শিরোনাম
◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ মধ্যরাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ 'আ. লীগের বিচার না করলে জনগণ আবার আন্দোলনে নামবে' (ভিডিও) ◈ বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি, ২০০ ভরি স্বর্ণ লুট (ভিডিও) ◈ দেশের সব মেডিকেল কলেজে সোমবার ‘একাডেমিক শাটডাউন’ ◈ এবার জামায়াতের আমীরের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে শিবির ◈ জুনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে নেপাল ◈ চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি; ভুক্তভোগী নারীর লোমহর্ষক বর্ণনা! ভিডিও ◈ মধুর ক্যান্টিনে শিবিরের উপস্থিতি মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করে: ছাত্রদল ◈ ধানমন্ডিতে সশস্ত্র মহড়া, ডাকাত আতঙ্কে মসজিদে মাইকিং (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৩৩ রাত
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০২:৪৬ রাত

প্রতিবেদক : মনিরুল ইসলাম

অন্তবর্তীকালীন সরকার তাদের লক্ষ্য থেকে ‘কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন ' : তারেক রহমান

মনিরুল ইসলাম  :  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অন্তবর্তীকালীন সরকার তাদের লক্ষ্য থেকে ‘কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন। 

রোববার ঢাকা বার আইনজীবীদের এ্ক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, আমরা মনে করি, দেশকে যত দ্রুত স্থিতিশীল অবস্থায় আনা যাবে, তত দ্রুত দেশকে ধ্বংসের কিনারা থেকে বের করে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। অনেকে বলে থাকেন যে, নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যার সমাধান হবে? আমরা বলতে পারি, নির্বাচন হলে যে একটা স্থিতি অবস্থা আসবে এবং ধীরে ধীরে রিফর্মের কাজ শুরু হবে, তাতে সমস্যার তীব্রতা ধীরে ধীরে কমা শুরু করবে। নির্বাচন হলে সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন মানুষ দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন। যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন, তারা আলোচনা করবেন, কাজ করবেন। একদিনে কিছুই পরিবর্তন হবে না, কিন্তু শুরু হবে।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ঘাপলা থাকার পরও আমরা মেনে নিয়েছিলাম। তখন কিন্তু সংস্কার প্রস্তাবকে অন্যভাবে পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছিল। কারণ সেটি প্রকৃত অর্থে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ছিল না। এবার আর সেবারের তফাত এটাই যে, এবার সংস্কারের প্রস্তাব প্রথম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। যেহেতু প্রথম প্রস্তাবক আমরা, সেহেতু এটা বাস্তবায়ন করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। আর যদি বাস্তবায়ন করতে হয়, তবে অবশ্যই সংসদের প্রয়োজন। জনগণের রায়ের মাধ্যমে যে সংসদ আসবে, সেই সংসদ একমাত্র সংস্কার প্রস্তাবকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হবে। 

আমরা বাইরে তাকালে বিভিন্ন অস্থিরতা দেখতে পাই। অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে, দেশের মানুষ যে সিদ্ধান্ত নিতে চায়, সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করা এবং দেশের মানুষকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করা। আমরা লক্ষ্য করছি, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির কথাবার্তা দেখে মনে হচ্ছে তারা সম্ভবত তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা বিচ্যুত হচ্ছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন স্টেটমেন্ট থেকে কনফিউশন তৈরি হচ্ছে, মানুষ কনফিউজড হচ্ছে। রাজনীতিতে যখন কনফিউশন থাকবে, তখন অস্থিরতা তৈরি হবে। অস্থিরতা যদি থাকে, আমরা যে যতই সংস্কারের কথা বলি না কেন, কোনোটাই সফল হবে না। রাজনীতি অস্থির হলে, এর প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে, আর অর্থনীতির প্রভাব পড়বে সবকিছুতে। তিনি বলেন, আমরা সংসদকে কার্যকর করতে যত দেরি করব, এই অস্থিরতা, তর্ক-বিতর্ক তত বাইরে ছড়াতে থাকবে। 

তারেক রহমান বলেন, একটু পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যাবে, বিগত ১৫-১৬ বছরে প্রত্যেকটি সেক্টরে কী অরাজকতা হয়েছে, কী অন্যায় হয়েছে, তা আপনাদের স্মৃতিতে রয়ে গেছে। আপনারা বিভিন্ন নির্যাতন-অত্যাচারের কাহিনী শুনেছেন। বর্তমানে আলোচিত শব্দ ‘বৈষম্যের’ শিকার হয়েছেন। বিএনপিসহ যেসব দল মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ছিল, তাদের নেতাকর্মীদের কী অবস্থা হয়েছে, আপনারা চাক্ষুষ দেখেছেন। সবক্ষেত্রে একটা ভঙ্গুর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা প্রায় আড়াই বছর আগে ৩১ দফা ঘোষণা করেছি। রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। আমরা দেখেছি স্বৈরাচারের সময় অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, প্রশাসনসহ সব সেক্টর ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা যদি এখনই পলিসি বা সিদ্ধান্ত না গ্রহণ করি, তাহলে দেশকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। দেশের বিভিন্ন মানুষ সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব উপস্থাপন করছেন। যেটি একটি ভালো বিষয় বলে আমি মনে করি। কিন্তু যেই সময় কেউ সাহস করেনি স্বৈরাচারের মুখের ওপর দাঁড়িয়ে চোখে চোখ রেখে যে এই এই বিষয়ে সংস্কার করা দরকার, ঠিক তখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলো এই ৩১ দফা উপস্থাপন করেছে। আজকের অনেক ব্যক্তি সে সময় সংস্কারের ‘স’-এর ধারেকাছেও ছিলেন না। কিন্তু বিএনপি ও সমমনা দলগুলো সেদিন ৩১ দফা উপস্থাপন করেছিল।

তারেক রহমান বলেন, রাজনৈতিক দল হিসাবে আমাদের লক্ষ্য আছে যে কীভাবে আমরা দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে চাই। ৩১ দফায় আমরা বলেছি তত্ত¡াবধায়ক ব্যবস্থাকে পুনরায় প্রবর্তনের কথা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার কথা বলেছি। আরেকটি বিষয় আছে নৈতিক পরিবর্তন, রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন। এই বিষয়গুলোকে অ্যাড্রেস করতে হলে, সংসদের মধ্যে দিয়ে করতে হবে। সংসদ ছাড়া কীভাবে এগুলো বাস্তবায়ন করা যায়, তা একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে আমার বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, কোন নির্বাচন আগে হবে, কোন নির্বাচন পরে হবে এমন দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা বিবেচনা করতে হবে।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা বার ইউনিটের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এছাড়াও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা বার ইউনিটের সদস্য সচিব মো. নিহার হোসেন ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ইউনিটের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়