ব্যাটিংয়ে যতক্ষণ ছিলেন ততক্ষণ বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন নিক ওয়েলচ। হতাশ করলেও দিনশেষে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জিম্বাবুয়ের ব্যাটারকে একটা ধন্যবাদ দিতেই পারেন। কেননা তার ‘রিটায়ার্ড হার্টের’ মধ্যে দিয়েই পরে ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ।
অন্যথা তৃতীয় উইকেটে যেভাবে শন উইলিয়ামসের সঙ্গে ওয়েলচ জুটি বেঁধেছিলেন তাতে বাংলাদেশের শুধু হতাশাই বাড়ছিল।
২ উইকেটে ১৭৭ রান করা দলটিই এখন ২২৭ রানে দিন শেষ করেছে। উইকেট পড়েছে ৯টি। অথচ, প্রথম দুই সেশনে উইকেটের জন্য হাপিত্যেশ করা তাইজুল ইসলাম-নাঈম হাসানরা শেষ সেশন ৭ উইকেট নিয়েছেন। সেটিও ৬৬ রানের বিনিময়ে।
জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং ধসের বড় কারিগর হচ্ছেন তাইজুল। ক্যারিয়ারে ১৬তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়ে প্রতিপক্ষের বড় সংগ্রহের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে দেন বাঁহাতি স্পিনার। শেষ বিকেলে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ২ উইকেট নেওয়া আরেক স্পিনার নাঈম।
সিরিজে এগিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতে জিম্বাবুয়েকে ৪১ রান এনে দেন ব্রায়ান বেনেট-বেন কারান।
প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ফিফটি করা বেনেটকে আউট করে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম উইকেট পান অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিব। বেনেটের মতো সমান ২১ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার কারানও। কারানকে আউট করে নিজের উইকেট ঝুলি খোলেন তাইজুল।
দুই ওপেনারকে ফেরানোর পরেও বাংলাদেশ স্বস্তি পাচ্ছিল না। কেননা তৃতীয় উইকেটে ৯০ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন ওয়েলচ ও উইলিয়ামস।
৫৪ রানে ওয়েলচ গরমের সঙ্গে পেরে উঠতে না পেরে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হন। পরে অবশ্য জানা যায় ব্যাটিংয়ের সময় ক্র্যাম্পও হয়েছিল। সে যা-ই হোক তার ফিরে যাওয়াতেই ম্যাচে ফেরার দারুণ মুহূর্ত পায় বাংলাদেশ।
নতুন ব্যাটার ক্রেইগ আরভিনকে ব্যাটিংয়ে থিতু হওয়ার আগেই ফিরিয়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং ধসের শুরুটা করেন নাঈম। ৬৮তম ওভারে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ককে ৫ রানে ফেরান চট্টগ্রামের অফ স্পিনার। ফিরতি ওভারে সেট হওয়া ব্যাটার উইলিয়ামসকেও ফেরান তিনি। সর্বোচ্চ ৬৭ রান করা উইলিয়ামস ফেরার পরেই স্পিন ভেলকি দেখানো শুরু করেন তাইজুল।
টানা দুই ওভারে তিন উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং অর্ডার ধসিয়ে দেন তাইজুল। এর মধ্যে ৮১তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন তিনি। হ্যাটট্রিক না পেলেও দিনের শেষ উইকেট নিয়ে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন বাঁহাতি স্পিনার। ৬০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
অবশ্য শেষ বিকেলে দারুণ বোলিং করেও আফসোস থেকে গেছে বাংলাদেশের। কেননা দিন শেষে তাদের অলআউট করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯ উইকেটে ২২৭ রান নিয়ে আগামীকাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবে জিম্বাবুয়ে। তাফাদজাওয়া সিগার ১৮ রানের বিপরীতে ২ রানে অপরাজিত আছেন ব্লেসিং মুজারাবানি।