বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে মার্কিন টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের সঙ্গে অংশীদারিত্বে যাচ্ছে কয়েকটি বাংলাদেশি কোম্পানি। এর অংশ হিসেবে গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন স্থাপনের জন্য স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।
শনিবার (৮ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছে, যেখানে সম্ভাব্য স্থাপনাস্থল চিহ্নিত করার পাশাপাশি জমি বরাদ্দ, নির্মাণ সহায়তা ও অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত আলোচনাও চলছে। কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো নিজেদের জমি ব্যবহার করছে, আবার কিছু জায়গায় হাইটেক পার্কের জমি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমাদ তৈয়্যব জানান, স্টারলিংকের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের শহর, উপকূলীয় অঞ্চল এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করবে, যা লোডশেডিং ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বাধার মুখেও চালু থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে টেলিকম-গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্কের কভারেজ সীমিত, এবং গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের সমস্যা এখনও রয়ে গেছে। স্টারলিংকের সংযুক্তি উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, এনজিও, এবং এসএমই ব্যবসায়ীদের ডিজিটাল অর্থনীতির গতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে। আমরা আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের সঙ্গে একটি কার্যকর মডেল বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।
এর আগে, ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংক চালুর জন্য স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি মাস্ককে চিঠির মাধ্যমে জানান, এই সফরের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে পারবেন, যারা স্টারলিংকের প্রধান সুবিধাভোগী হবে।
১৩ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ইউনূস ও ইলন মাস্কের মধ্যে এক দীর্ঘ টেলিফোন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে স্টারলিংক পরিষেবা চালুর সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা তার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানকে স্পেসএক্স টিমের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংক চালুর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়।
এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে, যা শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দেবে।