গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যাকে ঘিরে মাইক্রোসফটের ভূমিকা নিয়ে কোম্পানির ভেতরে অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে। সম্প্রতি কোম্পানির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বক্তব্য চলাকালেই কর্মীরা প্রতিবাদ জানান। এদের মধ্যে দুই কর্মী—ইবতিহাল আবুসসাদ ও ভানিয়া আগরওয়াল প্রতিবাদ জানানোর পরপরই চাকরি হারান। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
এর আগে, ২০ মার্চ সিয়াটলের গ্রেট হলে মাইক্রোসফট প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ ও প্রাক্তন সিইও স্টিভ বালমার বক্তব্য দিতে গেলে এক বর্তমান ও এক প্রাক্তন কর্মী প্রতিবাদ জানান। ভবনের বাইরে এক বিক্ষোভে ‘গণহত্যায় মদদ দিচ্ছে মাইক্রোসফট’ লেখা প্রজেক্টর দিয়ে দেয়ালে দেখানো হয়। এটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মাইক্রোসফটের এআই ও ক্লাউড কম্পিউটিং সেবার সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে।
সাবেক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হোসাম নাসর জানিয়েছেন, মাইক্রোসফটে অসন্তোষ এখন একেবারে চূড়ায় গিয়ে পৌঁছেছে। তিনি জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি এক অনুষ্ঠানে কয়েকজন কর্মী টি-শার্টে ‘আমাদের কোড কি শিশু হত্যা করছে?’ বার্তা দেখিয়ে প্রতিবাদ জানান। ওই কর্মীরাও চাকরি হারিয়েছেন।
কর্মীদের অভিযোগ, কোম্পানির ‘ভিভা এনগেজ’ প্ল্যাটফর্মে ফিলিস্তিনপন্থী মতামত সেন্সর করা হচ্ছে। সেখানে ইসরায়েলপন্থীদের বলা হয়েছিল ‘সন্ত্রাসবাদের সমর্থক’। ২০২৩ সালের নভেম্বরে মাইক্রোসফট সব কর্মীদের দেখার মতো একটি চ্যানেল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়।
কর্মীদের একাংশ ‘বর্ণবৈষম্যের পক্ষে নয় অ্যাজুর’ নামের একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন, যা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে মাইক্রোসফটের এআই ও ক্লাউড সেবা বাতিলের আহ্বান জানায়। বিডিএস আন্দোলনও মাইক্রোসফটকে তাদের বর্জনের তালিকায় যুক্ত করেছে।
মাইক্রোসফটের সাবেক কর্মী অ্যাঞ্জেলা ইউ গত ডিসেম্বরে এক ইমেইলে প্রায় ৩০,০০০ সহকর্মীকে জানিয়ে পদত্যাগ করেন। তিনি লেখেন, ‘আমরা যে প্রযুক্তি তৈরি করছি, তা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযানে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটা আমার বিবেককে কষ্ট দেয়।‘
কর্মীদের মতে, কোম্পানির মানবাধিকার নীতির সঙ্গে বর্তমান চুক্তিগুলো সাংঘর্ষিক। যদিও মাইক্রোসফট এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।