুষ দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশে সহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলির বাসিন্দা।
রাষ্ট্রাপুঞ্জ ও অক্সফোর্ড মিলে এই বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচক (এমপিআই) প্রকাশ করে ২০১০ সাল থেকে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জীবনযাত্রার মান-সহ ১০টি মাপকাঠির নিরিখে রিপোর্ট তৈরি হয়। এ বছর ১১২টি দেশের ৬৩০ কোটি মানুষকে নিয়ে সমীক্ষা হয়েছে। তার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে দারিদ্র সূচক।
দুই প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এই রিপোর্টে সংঘর্ষপূর্ণ অঞ্চলের দারিদ্র নিয়ে সমীক্ষার উপরেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরে ২০২৩ সালেই বিশ্ব জুড়ে সামরিক সংঘর্ষ হয়েছে বেশি। সংঘর্ষ, বিপর্যয় ও আরও কিছু কারণে ১১.৭০ কোটি মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছেন। ইউএনডিপি দফতরের ডিরেক্টর পেড্রো কনসেইসাও বলেন, “সামরিক সংঘর্ষেরনিরিখে এমপিআই সূচক এই প্রথম তৈরি করা হয়েছে। যা বলছে, সংঘর্ষের সঙ্গে সমান তালে দারিদ্র কী ভাবে বেড়েছে।’’ তিনি জানান, “দেখা গিয়েছে, ৪৫.৫০ কোটি বহুমাত্রিক ভাবে দরিদ্র মানুষ সংঘর্ষপূর্ণ অঞ্চলে বাস করেন। তাঁরা পুষ্টি, শিক্ষা, পানীয় জল ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ পাওয়ার ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ অঞ্চলের দরিদ্রদের থেকে ৩-৫ গুণ বেশি বঞ্চিত।’’
আপনার মতামত লিখুন :