শিরোনাম
◈ প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্তিমূলক নববর্ষ উদযাপনের উদ্যোগ ◈ দুদকের অভিযোগের জবাবে যা বললেন টিউলিপ ◈ অনন্ত জলিলের দাবি মিথ্যা: প্রেস সচিব শফিকুল আলম ◈ পুলিশের সিগন্যাল অমান্য করে পালানোর সময় প্রাইভেট কারসহ ২ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার ◈ সীমানা প্রাচীর ভেঙে র‍্যাবের মাঠে বাস, ডোপ টেস্টে চালক ◈ ক্রিকেটার সেজে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা, বিমানবন্দরে আটক ১৫ বাংলাদেশি ◈ সরকারের হস্তক্ষেপে সৌদি আরবগামী ফ্লাইটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটের এয়ার টিকিটের মূল্য ৭৫% কমলো ◈ ব্রিটেনে সদ্য আসা হাজারো বাংলাদেশি অভিবাসন নিয়ে চিন্তায় ◈ ভুয়া নথিতে ভারতীয় পাসপোর্ট: কলকাতায় ৬৯ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশের আবেদন ◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৮ ঘণ্টায় ৯৭০ জন নিহত

প্রকাশিত : ১৯ মার্চ, ২০২৫, ০৮:১৯ রাত
আপডেট : ২০ মার্চ, ২০২৫, ০৩:৩৭ রাত

প্রতিবেদক : মনিরুল ইসলাম

ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিলে গণতন্ত্রের কবর রচনা হবে: তারেক রহমান

মনিরুল ইসলাম: ‘গণতান্ত্রিক সরকার’ গঠনে অন্তবর্তীকালীন সরকার ‘নির্বাচনকেই সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেবে’ .. এমন জনপ্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব  তারেক রহমান।

বুধবার ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ একটি রাষ্ট্রে একটি সরকারের মেয়াদ নির্দিষ্ট। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক নীতি কিংবা রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা দীর্ঘস্থায়ী দীর্ঘমেয়াদী। সুতরাং রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী এবং টেকসই কার্য্কর রাখতে জনগনের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায় নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরী। দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ক্ষমতাহীন জনগন এবার নিজেদের ভোটের অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠা করে নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে প্রস্তুত।”

‘‘জননিরাপত্তা নিশ্চিত এবং জনদুর্ভোগ কমানোর সকল পদক্ষেপ গ্রহনের পাশাপাশি জনগনের ভোট জনগনের কাছে দায়বদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তবর্তীকালীন সরকার নির্বাচনকেই সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেবে এটাই গণতন্ত্রকামী জনগনের প্রত্যাশা।”

তারেক বলেন, ‘‘ বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বৈষ্যমহীন নিরাপদ গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নির্বাচিত জাতীয় সরকারের মাধ্যমেই বিএনপি রাষ্ট্র ও রাজনীতি মেরামতের কাজগুলো সফল করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সেই লক্ষ্য পুরণে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনগনের রায় রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলে্র প্রতিনিধি এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয় সরকার করবে যা অতীতেও আমরা জাতির সামনে কমিট করেছি।”

‘‘গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলো সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের প্রতি আহ্বান, গণতন্ত্রকামী জনগনের প্রতি আহ্বান বীর জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাজারো শহীদের রক্তে রঞ্জিত রাজপথে গড়ে উঠা ঐক্য বিরোধী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে এখনো। আমরা যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি স্বাধীনতা প্রিয় জনগন ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না ইনশাল্লাহ।”

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এবং ফ্যাসিস্ট সরকার পতন আন্দোলনে সকল শহীদ ও আহতদের জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

ইস্কাটনে লেডিজ ক্লাবে বিএনপি রাজনীতিবিদদের সন্মানে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করে। ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা হয়।

‘সরকারকে সর্তক থাকতে হবে’

তারেক রহমান বলেন, ‘‘ সাম্প্রতিক সময়ে নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী… তাদেরকে নিরাপত্তাহীন রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। সরকার, প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি কিংবা অন্য কোনো কাজে বেশি মনোযোগী থাকার কারণে আমাদের মা-বোন-কন্যাদের নিরাপত্তা সংকটে পড়েছে কিনা এই বিষয়টি গভীর ভাবে ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।”

