রাশিদুল ইসলাম: [২] ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন রাজভবনের এক নারী কর্মী। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে সরগরম হয়ে উঠে রাজনৈতিক পরিবেশ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
[৩] ওই নারী এমন সময় এ অভিযোগ করলেন, যার কিছু সময় পরই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক নির্বাচনী সফরে কলকাতায় রাজ্যপালের ভবনে পৌঁছান।
[৪] ওই নারীর অভিযোগ, তিনি দুবার রাজ্যপালের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন। তবে রাজ্যপাল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই চক্রান্ত করা হয়েছে।
[৫] এই ঘটনায় রাজভবন থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, কলকাতা পুলিশ রাজভবনের ভেতরে ঢুকতে পারবে না। তৃণমূল কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও সেখানে ঢুকতে দেওয়া হবে না। রাজ্যপাল এমন কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না, যেখানে চন্দ্রিমা উপস্থিত থাকবেন। কারণ, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সোচ্চার চন্দ্রিমা। শুক্রবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ডাকও দিয়েছেন তিনি।
[৬] কলকাতা ছাড়া দার্জিলিং ও বারাকপুরের রাজভবনেও চন্দ্রিমার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। বলা হয়েছে, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যে অনুষ্ঠানে থাকবেন, সেখানে যাবেন না রাজ্যপাল।
[৭] এদিকে রাজ্যপাল এক্স হ্যান্ডেলে এক বার্তায় বলেছেন, ‘তার বদনাম করতে কে বা কারা ভোটের বাজারে ফায়দা লুটতে চেষ্টা চালাচ্ছে। সত্যের জয় হবেই। কৌশলী কোনো আখ্যানের সামনে আমি মাথা নত করতে রাজি নই। যদি আমার বদনাম করে কেউ ফায়দা লুটতে চান, ঈশ্বর তাদের মঙ্গল করুন। কিন্তু তারা বাংলায় দুর্নীতি ও হিংসার বিরুদ্ধে আমার লড়াই থামাতে পারবে না।’
[৮] রাজ্যের নারী মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘একটি মেয়ের শ্লীলতাহানি হয়েছে। এর বিহিত হওয়া দরকার।’
[৯] পশ্চিমবাংলার বিরোধী দলনেতা ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘অভিযোগ সত্য কি না তা দেখতে হবে। ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে, সন্দেশখালির ইস্যুতে তৃণমূল কোণঠাসা। এ অভিযোগ ভোটের মুখে রাজনৈতিক চক্রান্ত কি না, তা দেখতে হবে। যদি সত্য হয় তবে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ নেবে।’
[১০] বিজেপির সাবেক রাজ্য সভাপতি ও ত্রিপুরার সাবেক রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেছেন, ‘ভারতীয় সংবিধানের ৩৬১ ধারা মতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। সংবিধানই রাজ্যপালকে এই নিয়ে রক্ষা কবচ দিয়েছে।’
[১১] রাজভবনের ওই নারী কর্মী তার অভিযোগে বলেন, গতকাল ২ মে এবং এর আগে ২৪ এপ্রিল তাকে শ্লীলতাহানি করেন রাজ্যপাল। ওই নারী রাজভবনের সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন। তিনি প্রথম রাজভবনের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। এরপরই রাজভবনের পুলিশ তাকে নিকটবর্তী হেয়ারস্ট্রিট থানায় পাঠিয়ে দেন। সেখানে ওই নারী লিখিতভাবে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
[১২] আনন্দবাজার অনলাইনে ওই নারীর একটি বার্তা প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, ওই নারী বলছেন, ‘আজ আমি যদি প্রতিবাদ না করি, তাহলে ভবিষ্যতে অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে।’
আপনার মতামত লিখুন :