নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘরের মাঠেও ফায়দা লুটতে পারেনি বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। হাওয়া বদল আর কোচ বদল যাই হোক না কেনো, শান্তদের শেখানো যায় না। তারা দায়িত্বহীন ব্যাটিং বার বার করে থাকেন। যার ব্যতিক্রম এই টেস্টেও হয়নি। বিসিবিতে নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচেও জয় পায়নি বাংলাদেশ।
সবার ভাবনায় ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে পজেটিভ ক্রিকেট খেললে জয় পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। মিরপুর টেস্ট সেটাও হলো না। এখন তাকিয়ে থাকতে হবে চট্টগ্রাম টেস্টে। মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন ১০৬ রানে অল আউট হয়ে ম্যাচের নাটাই অনেকটাই হাত থেকে ছুটে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
তারপরও দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩০৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদি হাসান মিরাজ ও জাকের আলি অনিকের চেষ্টায় ইতিবাচক ফলাফলের আশায় ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। কিন্তু চতুর্থ দিন সকালে সব এলোমেলো হয়ে যায় স্বাগতিকদের। মিরাজের শতক মিসের সঙ্গে বাংলাদেশ অল আউট হয় ৩০৭ রানে। ফলে ১০৬ রানের সহজ লক্ষ্যে প্রোটিয়ারা পৌছায় ৭ উইকেট হাতে রেখেই।
১০৬ রানের মামুলি লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দেখে শুনে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন এইডেন মার্করাম ও টনি ডি জর্জি। দুই ওপেনারের ব্যাটে লাঞ্চের আগেই দলকে নিয়ে যান ভালো অবস্থানে। ইনিংসের শুরু থেকে নিয়মিতই বেশ কয়েকটি ভালো ডেলিভারি করেও উইকেটের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।
অষ্টম ওভারে তাইজুল ইসলামের বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন মার্করাম। স্টাম্পের ওপর ডেলিভারি সুইপ করেছিলেন মার্করাম। বল প্যাডে লাগতেই জোরাল আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক। রিপ্লেতে দেখা যায়, প্যাডে লাগার আগে ব্যাটের নিচের কানা ছুঁয়েছে বল। তাই বদলে যায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।
বেঁচে যান মার্করাম। এর দুই ওভার পরই তাইজুলের আর্ম বলে বোল্ড হন মার্করাম। দলের রান ৫০ হওয়ার আগেই বিদায় নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ২৭ বলে ২০ রান করেন তিনি। এরপর ত্রিস্টিয়ান স্টাবসকে নিয়ে রান বাড়াতে থাকেন জর্জি। যদিও তাইজুলের টার্নিং ডেলিভারিতে বড় শটের খোঁজে লং অনে ধরা পড়েন জোর্জি।
আশা জাগিয়েও ফিফটির আগেই ফিরলেন বাঁহাতি ওপেনার। ৭ চারে ৫২ বলে তিনি করলেন ৪১ রান। সঙ্গী হারালেও বেডিংহ্যামকে নিয়ে এগোতে থাকেন স্টাবস। তবে দলীয় রান ১০০ ছোঁয়ার আগেই তাইজুলের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ডেভিড বেডিংহ্যাম। যদিও রায়ান রিকলেন্টনকে সাথে নিয়ে স্টাবস দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন স্টাবস।
এর আগে নতুন দিনের শুরুতে দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ওভারেই আঘাত করেন কাগিসো রাবাদা। ইনসুইং ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন নাঈম হাসান। খালি চোখেই নিশ্চিত আউট বোঝা যাওয়ায় রিভিউ নেননি ১৬ রান করা নাঈম। নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেন এই পেসার।
এরপর ব্যাটিংয়ে নামা তাইজুল ইসলাম ভিয়ান মুল্ডারের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি দারুণ কাট শটে বাউন্ডারি মার। দলের রান তিনশ পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে লিড ছাড়ায় ১০০। খানিক পরই অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি খোঁচা মেরে স্লিপে ধরা পড়েন তাইজুল।
ক্রিজে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আসেন হাসান মাহমুদ। অপরপ্রান্তে সেঞ্চুরির জন্য লড়তে থাকা মিরাজ শেষ পর্যন্ত শতক পূরণ করতে পারেননি। রাবাদার ষষ্ঠ উইকেট হিসেবে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বসেন ব্যক্তিগত ৯৭ রানে। ৩০৭ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। ১০৬ রানের লক্ষ্য পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
মিরপুর টেস্টে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১০৬ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা কাইল ভেরাইনার শতকের ওপর ভর করে অল আউট হয় ৩০৭ রানে। বাংলাদেশের হয়ে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। আর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্রথম ইনিংসে ৩টি করে উইকেট নেন রাবাবা, মুল্ডার ও মহারাজ।