মনিরুল ইসলাম : আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠকে বসে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল, যার মধ্যে ছিলেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, মাহমুদ হোসেন, রাশিদা বেগম, সাইফুল ইসলাম ও শেখ মোহাম্মদ শিমুল। কমিশনের পক্ষে সভায় সভাপতিত্ব করেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
বৈঠকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আগামী জুন মাসের প্রথমার্ধের মধ্যে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার তাগিদ জানায় এবং সংবিধান সংস্কার প্রসঙ্গে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরে।
সাইফুল হকের মূল প্রস্তাব ও বক্তব্যের সারাংশ:
নাগরিক অধিকার: কোন নাগরিকের মতাদর্শ, ধর্ম, লিঙ্গ বা সাংস্কৃতিক পরিচয়ের কারণে তার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন করা যাবে না। এমনকি জরুরি অবস্থাতেও গণতান্ত্রিক অধিকার স্থগিত করা যাবে না।
রাষ্ট্রের মূল কাঠামো: রাষ্ট্রের নাম ও সংবিধানের মৌলভিত্তি অপরিবর্তনীয় রাখতে হবে।
গণতান্ত্রিক সংস্কার: সংবিধান এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যাতে সরকারকে আরও দায়বদ্ধ, জবাবদিহিমূলক করা যায় এবং রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হয়।
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা: প্রধানমন্ত্রীকে মন্ত্রিসভার এক নম্বর সদস্য হিসেবে বিবেচনা করে যৌথ কর্তৃত্বের ভিত্তিতে পরিচালনার পক্ষে মত দিয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুচিত।
সংসদ, রাষ্ট্রপতি ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ ৪ বছর করার প্রস্তাব।
সর্বোচ্চ দুটি মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকার বিধান।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর রাখা।
সারাদেশে ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের প্রস্তাব।
নারীর অধিকার: নারীর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় সাংবিধানিক সুরক্ষা এবং নারীবিরোধী তৎপরতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান:
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব।
নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি।
প্রেসব্রিফিংয়ে সাইফুল হক বলেন, প্রকট বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কারও টেকসই হবে না। তিনি জানান, বৈঠকে কিছু বিষয়ে কমিশন ও পার্টি উভয়েই পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। মে মাসে আরও একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।