শিরোনাম
◈ সুযোগ পেলেই আমরা ড. ইউনূসকে শূলে চড়াই: সারজিস ◈ (১৫ মার্চ) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই সেখ জুয়েল এখন বিধান মল্লিক ◈ টিউলিপ সিদ্দিক জাল স্বাক্ষর করেছিলেন বোনকে ফ্ল্যাট পাইয়ে দিতে: ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন ◈ ভারতের সেনাপ্রধান শেখ হাসিনার ফেরা নিয়ে মন্তব্য করেছেন কি? ◈ নওফেল, বিপ্লবকে ১০ কোটি টাকায় পালানোর সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ সাবেক এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে! ◈ তিন মাসের শিশুকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ◈ ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত আদানির কাছে মার্কিন সমন পৌঁছে দেবে ভারত ◈ ট্রুডোর পদত্যাগ, শপথ নিলেন মার্ক কার্নি ◈ সীমান্তবর্তী তিন উপজেলায় অবাধে ব্যবহার হচ্ছে ভারতীয় সিম!

প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ১২:১৯ রাত
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নওফেল, বিপ্লবকে ১০ কোটি টাকায় পালানোর সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ সাবেক এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে!

দেশ রুপান্তরের প্রতিদেবন।। গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়াসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অন্তত দুই ডজন নেতাকে দেশ থেকে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উচ্চপদস্থ সাবেক এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের পালানোর সুযোগ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিভিন্ন পদে দায়িত্বে থাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্র্তৃপক্ষের (বেবিচক) এবং নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, শাহ আমানতের উচ্চপদস্থ সাবেক ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

শাহ আমানতে বিভিন্ন পদে দায়িত্বে থাকা বেবিচকের এবং নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পরদিন (৬ আগস্ট) সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আবাসিক এলাকায় সাবেক ওই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সরকারি বাসায় রাতে অবস্থান করেন। ৭ আগস্ট সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বিপ্লবকে তুলে দেন ওই কর্মকর্তা। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে আরেকটি উড়োজাহাজে করে বিপ্লব বড়–য়া যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। একইভাবে ৬ থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি দিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলকে সহযোগিতা করেন ওই কর্মকর্তা।

অভিযোগ রয়েছে, নিরাপদে দেশত্যাগে সহযোগিতার বিনিময়ে বিপ্লব বড়–য়ার কাছ থেকে নগদে ৫ কোটি টাকা নিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। নওফেলের কাছ থেকেও সমপরিমাণ টাকা নেওয়া হয়েছে বলে আলোচনা রয়েছে শাহ আমানতে বেবিচকের এবং নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে নিরাপদে বিপ্লব ও নওফেলকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যেতে ঊর্ধ্বতন ওই সাবেক কর্মকর্তার হয়ে মাঠপর্যায়ে সার্বিক সহযোগিতা করেন শাহ আমানত বিমানবন্দরের অ্যারোড্রাম ফায়ার অপারেটর দীপঙ্কর চৌধুরী। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নিজের কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন তিনি। কিন্তু গত বছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি (দীপঙ্কর) আর কর্মস্থলে আসছেন না। বিমানবন্দরটির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সাবেক মেয়রসহ যুবলীগ-ছাত্রলীগের অন্তত দুই ডজন নেতাকে দেশত্যাগে সহযোগিতার অভিযোগ ওঠায় দীপঙ্কর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে শাহ আমানত বিমানবন্দর কর্র্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওই বিভাগীয় মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘অ্যারোড্রাম ফায়ার অপারেটর দীপঙ্কর চৌধুরী গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বিমানবন্দরের আলোচ্য ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হয়ে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অন্তত দুই ডজন নেতাকে শাহ আমানত দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন।’ এমন পরিস্থিতি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আলোচিত এ দীপঙ্করের সন্ধানে মাঠে নেমেছে।

শাহ আমানত বিমানবন্দরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গত বছর ২০ আগস্ট দুপুরে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কর্মচারী মেহেদী হাসানের মাধ্যমে তিন ব্যাগভর্তি নগদ টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ একটি উড়োজাহাজে করে ঢাকায় পাঠান শাহ আমানতের আলোচিত ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। কিন্তু শাহজালালে তিন ব্যাগ টাকা ও সোনাসহ ধরা পড়েন মেহেদী। যদিও রহস্যজনক কারণে ধামাচাপা পড়ে যায় চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা।’

শাহ আমানতের উচ্চপদস্থ সাবেক ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে থাকাকালে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে। সদর দপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই গত ২১ আগস্ট বিমানবন্দর এলাকায় একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে থ্রি ডি, এলইডি বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো স্থাপনের অনুমতি দেন তিনি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর টার্মিনালের ওপর ‘ফ্লোরোসেন্ট লাইটিং স্থাপন প্রকল্পে’ও বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ফ্লোরোসেন্ট লাইটিং প্রকল্পে সর্বমোট ব্যয় দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ঠিকাদারের সঙ্গে আঁতাত করে বাজারদরের চেয়ে ১০ থেকে ৫০ গুণ বেশি পণ্যের দাম দেখিয়ে ওই কর্মকর্তা বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিমানবন্দরের সাবেক ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ পেয়েছে দুদক। দুদকের পরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা শাহ আমানত বিমানবন্দরের ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান করছেন বলে দেশ রূপান্তরকে সংস্থাটির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়