ইব্রাহিম অপু : বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যা পরিস্থিতির জেরে ফারাক্কা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত। তবে, বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, গেট আগে থেকেই খোলা ছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। এবার এসব প্রতিবেদন নিয়ে মুখ খুলল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে নয়াদিল্লির সরকারি মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, তারা ফারাক্কা ব্যারেজের সবকটি জলকপাট (স্লুইচগেট) খোলার খবর গণমাধ্যমে দেখেছেন যা গঙ্গা/পদ্মা নদীর প্রাকৃতিক গতিপথে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবাহিত করবে।
তিনি বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে এটি একটি স্বাভাবিক কার্যক্রম। উজানে (ভারতীয় অংশে) গঙ্গা নদীর অববাহিকায় ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার ঘটনা সামাল দিতে এটি খুলে দেওয়া হয়। বুঝতে হবে ফারাক্কা হচ্ছে একটি ব্যারেজ, এটি শুধুমাত্র বাঁধ নয়। যখনই পানির স্তর বিপৎসীমার কাছে পৌঁছে যায় তখনই তা ছেড়ে দেওয়া হয়। ফারাক্কা খালে ৪০ হাজার কিউসেক পানি সরিয়ে নেওয়ার জন্য এটি একটি কাঠামো যা মূল গঙ্গা/পদ্মা নদীর উপর স্থাপিত। যখন অতিরিক্ত পানি বাংলাদেশের প্রধান নদীতে প্রবাহিত হয়।
জয়সওয়াল আরও বলেন, প্রোটোকল অনুযায়ী এ সংক্রান্ত তথ্য নিয়মিত এবং সময়মত বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আদান-প্রদান করা হয়। এবারও তাই করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টির জন্য ভুয়া ভিডিও, গুজব এবং ভয়ভীতি দেখাতে দেখেছি আমরা। এটিকে দৃঢ়ভাবে সত্যের মাধ্যমে মোকাবিলা করা উচিত।
এর আগে সোমবার (২৬ আগস্ট) ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি জলকপাটই (স্লুইচগেট) খুলে দেয় ভারত। একদিনেই এই বাঁধ থেকে (ডাউন স্ট্রিম) ছাড়া হয়েছে ১১ লাখ কিউসেক পানি। কর্তৃপক্ষের দাবি, বিপৎসীমার উপরে থাকা পানি না ছাড়লে বাঁধের মারাত্মক ক্ষতি হতো। এ কারণে বাধ্য হয়েই বাঁধের মুখ খুলে দিতে হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে জানিয়েছেন, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে ১০৯ গেটের সবকটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দুদিন ধরে এক নাগাড়ে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। তাতে বেড়ে গেছে গঙ্গা নদীর পানি স্তর এবং চাপ বেড়েছে ফারাক্কা ব্যারেজে। এ ছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড ও বিহারে বন্যার কারণে ফারাক্কার পানি বিপৎসীমার ওপর উঠে গেছে। এ কারণে বাঁধের ১০৯টি গেটই খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এসব গেট দিয়ে সোমবার ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। সূত্র : কালবেলা
আপনার মতামত লিখুন :