‘‘আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলতে চাই, ধর্মীয় উগ্রবাদীদের অপতৎপরতা ও চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে উগ্রবাদী জনগোষ্ঠি এবং পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি দেশে পুনরায় গণতন্ত্রের কবর রচনা করবে।অপর দিকে গণতান্ত্রিক বিশ্বের ইমেজ সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ।দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চরিত্র সম্মুন্নত রাখতে চরম পন্থা ও ধর্মীয় উগ্রবাদীদের অপতৎপরতার অপশক্তিকে প্রতিহত করার পাশাপাশি গণহত্যাকারী পলাতক মাফিয়া চক্রকে যেকোনো মূল্যে বিচারের সম্মুখীন করার মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থা শক্তিশালী করাই হবে বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক পক্ষের শক্তির আগামী দিনের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।”

‘গণতন্ত্র ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নাই’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘জাতীয় ঐক্যমত কমিশন হয়েছে।সংস্কার প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক দলের কাছে পৌঁছে গেছে।আপনারা নিশ্চয় তা গভীরভাবে পর্যালোচনা করবেন, দেখবেন, পরীক্ষা করবেন।এই দেশে জাতির জন্য যেটা প্রয়োজন বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় ইতিহাস, তার কৃষ্টি, তার ঐতিহ্য, তার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সব কিছুকে নিয়ে যেন আমরা সামনের দিকে এগুতে পারি।এটাই হওয়া উচিত আমাদের সকলের লক্ষ্য।”
এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ বলেন, ‘‘ আমাদের একটা জিনিস অনুধাবন করতে হবে যে, দেশটা আমাদের। ভারতের দালালী করে কোনো লাভ হবে না। আমরা বহুদিন দালালী করেছি বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।”

‘‘এবার ভারতের পেঁয়াজও নাই, এবার ভারতের চালও নাই কিন্তু বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে। 

তারেক রহমানসহ তরুন নেতৃত্বেকে যদি অভিজ্ঞতাকে নিয়ে এগুতে পারে তাহলে এদেশে আর পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হবে না বলে মন্তব্য করেন অলি।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের ভবিষ্যত বিনির্মাণে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের জন্য এখন জাতীয় ঐক্যই হবে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। 

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘একটি কথা বলা হচ্ছে যে, ইনক্লুসিভ ইলেকশন। আমি মনে করি যে, এই ইনক্লুসিভ ইলেকশন হওয়ার মতো বাংলাদেশের জনগনের প্রতিনিধিত্ব করার মতো রাজনৈতিক দল বর্তমানে দেশে রয়েছে।’

‘‘ ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগন যে শক্তিকে পরাজিত করেছে… মুজিববাদ ও আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টদের বিদায় করেছে… বাংলাদেশের সামনের ভবিষ্যত রাজনীতি নির্বাচন সেখানে সেই মুজিববাদী রাজনীতির স্থান আসলে হবে না। একটা বিচার প্রক্রিয়া চলমান আছে… বিচারের আগে তো সেই প্রশ্নটিই আসে না। আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে সেই আহ্বান রাখবে যে, এই বিষয়েও যাতে আমরা রাজনৈতিক ঐক্যমতে আসতে পারি।”

প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় এই আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বক্তব্য রাখেন।

ইফতারে সিপিবির মোহাম্মদ শাহ আলম, রুহিন হোসেন প্রিন্স, খেলাফত মজলিশের আমির আল্লামা মামুনুল হক, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নিশিখা জামালী, বাংলাদেশ জাসদের শরীফ নুরুল আম্বিয়া, নাজমুল হক প্রধান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণ দলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের আব্দুর রকিব, বিকল্পধারা বাংলাদেশ নুরুল আমিন ব্যাপারী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার খন্দকার লুৎফুর রহমান, রাশেদ প্রধান, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি(এসসিপি) সারজিস আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দীন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মীর নাসির, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, আবদুস সালাম পিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, আফরোজা খান রীতা, জহির উদ্দিন স্বপন, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, হাবিবুর রহমান হাবিবসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়