শিরোনাম
◈ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের নিয়ম কী, কী আছে সুপারিশে? ◈ সাত বছর পর  বর্ধিত সভায় যে বার্তা দেবে বিএনপি ◈ সন্ত্রাসী যত শক্তিশালীই হোক রক্ষা পাবে না: ডিবি প্রধান ◈ আমেরিকার নাগরিকত্বের জন্য ট্রাম্পের ‘গোল্ড কার্ড’ অফার ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা কোথায়, জানালেন আসিফ মাহমুদ ◈ রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা আন্দোলন ব্যর্থ হতে দেব না: মধ্যরাতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিবৃতি ◈ আরব আমিরাতের কাছে বাংলাদেশ নারী দলের হার  ◈ ‘কনুই দিয়ে আমার বুকে এত জোরে মেরেছে আমি ইনস্ট্যান্ট সেখানে সেন্সলেস হয়ে পড়ে যাই’ (ভিডিও) ◈ জার্মানির সঙ্গে আমরা ভিন্ন মাত্রার একটি বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু শক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহী : প্রধান উপদেষ্টা 

প্রকাশিত : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৯:৩৭ রাত
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন র‌্যাবের তৎকালীন সিও (ভিডিও)

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ বর্ণনা দিতে গিয়ে র‍্যাবের তৎকালীন সিও সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল জামান বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনা শুনতে পেয়েই বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে গিয়ে উপস্থিত হই। গেটের বাহির থেকে একের পর এক গুলির শব্দ শুনতে পাই।কিন্তু উপর মহল থেকে একের পর এক ফোন আসতে থাকে এবং ফোনে বলে আমি যেনো ভেতরে না ঢুকি।

তিনি অভিযোগ করেন, বিডিআর বিদ্রোহের সময় সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সেনাবাহিনীকে প্রবেশ করতে দেয়নি এবং পুরো ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, “আমি জানতে পারি, দরবার হলে গোলাগুলি চলছে। দ্রুত ধানমন্ডি ক্যাম্পে গিয়ে সাতটি একে-৪৭ এবং প্রায় ২০০০ রাউন্ড গুলি সংগ্রহ করি। এরপর সাতজন সদস্যসহ চার নম্বর গেটে পৌঁছাই, কিন্তু আমাদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করবেন।”

তিনি আরও বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ড কোনো সাধারণ বিদ্রোহ ছিল না, এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যেখানে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের পাশাপাশি আমাদের প্রতিবেশী দেশও জড়িত ছিল।”

‘সেনাবাহিনীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি’

লে. কর্নেল জামান দাবি করেন, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তাদের নির্দেশ দেওয়া হয় ভেতরে প্রবেশ না করার জন্য। তিনি বলেন, “মেজর ওয়াকার (বর্তমান সেনাপ্রধান) আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমরা এখানে কী করব?’ আমি জানতে চাই, ‘আপনাদের কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?’ উত্তরে তিনি জানান, তাদের ভেতরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, কর্নেল গুলজার তাঁকে ফোন করে সহায়তা চান এবং দ্রুত প্রবেশের অনুরোধ জানান। কিন্তু তাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কর্নেল এমদাদও একই অনুরোধ করেছিলেন, যিনি দেশের অন্যতম সেরা কমান্ডো ছিলেন।

‘উচ্চপর্যায়ের নেতাদের ভূমিকা’

লে. কর্নেল জামান অভিযোগ করেন, বিদ্রোহ চলাকালীন সময় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ভূমিকা সন্দেহজনক ছিল। তিনি বলেন, “দুপুরের দিকে দেখি, মির্জা আজম, নানক, মাহবুব আরা গিনি, মুস্তাক আহমেদ রুহি, ওয়ারেস হোসেন বেলাল পতাকা হাতে সেখানে উপস্থিত হন। পরে শুনলাম, তারা বিদ্রোহীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যান এবং তাদের বিরিয়ানি খাওয়ানো হয়।”

তিনি আরও বলেন, “রাত ৯টার দিকে মির্জা আজম দরবার হলে প্রবেশ করেন এবং উল্লাস করেন, কর্নেল গুলজারের লাশ খুঁজতে থাকেন। দেখে খুশি হন, কারণ কর্নেল গুলজারসহ আমরা ২০০৫-২০০৮ সালে জেএমবির বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।”

‘বিদ্রোহ পরিকল্পনার নথি উদ্ধার’

লে. কর্নেল জামান দাবি করেন, বিদ্রোহের পরিকল্পনা আগেই করা হয়েছিল এবং এর প্রমাণ তিনি পেয়েছিলেন। “আমি সুবেদার তোরাব আলীর মোবাইলে ৪২টি কল পেয়েছি, যেখানে তিনি ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। কিন্তু আমাদের এই তথ্য তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “আমি কাজলের কম্পিউটারে পুরো হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা পাই এবং সিপাহী হাবিবের পকেটে তাপসের ভিজিটিং কার্ড খুঁজে পাই। একজন এমপি কীভাবে বিডিআর ক্যান্টিনে নিয়মিত আসতে পারেন?”

‘তদন্ত বন্ধ ও চাকরিচ্যুতি’

তিনি অভিযোগ করেন, “১১ দিনের মাথায় আমার তদন্ত বন্ধ করে আমাকে বদলি করা হয়। ডিজিএফআই ও এমআই থেকে জানানো হয়, আমি যদি আরও কিছু বলি, তাহলে আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে। এরপর ২০১২ সালে আমাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।”

লে. কর্নেল জামান বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করা দরকার। আমি বিশ্বাস করি, বর্তমান বিডিআর কমিশন এরা উদ্ধার করবে। না করলে, আমাদেরকে করতে হবে, ভবিষ্যতে যদি আমাদেরকে, রাষ্ট্র ক্ষমতায় যদি এদেশের জনগণ নিয়ে আসে। ”

পিলখানা হত্যাকাণ্ড: সংক্ষিপ্ত প্রেক্ষাপট

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দফতরে ভয়াবহ বিদ্রোহ ঘটে। এতে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সরকার এই ঘটনায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ও উচ্চ আদালতের মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করেছে। তবে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখনও বিতর্ক ও নানা অভিযোগ রয়ে গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়