ইকবাল খান: [২] দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয়ী হয়েছে উদারপন্থী বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি-ডিপিকে। ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি-পিপিপিকে বিপুল ব্যবধানে হারিয়েছে তারা। এবারের নির্বাচনে ডিপিকে’র সাথে জোট বেধেছিল ছোট ছোট কয়েকটি বিরোধী দল।
[৩] বিবিসি জানায়, তারা যৌথভাবে জাতীয় পরিষদের তিনশোটি আসনের মধ্যে ১৯২টিতে জিতেছে।
[৪] ফলাফলর প্রকাশিত হওয়ার পর ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী হান দুক-সু। দলের অন্যতম নেতা হান ডং-হুন সহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও পদ ছেড়েছেন।
[৫] ইউন সুক এবং তার পিপল পাওয়ার পার্টি-পিপিপি’র জন্য বিপর্যয় নিয়ে এসেছে এই পরাজয়।
[৬] পার্লামেন্টে বিরোধী দল ডিপিকে’র আধিপত্যের কারণে আগে থেকেই কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে হিমশিম খেতে হতো পিপিপিকে।
[৭] এখন বুধবারের নির্বাচনে বিজয়ের ফলে ডিপিকে পার্লামেন্টে দ্রুতগতিতে যেকোনো আইন প্রণয়ন করতে সক্ষম হবে।
[৮] দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনি ব্যবস্থায় পার্লামেন্টের তিনশো আসনের মধ্যে ৪৭টি আসন প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে দলগুলোর মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয়। ছোট দলগুলোও এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু আসন পেয়ে থাকে। এই আসনের জন্যই বড় দলগুলো তাদের সাথে রাখতে চায়।
[৯] পেঁয়াজের দাম নিয়ে মন্তব্যই কাল হলো?:ভোটারদের উপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব নিয়ে তার তেমন মাথাব্যথা নেই, এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার মুখে ছিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। ফেব্রুয়ারি মাসে,কোরিয়ার অভিজাত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে একেকটি আপেলের দাম উঠেছিল সাত ডলার পর্যন্ত।
[১০] এতটা না হলেও সাধারণ মানুষ যেসব জায়গায় কেনাকাটা করেন সেখানেও ফলের দাম তাদের ক্রয়ক্ষমতাকে ছাপিয়ে যায়। নিত্যপণ্যের দামের উর্ধ্বগতিতে হাঁসফাঁস করতে থাকে মানুষগুলো।
[১১] প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল তখন একটি খাদ্যপণ্যের বাজার পরিদর্শনে যান। উদ্বেগ দূর করতে এমন পরিদর্শন কতটা কাজে আসবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন ছিলো সাধারণের মাঝে। স্প্রিং ওনিয়ন(বসন্তকালীন পেঁয়াজ)-এর দাম এতটা ‘রিজনেবল’(যৌক্তিক) দেখে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।
[১২] তিনি বলেছিলেন, এক প্যাকেট বা এক আঁটি সবুজ পেঁয়াজের দাম ৮৭৫ ওন (দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা) হওয়াটা "যুক্তিসঙ্গত"। ৮৭৫ দক্ষিণ কোরিয়ান ওন বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭১ টাকার মতো।
[১৩] তার মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা। সবুজ পেঁয়াজ নিয়ে বিক্ষোভে নামেন কৃষকরা। ডিপিকে'র নির্বাচনি সমাবেশেও পেঁয়াজকে ‘প্রপস্’ (উপকরণ) হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
[১৪] ফলাফলের পর বৃহস্পতিবার ডিপিকে নেতা লি জায়ে-মিউং বলেছেন, “এই বিজয় শুধু ডেমোক্রেটিক পার্টির বিজয় নয়, বরং জনগণের জন্যই এক মহান অর্জন।” বলেন, “চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় দুই পক্ষের রাজনীতিবিদদেরই সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নামতে হবে।” “জীবিকার সংকট সমাধানের সেই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবে ডেমোক্রেটিক পার্টি,” যোগ করেন তিনি।
আইকে/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :