মহসিন কবির: আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। এর মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রয়েছেন। তবে ভারত সরকার সেখানে থাকা শেখ হাসিনার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। ফলে শেখ হাসিনা ইস্যুতে দুই মেরুতে রয়েছে বাংলাদেশ-ভারত।
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ পাসপোর্ট অফিসের বরাত দিয়ে আজাদ মজুমদার বলেন, গুম ও হত্যার সঙ্গে জড়িত ২২ জন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ৭৫ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে।
জোরপূর্বক গুমের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি আসামিদের গ্রেপ্তার করে হাজির করার নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (৭ জানুয়ারি) সকালে এই আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার এবং ট্রাইব্যুনালের সদস্য মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে নয়াদিল্লি। বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় বিচারের সম্মুখীন করতে তাঁকে দেশে প্রত্যর্পণ করার জন্য ভারতের কাছে বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তী সরকার অনুরোধ জানিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে তাঁর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর তথ্য পাওয়া গেল।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভারতীয় ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণ ভালোভাবে নেয়নি। বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত চারজনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা বলেন।
৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত সে দেশেই অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাঁকে দেশে ফেরানোর আহ্বান বাড়ছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে বাংলাদেশ চিঠি পাঠিয়েছে বলে গত ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় গুলি করে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ১৪টি মামলা দায়েরের তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় এসব মামলা হয়েছে। এসব মামলাসহ এ পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২৫৩টি মামলা দায়েরের তথ্য পাওয়া গেল। এর মধ্যে হত্যা মামলার সংখ্যা ২১৩টি। বাকি মামলাগুলোর অধিকাংশই হত্যাচেষ্টা ও অপহরণ মামলা।
আপনার মতামত লিখুন :