শিরোনাম
◈ শেখ হাসিনা সরকার রেখে গেছে ১০ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন ◈ কী হয়েছিল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায়? যা জানা গেল ভাইরাল সেই ভিডিওটির সম্পর্কে (ভিডিও) ◈ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাবিতে শিক্ষার্থীদের গণপিটুনির শিকার  ◈ আন্দোলনে নিহতদের পরিবার পাবে ৫ লাখ, আহতরা ১ লাখ ◈ প্রধান বিচারপতি যে ১২ নির্দেশনা দিলেন ◈ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থেকে বাদাম বেঁচে খেলেও ভালো করতাম : রিমান্ডে যুবলীগ নেতা ◈ বিদেশে ‘সরানো’ দুই লাখ কোটি টাকার খোঁজে বাংলাদেশ : ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন ◈ আলজাজিরার অনুসন্ধান : যুক্তরাজ্যে ৩ হাজার কোটির সম্পত্তি কিনেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী (ভিডিও) ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন ৭ জন, আগে যেতেন ১৫০-২০০ : বড় ব্যতিক্রম ◈ চীন অত্যাধুনিক হেলিপোর্ট বানাচ্ছে অরুণাচল সীমান্তের কাছে, চাপে ভারত

প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:১৩ বিকাল
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:৪৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘স্বপ্নের’ আমেরিকা মানুষ ছাড়তে চাইছে কেন?

‘স্বপ্নের দেশ’ আমেরিকা। অনেকের চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ও শান্তিময় দেশ যুক্তরাষ্ট্র। স্বপ্ন দেখেন সেখানে বসবাসের। তবে এই আমেরিকান রাজনীতির ওপর হতাশা, শঙ্কায় দেশটি ছাড়তে চাইছে হাজার হাজার মানুষ। সম্প্রতি এ নিয়ে একটি জরিপ প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। 

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কথার ফুলঝুড়ি ছড়ানোর রাজনৈতিক ব্যবস্থায় কিছু মার্কিনি দেশ ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা করছে। আগামী নভেম্বরে পছন্দের প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যাবেন কি না—এমন প্রশ্নে চলতি গ্রীষ্মে প্রায় ২ হাজার পাঠক নিউইয়র্ক টাইমসকে তাদের মতামত জানিয়েছেন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও একই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আরও ৩ হাজার মানুষ। এরমধ্যে কিছু উত্তরদাতা এরই মধ্যে আমেরিকা থেকে সরে গেছেন। আবার কেউ কেউ এর জন্য চেষ্টা করছেন। 

তাঁদের এমন ইচ্ছার বিভিন্ন কারণ ছিল। অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা আশঙ্কা করছেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হলে দেশটি কর্তৃত্ববাদী সরকারের হাতে পড়তে পারে।  আবার অনেকের শঙ্কা কমলা হ্যারিসের গাজা যুদ্ধ ও অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা নিয়ে। এছাড়াও অনেকে বন্দুক হামলা, রাজনৈতিক শিষ্টচারের অভাব, গর্ভপাতের বিধিনিষেধ, ক্রমবর্ধমান ইহুদি বিদ্বেষ, বর্ণবাদ এবং এলজিবিটিকিউ বৈষম্য নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন।   

জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা সবাই কর্মজীবী ছিলেন। এখানে কোনো অবসরপ্রাপ্ত, সম্পদশালী ভ্রমণকারী বা শিক্ষার্থীদের রাখা হয়নি। 

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার নৃবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক মেগান এ কার্নি বলেন, একটি সাধারণ ধারণা রয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতন হচ্ছে। পরবর্তী নির্বাচনে কে জিতবে এখানে তা বিবেচ্য নয়। 

জরিপে বেশ কয়েকজন পাঠক আমেরিকান গণতন্ত্রের ভবিষ্যত এবং নির্বাচনের পরে দাঙ্গা-আন্দোলন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক দম্পতি বলেছেন, সহিংসতা শুরু হওয়ার শঙ্কায় তারা ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছেন।   জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা   কর্তৃত্ববাদী শব্দটি ৪৯ বার, স্বৈরশাসক ৪২ বার,ফ্যাসিবাদী বা ফ্যাসিবাদ ১০১ বার ব্যবহার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন আবাসন ব্যবসায়ী রবার্ট হর্টন। ভার্জিনিয়ার এই বাসিন্দা এক দশক আগে প্যারিসে যাওয়া শুরু করেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় মার্কিন রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেশ ছেড়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে। এই ব্যবসায়ী নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, দেশে ছেড়ে চলে যাওয়াদের মধ্যে অনেকেই আর ফিরে আসার আশা করেন না। চলতি বছরের শেষে প্যারিসে থিতু হওয়ার কথা ভাবছেন হর্টন।  স্থির জীবনযাপনের জন্য তিনি এই শহরটিকে সেরা মনে করেন। 

 ট্রাম্প সমর্থক হলেও হর্টন মনে করেন,  নভেম্বরে কমলা বিজয়ী হবেন। এমনটি হলে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হবে বলেও জানান তিনি। তাঁর মতে, কমলা অর্থনীতি, মার্কিন সীমান্ত পরিস্থিতি এবং পররাষ্ট্র নীতি ঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন না। মার্কিন এই ব্যবসায়ী বলেন, এই দেশ আরও উগ্রবাদী, চরম উগ্র বামপন্থী হয়ে উঠবে। তিনি (কমলা) ক্ষমতায় এলে আমরা আমাদের সমস্ত শালীনতা সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলব।

সিয়াটলের বাসিন্দা নারী রেবেকা হটনের আমেরিকান ও ব্রিটিশ নাগরিকত্ব রয়েছে। ৪৮ বছর বয়সী রেবেকার পরিকল্পনা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যাবেন। ২০২০ সালে নির্বাচনের পর রেবেকার সঙ্গে কথা হয় তাঁর এক ক্রোয়েশিয়ান বন্ধুর যিনি একজন যুদ্ধ শরণার্থী। রেবেকাকে তাঁর এই বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রে কর্তৃত্ববাদ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে তখন উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

রেবেকা বলেন, ‘আমি এটি আগেও দেখেছি। লোকেরা আপনাকে বলে যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আদতে আমেরিকাতে এটি ঘটবে না।’ 

প্রযুক্তিবিদ রেবেকার জন্মভূমি যুক্তরাজ্যে। সেখানে যাওয়ার জন্য তিনি এরইমধ্যে ইস্ট লন্ডনে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন। এছাড়া ব্যাংকে অর্থ যাতে বাইরে পাঠানো যায় সে জন্য বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টও খুলেছেন। 

ফিনল্যান্ডের ওলু ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. রোজানা গুয়াডাগনো। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি দেখে শঙ্কিত হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর থেকে ইউরোপে চলে আসার চেষ্টা শুরু করেন সান ফ্রান্সিসকোর বাসিন্দা রোজানা। ২০২১ সাল থেকে রোজানার ইউরোপে আসার চেষ্টা চলতে থাকে। এখন পরিবার নিয়ে ফিনল্যান্ডে থাকেন তিনি।  ড. রোজানা বলেন,  রাজনীতি মানুষকে বিভক্ত করেছে - ‘তুমি হয় আমাদের সাথে না হয় আমাদের বিপক্ষে।’ উৎস: ইনডিপেনডেন্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়