শিরোনাম
◈ উত্তরাঞ্চল থেকে উপদেষ্টা করার দাবিতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের ◈ দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই যা করবেন ট্রাম্প  ◈ প্রতিটি দেশে একটি সামাজিক ব্যবসা ব্যাংকিং আইন থাকা উচিত : প্রধান উপদেষ্টা ◈ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সাথে সরকারের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নাকি অন্যকিছু ? ◈ ভাইরাল সুপারিশপত্রের বিষয়ে যা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ◈ রাজবাড়ীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা ◈ ‘অহরহ কল আসছে, আমাকে উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চায়’ (ভিডিও) ◈ আগামী ২৪ ঘণ্টায় যেসব বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ◈ ‘আ. লীগ-বিএনপির কোনো পার্থক্য নেই, ওরা ক্ষমতার পাগল : ফয়জুল করীম (ভিডিও) ◈ বিশ্বে মশার কামড়ে ঘায়েল ৪ বিলিয়ন মানুষ

প্রকাশিত : ২৫ জুন, ২০২২, ০১:২৯ দুপুর
আপডেট : ২৫ জুন, ২০২২, ০২:২৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পাকিস্তানে ধনীদের উপর ‘সুপার ট্যাক্স’ আরোপ, শেয়ারবাজারে পতন

রাশিদুল ইসলাম : তীব্র অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে ও ঋণের বোঝা লাঘবে পাকিস্তান সরকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এবং বেতনভোগী শ্রেণীর উপর অতিরিক্ত ২০০ বিলিয়ন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাথে একটি চুক্তি সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে বাজেটে প্রবর্তিত মোট নতুন করের রেকর্ড ১ ট্রিলিয়ন টাকার উপরে নিয়ে গেছে দেশটির সরকার। এতে ধনীদের মোট করের হার ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন/ডন

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল এর আগে দেশটির বড় কোম্পানির ওপর অতিরিক্ত ৮০ বিলিয়ন টাকা সংগ্রহে১-১০ শতাংশ ‘এককালীন সুপার ট্যাক্স’ আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন অর্থনৈতিক সংকটের সাম্প্রতিক কঠোরতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের ওপর এধরনের করারোপ একটি রূপান্তরমূলক প্রচেষ্টা যা দরিদ্রদের জন্য ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে। পাকিস্তান সরকারের প্রিমিয়ারের সুপার ট্যাক্স ঘোষণার কয়েক মিনিট পরেই দেশটির শেয়ারবাজার লেনদেনে ২,০৫৩ পয়েন্ট দরপতন ঘটে যা বাজার মূল্যের ৪.৮ শতাংশ। 

পাকিস্তানে যারা বছরে ১৫০ মিলিয়ন থেকে ৩০০ মিলিয়ন টাাকা পর্যন্ত উপার্জন করছেন তারা ও তাদের কোম্পানিগুলোর ওপর ১ থেকে ৪ শতাংশ এককালীন অতিরিক্ত ‘দারিদ্র্য বিমোচন কর’ আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এভাবে করা আহরণ করা সম্ভব হলে ১২০ বিলিয়ন টাকা অতিরিক্ত আদায় করা যাবে।  

দেশটির সরকার বেতনভোগী শ্রেণীর আয়কর হারও সংশোধন ও বাজেটে ঘোষিত ৪৭ বিলিয়ন টাকার ত্রাণ প্রত্যাহার করে এর পরিবর্তে বেতনভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩৩ বিলিয়ন টাকা সংগ্রহের জন্য সংশোধন এনেছে। পাকিস্তান সরকার পেট্রোলিয়াম শুল্ক থেকে মোট ৭৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। অর্থাৎ পাকিস্তান সরকার নতুন এ কর আদায়ের ঘোষণার পর, সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য জনগণ এবং কোম্পানিগুলির উপর ন্যূনতম ১ ট্রিলিয়ন টাকার অতিরিক্ত কর আদায় হবে - যা এক বছরে সর্বোচ্চ কর। দেশটির বর্তমান জোট সরকার ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের মাধ্যমে কর ব্যবস্থায় পিটিআই সরকারের ৭৩৫ বিলিয়ন টাকার কর রেকর্ডকে পরাজিত করেছে।

