রাশিদুল ইসলাম : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি থেকে সাসপেন্ড হওয়া নেত্রী নূপুর শর্মাকে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়ে বলেন, আমি বলতে চাই, গ্রেফতার করা উচিত কারণ, আপনি দেশে আগুন নিয়ে খেলতে পারেন না। এ দেশে সবাই এক সাথে আছে, আর মানুষকে বিশ্বাস করতে না পারলে নিজের উপর আস্থা রাখবে কী করে?’ পারসটুডে
সোমবার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ‘ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ইস্ট ২০২২’-এ মমতাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার সরকার কী নূপুর শর্মাকে গ্রেফতার করতে চাচ্ছে? জবাবে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কেন নূপুর শর্মাকে গ্রেফতার করা উচিত নয়? আপনি এখন এ কথা বলছেন কারণ আদালত এ বিষয়ে কিছু মন্তব্য করেছে, কিন্তু এটা এখনকার বিষয় নয়। আমরা অতীতেও তার বিরুদ্ধে এমন একটি মামলা নথিভুক্ত করেছি, যেখানে একটি ভুয়া ভিডিওতে বাংলাদেশের একটি ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা বলে বর্ণনা করা হয়েছিল। সে সময়েও নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।’
নূপুর শর্মা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন- ‘আপনি কী মনে করেন আমাকে তার নাম নেওয়া উচিত? একটি জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে একজন ঘৃণা ছড়ানো ব্যক্তির নাম নেওয়া হবে, এটা ভুল। তার নাম নেওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। এটা বিজেপির ষড়যন্ত্র এবং ঘৃণা ও বিভেদ ছড়ানোর রাজনীতির অংশ।’
মহানবী (সা.) সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে বিজেপির সাবেক জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট এবং নারকেলডাঙা থানা সমন পাঠিয়ে হাজিরা দিতে বলেছিল নূপুর শর্মাকে। সোমবার কোলকাতা পুলিশের কাছে তার হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। জীবনের ঝুঁকি রয়েছে জানিয়ে কোলকাতা পুলিশের থেকে চার সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু চার সপ্তাহ সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি হাজিরা দেননি। সেজন্য গত শনিবার লুকআউট নোটিস জারি করেছে কোলকাতা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, কারও বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি হলে তিনি দেশ ছেড়ে যেতে পারেন না। সাধারণত, পুলিশ বা অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থা কোনও ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ বা অন্য কোনও কারণে তলব করার পরও সেই ব্যক্তি হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে যার বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি হয়, তিনি দেশ ছাড়তে পারেন না। এরআগে ঘৃণাভাষণের অভিযোগে নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানাতেও একটি এফআইআর দায়ের করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সংখ্যালঘু সেলের সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী আবু সোহেল। নূপুরের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় শান্তিভঙ্গের প্ররোচনা দেওয়া, হুমকি দেওয়াসহ নানা ধারায় মামলা করা হয়। নূপুরকে দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :