ইমরুল শাহেদ: [২] ট্রাম নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সরকারের ট্রাম-নীতি জানতে চেয়েছিল আদালত। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার পরে, শেষমেশ শহর থেকে ট্রাম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই রাজ্য সরকারের পরিবহণ দপ্তর হলফনামা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ট্রাম নিয়ে তাদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে চলেছে। সূত্র: দি ওয়াল 

[৩] কলকাতায় সম্প্রতি প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, ট্রামলাইনের জন্য দুর্ঘটনা ঘটার। তার উপর ট্রামের গুরুত্বও বর্তমানে প্রায় নেই। বরং তার শ্লথ গতি ও বড় চেহারা শহরে যানজট বাড়াচ্ছে। তার উপর জনসংখ্যার তুলনায় রাস্তা অনেক কম। ফলে এমনিতেই যান নিয়ন্ত্রণ একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তার মধ্যে রাস্তার উপর ট্রামলাইন যেন আরও সমস্যা বাড়াচ্ছে।

[৪] সব মিলিয়ে, ট্রাম যেন শহরের বোঝা হয়ে উঠেছে এত বছর ধরে বিশ্বস্ত পরিষেবা দিয়ে আসার পরেও। ফলে জানা গেছে, সমস্ত ট্রাম রুট বন্ধ করে দেওয়া হবে। অচল রুটগুলির ট্রামলাইনও তুলে ফেলা হবে। 

[৫] ট্রাম কলকাতার ঐতিহ্য শুধু নয়, নস্টালজিয়াও। ট্রামের টিংটিং ঘণ্টিতে, কাঠের সিটে, শেষ আসনে বসে খাওয়া বাদামভাজার খোলসে যে কত সুখদুঃখ-হাসিকান্না জমে আছে, তার ইয়ত্তা নেই। ভারতের আর কোনও শহরে ট্রাম চলে না। আর সেই ট্রামই এখন ফেয়ারওয়েলের অপেক্ষায়। দেড়শো বছর ধরে শহরের ‘ঐতিহ্য’ হয়ে থেকে গেলেও ‘হেরিটেজ’ শিরোপা জোটেনি তার।

[৬] একসময় কলকাতায় গমগম করে ট্রাম চলত ২৭-২৮টি রুটে। মাত্র বছর ১৫ আগেও এক ডজন রুটে সচল ছিল ট্রাম। তবে ২০১৮ সালে মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর ট্রামের গুরুত্ব আরও কমে যায়। কারণ ওই ঘটনার পরে সরকার শহরের ব্রিজগুলির উপরে থাকা সমস্ত ট্রামলাইন তুলে দেয়। ফলে ট্রামের চলাচল আরও সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। 

[৭] কলকাতায় এই মুহূর্তে মাত্র তিনটি রুটে ট্রাম পরিষেবা চালু রয়েছে। টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট-ধর্মতলা এবং ধর্মতলা-শ্যামবাজার। এবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই তিন রুট থেকেও ট্রাম বিদায় নেবে। সম্পাদনা: রাশিদ