১ বিলিয়ন টাকার মধ্যে প্রত্যক্ষ করের অংশ ৫০৯ বিলিয়ন টাকা বা অর্ধেকের কিছু বেশি। সরকার আইএমএফের সাথে একটি কর্মী-স্তরের চুক্তি নিশ্চিত করতে সুরক্ষিত করার জন্য এই ব্যবস্থা নিয়েছে যা পাকিস্তানকে একটি প্রাথমিক উদ্বৃত্ত বাজেট পেশ করার পরামর্শ দিয়েছে। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী এর ব্যাখ্যা করে বলেন, এই শর্ত পূরণের জন্য, সরকার ফেডারেল বোর্ড অফ রেভিনিউ (এফবিআর) এর জন্য কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়েছে ৭.৪৭০ ট্রিলিয়ন টাকা। এছাড়া কর-বহির্ভূত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ১.৯৩৫ ট্রিলিয়ন রুপিতে সামান্য সংশোধিত হয়েছে  যা গত ১০ জুনের বাজেটের তুলনায় ৬৫ বিলিয়ন রুপি হ্রাস। এটি এখনও গ্যাস অবকাঠামো উন্নয়ন খাত থেকে ৩০ বিলিয়ন টাকা  সংগ্রহের লক্ষ্য ধরে রেখেছে, আগের প্রস্তাবিত ২০০ বিলিয়ন টাকার বিপরীতে। এতে ফেডারেল ট্যাক্সে প্রদেশগুলির অবদান পূর্ব ঘোষিত ৪.১ ট্রিলিয়ন রুপি থেকে বেড়ে ৪.৩৭ ট্রিলিয়ন টাকা হবে। ফেডারেল বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে রুপি ৪.৫৫ ট্রিলিয়ন বা পাকিস্তানের জিডিপির ৫.৮ শতাংশ।  সামগ্রিক বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা এখন ৩.৮ ট্রিলিয়ন রুপি বা জিডিপির ৪.৮ শতাংশ। সরকারি নীতি নির্ধারকরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে দরিদ্রদের সমর্থন করার জন্য রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে বড় আকারের শিল্পগুলিকে লক্ষ্য করা হয়েছে। সরকার ব্যাংক, সিমেন্ট, লোহা ও ইস্পাত, চিনি, তেল ও গ্যাস, সার, এলএনজি টার্মিনাল, টেক্সটাইল, ব্যাংকিং, অটোমোবাইল, সিগারেট, পানীয়, রাসায়নিক এবং বিমান সংস্থার উপর ১০ শতাংশ সুপার ট্যাক্স আরোপ করেছে। 

পাকিস্তান বিজনেস কাউন্সিল দেশটির অর্থমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে সন্দেহ প্রকাশ করে টুইটারে বলেছে, অতীতের ইতিহাসের ভিত্তিতে, এখানে এখন বাজেটে করা কিছু প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করা কঠিন। ৩০০ বর্গফুটের কম দোকানে ব্যবসা করা জুয়েলার্সকে ৪০,০০০ টাকা নির্দিষ্ট আয়কর দিতে হবে, যারা বড় আকারের দোকান আছে তারা বর্তমান ১৭ শতাংশের বিপরীতে ৩ শতাংশ বিক্রয় কর দিতে হবে। বাজেটে, সরকার ইতিমধ্যে খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে নির্ধারিত আয়কর ৩,০০০ থেকে বৃদ্ধি করে ১০,০০০ টাকা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

তবে পাকিস্তানে বিদায়ী অর্থবছরে ফেডারেল বাজেট ঘাটতি হবে ৫.৩১ ট্রিলিয়ন টাকা এবং সামগ্রিক ঘাটতি হবে ৪.৭ ট্রিলিয়ন টাকা। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তার মেয়াদে দেশের ঋণ প্রায় ৪৫ ট্রিলিয়ন রুপি বৃদ্ধির জন্য সমালোচনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়