“এই বিল একটা ইতিহাস! প্রধানমন্ত্রী পারেননি। আমরা পারলাম। করে দেখালাম। প্রধানমন্ত্রী দেশের লজ্জা! উনি মেয়েদের রক্ষা করতে পারেননি। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।“ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’ পেশের পরে ভাষণে তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘দেশের লজ্জা’ বলে কটাক্ষ করেন।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পেশ হলো ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪)। বিল পাস করার পর ৩ সেপ্টেম্বর দিনটিকে রাজ্যের নারী বাহিনীর জন্য ‘ঐতিহাসিক দিন’ বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “মেয়েদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে ৩ সেপ্টেম্বর একটা ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮১ সালে এই দিনে মেয়েদের অধিকার সুরক্ষার জন্য ইউনাইটেড নেশন চালু করেছিল নারী বৈষম্য বিরোধী কমিটি। এই দিনের সঙ্গে মিলে যাওয়ার জন্য আমি ইউএনকে ধন্যবাদ জানাই।”
এর পর মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে শোনা যায় নজরুলের কবিতা- “বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী/ অর্ধেক তার নর।” অপরাজিতা বিল প্রসঙ্গে মমতা বললেন, ‘‘এই বিল একটা ইতিহাস! প্রধানমন্ত্রী পারেননি। আমরা পারলাম। করে দেখালাম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের লজ্জা! উনি মেয়েদের রক্ষা করতে পারেননি। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।’’ বিরোধীদের শোরগোল এবং বিক্ষোভের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী বলে চলেন- ”কেউ কেউ বলছে, আমরা আইন করতে পারি না। এটা সর্বৈব মিথ্যা।
রাজ্য চাইলে আইন আনতেই পারে। সংবিধান সেই অধিকার আমাদের দিয়েছে। অন্ধ্র এনেছে। মহারাষ্ট্রে আনছে। আমাদের এখানে এই আইন রাজ্যপালের কাছে পাঠাচ্ছি। তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠাবেন।” অপরাজিতা বিলকে সমর্থন করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, আমি রেজাল্ট দেখতে চাই। ওই বিলকে আগে আইনে পরিণত করুন। তারও জবাব দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতাকে বলুন বিলে রাজ্যপালকে বলুন সই করতে। তার পরেই দেখবেন রুলস হয়ে গিয়েছে।’’
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে উন্নাও, হাথরস। মমতা বলেন, “উন্নাও, হাথরসে বিচার পায়নি। ইউপিতে একাধিক এই ঘটনা ঘটেছে। উত্তরাখণ্ডে নার্সকে ধর্ষণ করা হয়েছে। মহারাষ্ট্র নাবালিকা, স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ করা হল। আমি বলছি ছি ছি। যারা এটা করেছে তাদের লজ্জা নেই।“
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে আমি দুটো চিঠি দিয়েছি। তিনি কোনও রিপ্লাই দেননি। তবে একজন নারী ও শিশু কল্যাণ দফতর মন্ত্রী উত্তর দিয়েছেন। আমি ন্যায় সংহিতা নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে বারণ করেছিলাম। আমি একাধিকবার স্বরাষ্ট্র দফতরকে বলেছি। বলেছিলাম নতুন সরকারের সঙ্গে কথা বলতে। আমি চেয়েছিলাম এই আইন কেন্দ্রীয় সরকার করুক। কিন্তু আইনে ফাঁক রাখা হয়েছিল। ধর্ষণের ঘটনায় সাত মাসে জামিন পেয়ে যায়। আর তাদের ফুল মালা পরানো হয়। ভিনেশ দেশের জন্য একটা পদক আনতে পারত। সিপিএম এখন বিজেপির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে।“ সূত্র : ইটিভি ভারত
আপনার মতামত লিখুন :