মহসিন কবির: ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের টাগ্রেট করে জোট গোছাচ্ছে রাজনৈতিকদলগুলো। এজন্য বিভিন্ন দল তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করছেন। জোটগঠন নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। পিছিয়ে নেই ছাত্র নেতারাও। দলগঠন নিয়ে তারাও সমানতালে এগুচ্ছে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে চা চক্রের আয়োজন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
চার দাবিতে বুধবার থেকে সারা দেশের ৬৭ সাংগঠনিক জেলায় সমাবেশ শুরু করেছে বিএনপি। সমাবেশে যোগ দিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যানসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা তৃণমূলে গেছেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সহনীয় পর্যায় রাখা, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা- এই চার দাবিতে আগামীকাল ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে সমাবেশ করছে।
জানা গেছে, আসন্ন রমজানে রাজপথে কোনো কর্মসূচি থাকবে না বিএনপির। তবে ওই মাসে ইফতার মাহফিলের মধ্য দিয়েও একই দাবি-দাওয়া তুলে ধরা হবে। আর এ সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট না হলে রমজানের পরে রাজপথে কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, নির্বাচন বন্ধ রেখে সংস্কার নয়, বরং সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলবে। কারণ, একটি দেশ অনন্তকাল নির্বাচনবিহীন থাকতে পারে না।
বিএনপি গত কয়েক মাস ধরে দলের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল গত রোববার নির্বাচন ভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)সহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে। সেখানে নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয় নিয়ে তারা ইসির সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। বিএনপির তরফ থেকেও নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ইসিকে সার্বিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়েও ইসির কাছে জানতে চায় দলটি। তখন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই ইসি পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবে।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর অব্যাহত দাবির মুখে বিজয় দিবসে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে কিংবা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে সম্প্রতি একটি বিদেশি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এ বছরের শেষদিকে বাংলাদেশে নির্বাচন হতে পারে।
এদিকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চা চক্রের আয়োজন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। বুধবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে হোটেল ফারসে এ চা চক্র অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে কতজন উপস্থিত হয়েছে তা জানা যায়নি।
চা চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। জাতীয় নাগরিক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারাও থাকবেন। আরও থাকবেন রুবি আমাতুল্লাহ, আবু আলম শহীদ খান, আবু সাঈদ খান, মাসুদ কামালসহ রাজনৈতিক নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
গত সোমবার রাজধানীর তোপখানার নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মান্না সংবাদিকদের জানান, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য সংহত করতে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ বিভিন্ন দল, সংগঠনের নেতাদের চায়ের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাটে জেলা বিএনপি সমাবেশ করেছে । নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা। নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা। পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবীতে। তারা সমাবেশ করছে।
সমাবেশ প্রধান অতিথি ছিলেন- জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। খুলনায় জেলা বিএনপি সমাবেশ করেছে। সমাবেশ প্রধান অতিথি ছিলেন- মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন বীরবিক্রম।
আপনার মতামত লিখুন :