শিরোনাম
◈ আরাকান আর্মির কাছে জিম্মি ২৬ জেলেকে ফেরত আনল বিজিবি ◈ ঈদের চাঁদ দেখা যাবে কবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর ◈ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে : সিপিডি ◈ শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ◈ প্রবল বৃষ্টিতে রক্তের মতো লাল সমুদ্র সৈকত, ভিডিও ভাইরাল ◈ বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে: জাতিসংঘ মহাসচিব ◈ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ ◈ জাতীয় ঐক্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে: জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির ◈ কী ঘটেছিল সেদিন আছিয়াদের বাড়িতে, জানালেন সারজিস ◈ গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে: নাহিদ ইসলাম (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ০২:৩০ দুপুর
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ১০:১২ রাত

প্রতিবেদক : মহসিন কবির

আস্থাহীনতায় রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব বাড়ছে!

মহসিন কবির: নির্বাচন নিয়ে অস্থাহীনতার কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব বাড়ছে। বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি দল দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছে। তারা বলছে নির্বাচন বিলম্ব হলে দেশে অস্থিরতা বাড়ছে। কিন্তু ছাত্রদের রাজনৈতিক দল এনসিপি বলছে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। এছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পুরো সংস্কার করে নির্বাচন দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। পলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। 

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার ঐক্য ধরে রাখাটা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকরা বলেছেন নির্বাচন ও রাজনৈতিক ঐক্য দুটোই জরুরি। 

সংস্কারের গুরুত্ব বিষয়ে জামায়াতের সঙ্গে প্রথম দৃশ্যমান মতবিরোধ দেখা দেয় বিএনপির। অন্যদিকে অন্য ইসলামী দলগুলোরও বিএনপি, জামায়াত, এনসিপির সঙ্গে বৈঠক চলমান রেখেছেন। 

ইসলামী দলগুলো নিজেরাও মোর্চা তৈরির চেষ্টা করছে। কিন্তু জোট গঠনের সিদ্ধান্তে বা মোর্চা তৈরিতে এগুতে পারেনি রাজনৈতিক নানা ইস্যুতে মতপার্থক্যের কারণে। 

ছাত্রদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টিকে স্বাগত জানালেও এর গঠন নিয়ে আপত্তি ও পরে নানা উদ্যোগ আপত্তি রয়েছে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোর। এই অবস্থায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সংস্কার, নির্বাচন ও ঐক্য-এই তিন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক কাতারে এনে জাতীয় সমঝোতা প্রতিষ্ঠাই হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।

গত বুধবার এনসিপি ও জামায়াতের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস রাজধানীর শাহজাহানপুরে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বলেন, ‘আমরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছি গণতন্ত্রের জন্য, কথা বলার জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য। আজকে যখন ভোটের সময়ে আসছে এখন বলেন, এটা না করলে ভোট হবে না, ওটা না করলে ভোট হবে না। কেন রে ভাই কেন? আওয়ামী লীগ তো দেশটাকে বাপের তালুকদারি ভেবেছিল যার কারণে যা-খুশি তাই হয়েছে। আপনারও কি তাই ভাবেন? এই বাংলাদেশ কারও তালুকদারি নয়। সুতরাং কথা-বার্তা বলার সময়ে হিসেব করে বলবেন। যাতে আমাদের বে-হিসাবি কথা বলতে না হয়।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক গত বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে। আন্দোলন সফল করেছে। কিন্তু নতুন দল (জাতীয় নাগরিক পার্টি) আবার একটি গোলমাল শুরু করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জনগণ বলা শুরু করেছে। তাই বিএনপি এই সরকারকে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে, সংস্কার অবশ্যই করবেন কিন্তু সংস্কারের নামে আবার আওয়ামী প্রণেতারা সুযোগ বুঝে কোপ মারবে এটা থেকে বিরত থাকতে হলে আপনাকে অনতিবিলম্বে একটি নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া উচিত।’

বিএনপি ও তার জোট সঙ্গীকে উদ্দেশ্য করে জামায়াতে ইসলামী চকবাজার থানা আয়োজিত ইফতারে বুধবার দলটির কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু একটি গোষ্ঠী চাচ্ছে এখনই নির্বাচন দিতে। তাদের দাবি হচ্ছে সংস্কারের কোনো দরকার নাই, নির্বাচন দাও, আমরা ক্ষমতায় যাই।’

বাহাসের এই ধারায় জড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে বিএনপির ‘‘কথার টোন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে’’।’ সরকারের আরেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ অন্য ছাত্র নেতারাও এসব বিষয়ে নিয়মিত প্রতিক্রিয়া পাল্টা প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ বা এ সংক্রান্ত স্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ হওয়ার আগে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসতে পারবে কি না তার ওপর গভীর নজর রয়েছে বিএনপিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দলগুলোর। 

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্য দলটি পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। এরপর সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে কিছু কর্মসূচি দেবে। তবে বর্তমান সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি এখনই করতে চাইবে না। 

গত সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গড়িমসিসহ সব ষড়যন্ত্র মাঠে থেকেই মোকাবিলা করবে বিএনপি। দলটি মনে করছে, গণপরিষদ নির্বাচন, সেকেন্ড রিপাবলিক ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তুলে জাতীয় নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ইসি, প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার দরকার। সুতরাং অল্প ও বেশি সংস্কার নিয়ে আলোচনা করাটা অবান্তর। সরকার চাইলে ঘোষিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অবশ্যই সম্ভব।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়