স্পোর্টস ডেস্ক : ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী এখন বাংলাদেশে। তিনি বাংলাদেশ দলের হয়ে প্রথমবার মাঠে নামতে যাচ্ছেন। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আগামী ২৫ মার্চ ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ, যেখানে বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ফুটবলের আরও অনেকেরই নজর থাকবে হামজার ওপর। তার এই রোমাঞ্চকর নতুন অধ্যায় শুরু নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সান’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ওই প্রতিবেদনে ইংল্যান্ডের হয়ে হামজার বয়সভিত্তিক দলে খেলার অভিজ্ঞতা এবং তার সম্ভাব্য দলবদল নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমানে শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে খেলা এই ফুটবলারের এক সময় বার্সেলোনায় যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। দ্য সানের মতে, কোনো ত্রুটি ছাড়াই খেলা এবং কড়া ট্যাকলের দক্ষতা যুব লায়ন্স দলে জায়গা করে দেয় হামজাকে। ২০১৮-১৯ সালে তিনি ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলে সাতটি ম্যাচ খেলেন এবং সেই সময় বার্সেলোনায় দলবদলের কথাবার্তা চলছিল।
বাংলাদেশে হামজার আগমনে ফুটবলপ্রেমীদের তুমুল উন্মাদনা ও উষ্ণ অভ্যর্থনার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। বাঙালি মুসলিম মা ও সৎ-বাবার সুবাদে হামজা শৈশবেও বাংলাদেশে এসেছিলেন। ২০২১ মৌসুমের ইংলিশ প্রতিযোগিতা এফএ কাপে শিরোপাজয়ী এই তারকা এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে খেলতে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকে কয়েকদিন ছিলেন সমর্থকদের মধ্যমণি হিসেবে। সেই মুহূর্তগুলোর ভিডিও নিজের সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন হামজা।
ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত এই বাংলাদেশি মিডফিল্ডার এর আগে লাল-সবুজ জার্সিতে খেলা নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেই সাক্ষাৎকারের কিছু অংশও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি প্রকাশ করেছে। দেশটির ক্রীড়াভিত্তিক আউটলেট ভার্সাসকে ২০২৪ সালে হামজা বলেছিলেন, শিশু বয়সেই বাংলাদেশ আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, আশা করি তার অনেক কিছু নিজের বাচ্চার কাছেও ছড়িয়ে দিতে পারব। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সবাইকে সমান মর্যাদা দেয়া এবং তাদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করা।
ব্রিটিশ নাগরিক অলিভিয়াকে বিয়ে করেছেন হামজা এবং তাদের সংসারে তিন সন্তান রয়েছে। প্রিমিয়ার লিগে খেলা প্রথম কোনো ফুটবলার হিসেবে তিনি বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন। ইংল্যান্ডের নাগরিক হলেও বাংলাদেশের প্রতি প্রবল আন্তরিকতা রয়েছে তার এবং দেশকে নিজের অংশ হিসেবেই ভাবেন।
হামজা বলেন, ‘ইংল্যান্ড অবশ্যই আমার ঘর, কিন্তু বাংলাদেশও (পর নয়)। ফলে আমার শেকড়ের ঠিকানায় ফিরে যেতে পারা এবং শৈশবে যাদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি তাদের প্রতিনিধিত্ব করা আমার কাছে সবকিছু। যা আমাকে অনেক বেশি আনন্দিত ও গর্বিত করে।
২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার আরও বলেন, ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত আমি প্রায় প্রতি বছরই পরিবারের সঙ্গে (বাংলাদেশে) গিয়েছি, কখনও আবার বছরে দু’বার। বাংলাদেশে অবস্থানকালে শৈশবের অনেক স্মৃতি রয়েছে আমার। এরপর যখন বেড়ে উঠেছি, আমি নিজের দায়িত্ববোধ বোঝার চেষ্টা করি যে, প্রথম কোনো প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার হতে পারি। এটি শুধুমাত্র একটি ছোট জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বই নয়, বরং পুরো জাতির। যা আমার জন্য অনেক বেশি গর্বের। সূত্র, চ্যানেল২৪