শিরোনাম
◈ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় যা বললেন ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক ◈ মধ্যরাতে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে নীলক্ষেতে ইডেন কলেজের ছাত্রীরা (ভিডিও) ◈ সাত কলেজের ঘটনা ‘দুঃখজনক’, সব পক্ষকে ধৈর্য ধরার আহ্বান প্রো ভিসি ড. মামুনের ◈ ঢাবি-সাত কলেজ সংঘর্ষ, শিবির সভাপতির বক্তব্য ◈ সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গ্রেপ্তার ◈ ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, নীলক্ষেত নিউমার্কেট এলাকা রণক্ষেত্র (ভিডিও) ◈ তাসকিনের রেকর্ড, আবারো রাজশাহীর কাছে রংপুর রাইডার্সের অপ্রত্যাশিত হার ◈ এস কে সুরের লকারে তল্লাশি: ডলার-ইউরো, স্বর্ণসহ আরও যা পাওয়া গেল ◈ নাতির বয়সী ছেলে যদি বিএনপি মহাসচিবের বিরুদ্ধে খোঁচা দিয়ে কথা বলে, তা দু:খজনক : মেজর হাফিজ ◈ শাহবাগে মাদ্রাসার শিক্ষকদের লাঠিপেটা নিয়ে যা বললেন জামায়াত আমির

প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৪৯ দুপুর
আপডেট : ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

শুধু মির্জা ফখরুল নয়, দেশজুড়েই অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন: দাবি বক্তাদের

এল আর বাদল : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারেরর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তথ্য উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক কমিটির একাধিক সংগঠক এ বক্তব্যের বিরোধিতায় সোচ্চার। তবে বিএনপির অভিজ্ঞ নেতার পর্যবেক্ষণে ভুল দেখছেন না অনেকেই।

বিএনপি মহাসচিব  ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, কিছু বিষয়ে সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারছে না। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এ কথা বলেছেন তিনি। এর আগে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি নিরপেক্ষ না থাকে,  তাহলে নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার আছে। 
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আজকের বক্তব্যের বিষয়ে নিজের মত প্রকাশ করেছেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মূলত আরেকটা ১/১১ সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে।

মির্জা ফখরুল মূলত তার দুই দিন আগের সাক্ষাৎকারের বক্তব্যেরই ব্যাখ্যা দিয়েছেন  বৃহস্পতিবার। শহীদ আসাদের ৫৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে শহীদ আসাদ পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছি, অন্তর্র্বতী সরকার যদি নিরপেক্ষ না থাকে, তাহলে নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার আছে। আমি এই কথাটা বলেছি, কারণ, আমরা দেখছি, কিছু বিষয়ে অন্তর্র্বতী সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারছে না। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরো বলেন, এখন যে অন্তর্র্বতী সরকার আছে, সে সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। স্বাভাবিকভাবেই একটি ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের পরে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকজনক হলেও সত্য, এখন পর্যন্ত যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, সেখানে আমরা খুব বেশি নিশ্চিত হতে পারছি না যে, প্রত্যাশাগুলো পূরণ হবে।

তার কথা, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন রকমের কর্মসূচি আছে, সে কর্মসূচিগুলোতে সবাই একটা জায়গায় একমত- একটা নির্বাচন হওয়া দরকার। নির্বাচন শুধু একটি দলকে ক্ষমতায় পাঠানোর জন্য নয়, নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য একটি পথ সৃষ্টি করা।

তবে সাক্ষাৎকারে সে বিষয়েও সংশয় উঠে এসেছিল তার একটি কথায়। সেখানে তিনি বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চায় বলে জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারে নিজেদের প্রতিনিধি রেখে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টি মেনে নেবে না।

বিএনপি ও অন্য রাজনৈতিক দল যা মনে করে-
নাহিদ ইসলাম বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যকে এক অর্থে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মনে করলেও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে, এই সরকার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পারছে না। তাদের সরকারে তিনজন সমন্বয়ক বা ছাত্র আছেন। সরকারের কেউ কেউ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য কাজ করছেন। যে কেউ রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারে। তবে সেটা সরকারের থেকে নয়, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে নয়। আর সরকারের কেউ কেউ সক্রিয় আছেন সংস্কারের নামে সময় ক্ষেপণ করে ওই রাজনৈতিক দল গঠনে সময় দিতে।

উল্লেখ্য, আসাদুজ্জামান রিপন যে তিনজন সমন্বয়কের কথা বলেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম তাদের অন্যতম।

আসাদুজ্জামান রিপনও মনে করেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর মানুষের চাওয়া হলো, একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন। সেই চাওয়াকে পুরণ করতে এই সরকারের কাজ আসলেই দিন দিন প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
তিনি জানান, এই প্রশ্ন যদি জনগণের মধ্যে আরো আসে, তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলবো।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের বক্তব্যেও উঠে এসেছে একই মত। তার মতে, কোনো কোনো উপদেষ্টার কথা এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজই বলে দেয়, এই সরকার নিরপেক্ষতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তারা কেউ কেউ ক্ষমতায় থেকে নতুন দল গঠনের কাজ করছে। তারা যদি উপদেষ্টা পরিষদে থাকে, তাহলে তো এই সরকারের নিরপেক্ষতা থাকবে না। আমরা তো নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকার চাইবো- যাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকেব না।

অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে রুহিন হোসেন প্রিন্স আরো বলেন,  তারা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা না করেইতাদের মতো কাজ করছে। সংস্কারের কথা বলতে চাইছে। তারা  প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংস্কারের তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিয়ে অন্তর্র্বতী সরকার ঢুকিয়েছে। তারও স্পষ্ট অভিমত, আসলে ঐক্যমত ছাড়া কিছু হবে না। নির্বাচনকালীন সরকারের যে বৈশিষ্ট্য তারা (অন্তর্র্বতী সরকার) হারিয়েছে।

‘বিএনপি নির্বাচনের সময় আরেকটি নিরপেক্ষ সরকার দাবি করতেই পারে’
এ প্রসঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, সমন্বয়করা কেউ কেউ মুখে মুখে বলছেন ‘আমরা রাজনৈতিক দল করবো না, তবে পলিটিক্যাল শক্তি হিসাবে থাকবো।' তারা দুইটি প্ল্যাটফর্ম করে আসলে রাজনীতিই করছে।

বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সংবর্ধনা নিচ্ছে। তারা কিংস পার্টি গঠন করছে। আর উপদেষ্টা পরিষদে যে তিন জন আছেন, তারা তাদের রাজনীতির কাজে সহায়তা করছেন। তারা এটা করলে পদত্যাগ করে করা উচিত।

আর সংবিধানে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান আছে, সেটা তো এই অন্তর্বর্তী সরকার নয়। সেটা তো আলাদা। সেটা তিন মাসের জন্য রাষ্ট্রপতি গঠন করবেন। বিএনপি তাই নির্বাচনের সময় আরেকটি নিরপেক্ষ সরকার দাবি করতেই পারে, বলেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদও মনে করেন, সংবিধানে যে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আছে, এই সরকারের চরিত্র তা নয়। ফলে বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকার দাবি করলে সেটা অন্যায় কিছু হবে না। এই সরকার নিরপেক্ষতা হারাচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ সরকারের কেউ কেউ সরকারে থেকেই রাজনৈতিক দল গঠনের কাজ করছে।  তথ্যসুত্র, ডয়েচেভেলে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়