শিরোনাম
◈ ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মার্চ ◈ ফেব্রুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে, স্বস্তি খাদ্যেও ◈ কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বরে, বেশি চাইলে জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রাক্তন দুই মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা ◈ বিক্ষোভের শহরে পরিণত হচ্ছে রাজধানী ঢাকা: নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদন ◈ সামনের পথ স্পষ্ট - একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে দ্রুত প্রত্যাবর্তন : মির্জা ফখরুল ◈ ইউক্রেনকে সাহায্য করতে নারাজ ইউরোপের ২ দেশ ◈ জাতীয় নাগরিক দল বাংলাদেশে নির্বাচনী দৃশ্যপট পরিবর্তন করতে পারে ◈ ইউপি চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ৪৯ ব্যাংক হিসাব, লেনদেন ১৪,৩৭৬ কোটি টাকা ◈ সাতকানিয়ায় নিহত ২: কোতোয়ালি থানার লুট হওয়া পিস্তল দিয়ে ছোড়া হয় গুলি ◈ পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৩৭ কর্মকর্তাকে র‍্যাংকব্যাজ পরালেন ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত : ০৬ মার্চ, ২০২৫, ১০:৫৫ দুপুর
আপডেট : ০৬ মার্চ, ২০২৫, ১০:২৫ রাত

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

আওয়ামী লীগ নিয়ে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্য কি রাজনৈতিক?

এল আর বাদল : বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন। যদিও তিনি এর আগে বিভিন্ন সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাকা-ের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচারের কথা বলেছেন। কিন্তু এখন তিনি পতিত দলটিকে নিয়েই রাজনৈতিকভাবে আক্রমণাত্মক ভাষায় বক্তব্য দিলেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন। 

অন্যদিকে, দেশটির রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আওয়ামী লীগের ফেরত আসা বেশ কঠিন; তাদের জন্য বড় বাধা নৈতিকতার প্রশ্ন। সরকার প্রধান অধ্যাপক ইউনূস এমন এক প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে বক্তব্য দিলেন, যখন আইনশৃঙ্খলাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা কর্তৃত্বের প্রশ্নে নানা আলোচনা চলছে। অন্যদিকে, নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বর্তমানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ, বিভেদ প্রকাশ্যে এসেছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

সম্প্রতি সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও বিভক্তির রাজনীতি, আইনশৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর ভাষায় বক্তব্য দিয়ে সব পক্ষকে সতর্ক করেছেন। সেই বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ঐক্য না থাকলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে।

এমন পটভূমিতে বিবিসি বাংলা গত তেশরা মার্চ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। সেই সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রধান উপদেষ্টাকে। সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নে তিনি প্রথমে মন্তব্য করতে চাননি।

তবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো শঙ্কা আছে কি না- এই প্রশ্ন করা হলে এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এটাতো সবসময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্ট করছে এটাকে (দেশটাকে) আনসেটেল (অস্থিতিশীল) করার জন্য। এটাতো সবসময় থ্রেট (হুমকি) আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে।

ওই সাক্ষাৎকারে এই হুমকির জন্য তিনি আওয়ামী লীগকেই দায়ী করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, অধ্যাপক ইউনূসের এ ধরনের বক্তব্যে তার আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট হলো। বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতাদেরও অনেকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ঘিরে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্যকে একটি রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে দেখছেন।

কারণ প্রধান উপদেষ্টা এতদিন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে কোনো বক্তব্য দেননি। আর আগে বিভিন্ন সময় তার বক্তব্য সীমাবদ্ধ ছিল শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের বিষয়ে।

যদিও সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় ক্ষমতাচ্যুত দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিয়ে রাজনৈতিকভাবে নানা অভিযোগ করেছেন বা বক্তব্য দিয়েছেন। বিশেষ করে শেখ হাসিনার শাসনের পতনের আন্দোলনের ছাত্র নেতৃত্বের প্রতিনিধি যারা সরকারে আছেন, তারা শুরু থেকে দলটির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। ছাত্র নেতৃত্বের দিক থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার চাপও রয়েছে।

রাজনৈতিক বক্তব্য কেন দিতে হলো

দেশের পরিস্থিতি এবং নানামুখী চাপের কারণে অধ্যাপক ইউনূসকেও একটা অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিকভাবে বক্তব্য দিতে হচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন।

আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেম-এর শিক্ষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বসহ বিভিন্ন পক্ষ ক্ষমতার কেন্দ্রের চারপাশে রয়েছে। তাদের দিক থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের আইনগতভাবে বিচারের পাশাপাশি দলটির বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে অবস্থান নেওয়ার চাপ থাকতে পারে।
দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিও তারা সামনে আনছে। অধ্যাপক ইউনূসের এমন বক্তব্যের ক্ষেত্রে সেটিও একটি বড় কারণ হতে পারে বলে মনে করেন ওই রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

বিশ্লেষকদের কেউ কেউ আবার মনে করেন, দেশের জনগণের একটা অংশের সমর্থন ছিল আওয়ামী লীগের প্রতি। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হলেও সেই সমর্থন শেষ হয়ে যায়নি। একই সঙ্গে দলটির প্রধান নেতা দেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান নিয়ে আছেন এবং ভারতের সমর্থন পাচ্ছে দলটি। ফলে দলটি দেশের ভেতরে সংগঠিত হতে না পারলেও বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিরতা তৈরির পেছনে থাকতে পারে কি না- এ ধরনের সন্দেহ, চিন্তা অন্তর্র্বতী সরকার ও তাদের মিত্র পক্ষগুলোর মধ্যে রয়েছে। তাদের মধ্যে এক ধরনের ভয় বা শঙ্কাও কাজ করতে পারে। সেজন্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য বাড়ছে।

বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস যে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকির কথা বলেছেন, এই হুমকি কি আওয়ামী লীগ থেকে আসছে- এই প্রশ্নে তিনি বলেছেন, অবশ্যই। এটাতো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। এড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বিষয়টাকে ভিন্নভাবেও দেখছেন। তারা মনে করেন, এর আগে রাজনৈতিক সরকারগুলোকে ব্যর্থতার দায় এড়াতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অভিযোগ আনতে দেখা গেছে।

তারা উদাহরণ হিসেবে আওয়ামী লীগের শাসনের সময়কে টানছেন। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের শাসনে কোনো ঘটনা ঘটলেই ব্যর্থতার দায় এড়িয়ে দলটির তৎকালীন প্রতিপক্ষ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করা হতো। এখন সে ধরনের পথ অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, এমন সন্দেহ প্রকাশ করছেন তারা।

লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, অতীতের মতো এখনও কোনো ঘটনা ঘটলে অভিযোগ করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

অন্যদিকে, দেশে এখন আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা মব থামানো যাচ্ছে না। অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থা কাটিয়ে ওঠা কতটা কতটা সম্ভব হয়েছে বা কতটা গতি পেয়েছে, সেই প্রশ্নও রয়েছে বিশ্লেষকদের অনেকের।

তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের দুর্বলতা, অদক্ষতার বিষয় আলোচনায় আসছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থতার অভিযোগও উঠছে। এ প্রেক্ষাপটে অন্তর্র্বতী সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেও ক্ষমতাচ্যুতদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য আসতে পারে।

মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, নানামুখী চাপের কারণে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে রাজনীতি এসেছে। তিনি আওয়ামী লীগ বিরোধী একটা অবস্থান স্পষ্ট করলেন।

তিনি আরও বলেন,আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি এবং এটি এখনও বেআইনি দল নয়। ফলে দলটিকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যখন রাজনৈতিক বক্তব্য দেন, তখন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
রাজনীতিকদেরও অনেকে মনে করেন, অধ্যাপক ইউনূস আওয়ামী লীগ নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে একটা রাজনৈতিক অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে। বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, সরকার যদি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতো, তাহলে মানুষ নির্বাচনমুখী হতো। তখন দেশের অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিবিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের দুর্বলতার বিষয় আলোচনায় থাকতো না।

আওয়ামী লীগের ফেরা কঠিন

আওয়ামী লীগ দেশের রাজনীতিতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দলটির সরকারের পতনের সাত মাস হতে চলেছে। কিন্তু সাত মাসে দলটির দেশের ভেতরে কোনো অবস্থান তৈরি করতে বা দেখাতে পারেনি।

টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের এক পর্যায়ে এসে আওয়ামী লীগ রাজনীতি ও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতার স্বাদ নিতে সুবিধাবাদীদের ভিড় জমেছিল দলটিতে। তারা একতরফা ও বিতর্কিত তিনটি নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে ছিল প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার ওপর ভর করে। আওয়ামী লীগ তাদের কর্মকা-ের ব্যাপারে মানুষের ক্ষোভ বা মনোভাবকে পাত্তাই দেয়নি। নানা সংকট চাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা ছিল।

কতৃত্ববাদী মনোভাবে থাকা আওয়ামী লীগ সমস্যাগুলো রাজনৈতিকভাবে সমাধান করেনি। সেকারণে গণঅভ্যুত্থানে খুবই খারাপ পরিস্থিতিতে তাদের পতন হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনাসহ নেতাদের বড় অংশকে বিদেশে পালাতে হয়েছে; যে নজির বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই।

ফলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দলটির ভঙ্গুর চেহারা প্রকাশ পেয়েছে। নেতারা পালিয়েছেন। সুবিধাবাদীরা সরে পড়েছেন। দেশে পালিয়ে থাকা নেতা-কর্মীরা মানসিকভাবে দুর্বল অবস্থানে রয়েছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নৈতিকতার প্রশ্ন।

কারণ তাদের শাসনের সময় অর্থপাচার, দুর্নীতি-অনিয়মের এত অভিযোগ উঠছে, যার প্রভাবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মানসিকভাবে শক্ত অবস্থান নিতে পারছেন না। এছাড়া তাদের সরকারের পতনের আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখিও হতে হচ্ছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না করা প্রশ্নে এখন সক্রিয় দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য আছে। কিন্তু এই দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগকে সহসাই রাজনীতিতে সুযোগ না দেওয়ার ব্যাপারে একটা ঐকমত্য আছে।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে দেশের ভেতরে আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প নেতৃত্ব প্রকাশ্যে এসে দলকে সংগঠিত করবে, সেই সাহস কেউ দেখাতে পারছে না বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন। বিদেশে যারা অবস্থান করছেন, তারা সংগঠিত হয়েছেন বলে তাদের অনেকে দাবি করছেন। কিন্তু বাস্তবতার কারণে তাদের কর্মকা- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর হয়ে পড়েছে। দেশের ভেতরে নেতা-কর্মীদের মনোবলে কতটা প্রভাব ফেলতে পারছে, সেই প্রশ্ন রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা হয়েছিল। তখনও দেশে অল্প সময়ের মধ্যে দলটির পরের স্তরের নেতারা রাজনীতির মাঠে নেমেছিলেন। তাদের মধ্যে বিভক্তি এলেও তারা দেশের ভেতরে রাজনীতিতে ছিলেন।

তিনি মনে করেন, এর পরও বিভিন্ন সময় সংকটে আওয়ামী লীগ দেশের রাজনীতির মাঠ ছাড়েনি। কিন্তু এবার মনোবল হারানো ভঙ্গুর দলটি এখনও কোনো অবস্থান নিয়ে নামতে পারছে না।

আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে আবার বলছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্তর্র্বতী সরকারের ব্যর্থতার কারণে তারা সুবিধা পেতে পারেন। কিন্তু বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সেই সুবিধা কিছুটা সহায়ক হতে পারে। কিন্তু দলগত অবস্থান দৃশ্যমান না হলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন।

কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে চায় দলটি

ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে যারা অবস্থান করছেন, তাদের অনেকে বলছেন, দেশের ভেতরে কর্মসূচি দিয়ে তা পালনের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ভালো নয়। নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার হতে হয়েছে। সেকারণে দেশের ভেতরে তারা এখনই কোনো কর্মসূচি দিচ্ছেন। দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ আলী আরাফাত, বিদেশে অবস্থান করা একাধিক নেতা ও দেশের ভেতরে কয়েকটি জেলার নেতার সঙ্গে কথা হয়। তারা দাবি করেন, দেশে এ মুহূর্তে কোনো কর্মসূচিতে না গিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই তারা দলকে সংগঠিত করছেন।

মি. আরাফাত বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আর নির্বাচন হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে, এই অবস্থান নিয়ে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে চাপ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছেন।

তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের মূল কথা হচ্ছে, দেশের ভেতরে অবস্থান নিয়ে দাঁড়াতে তারা সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে সহসাই সেই সুযোগ মিলবে, এমনটা মনে করেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়