শিরোনাম
◈ সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডিসি নাজমুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ◈ এএইচএফ কাপ হ‌কি‌তে থাইল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনা‌লে বাংলাদেশ ◈ দোহায় বাংলাদেশের চার নারী ক্রীড়াবিদকে অ‌তি‌থি‌দের স‌ঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন ড. ইউনূস ◈ সমালোচনার মুখে ডিএনসিসি প্রশাসকের উপদেষ্টা পদ ছাড়লেন এস্তোনীয় নাগরিক ড. আমিনুল ইসলাম ◈ গুলিস্তানে অবৈধ হকার ও যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান  ◈ সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু বিভেদ ভুলে একতার আহ্বান তারেক রহমানের ◈ প্রধানমন্ত্রীর তিনটি পদে একযোগে থাকার বিধান বহাল রাখার পক্ষে বিএনপি ◈ ১০ অঞ্চলে রাত ১টার মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস ◈ ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সোনার ভরিতে বাড়লো ৫৩৪২ টাকা ◈ পর্যটকদের ওপর গুলি, কাশ্মীরে নিহত অন্তত ২৪

প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৮:১৩ রাত
আপডেট : ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কার চায় সবাই, নির্বাচন অগ্রাধিকার

রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কার চায় সবাই, নির্বাচন অগ্রাধিকার

মহসিন কবির: রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে রাজনৈতিক ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সংলাপ হয়েছে। রাজনৈতিক নেতা বলছেন, সরকারের প্রধান কাজ হচ্ছে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা। রাজনৈতিক দলগুলো থেকে ক্রমে এ দাবি জাড়ালো হচ্ছে।

সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে এ নিয়ে অন্তর্র্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব বাড়ছে। দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি এবং এর মিত্র দল ও জোটগুলোর বেশির ভাগই প্রয়োজনীয় সংস্কার সেরে দ্রুত নির্বাচন চাইছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা এই বছরেই নির্বাচন চান। তবে ছাত্র নেতৃত্ব সার্বিক সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের কথা বলছেন। সংস্কার, নির্বাচন ও ঐক্য নতুন বছরের রাজনীতিতে মূলত এই তিন বিষয়ের প্রাধান্য থাকবে। আর ঐক্য ধরে রাখাটা অন্তর্র্বর্তী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দু-একটি ঘটনায় বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর অবস্থানের বদল হয়েছে। যতই সরকারের জনপ্রিয়তা কমতে থাকবে; ততই সরকারের ওপর নির্বাচনি চাপ বাড়বে- এটাই স্বাভাবিক। সরকার এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করছে না। কোনো সম্ভাব্য তারিখ দিচ্ছে না। এটা বিএনপির জন্য একটু হলেও অস্বস্তির কারণ।

বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা এড. মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, আজকে এই সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার) সংস্কারের কথা বলছে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ছোট্ট বন্ধুরা, শিক্ষার্থীরাও সংস্কারের কথা বলছে। অথচ বিএনপি একমাত্র রাজনৈতিক দল যাদের পক্ষ থেকে দুই বছর আগে জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে সংস্কার কর্মসূচি দেয়া হয়েছিলো। আমরা সেই সংস্কারের জন্যই একত্রে, এক মিছিলে, এক কাতারে শামিল হতে চাই। যেখানে ইসলামপন্থী দলগুলো থাকবে। আবার অন্য ধর্মের মানুষরাও থাকবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার, সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে যারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তারাই সেখানে থাকবে। এখানে বিভাজন করার কোনো সুযোগ নেই।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত ধর্মের নামে ব্যবসা ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নাগরিক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন আগে নাকি সংস্কার আগে একথা যারা বলেন তাদেরকে বলবো, সংস্কার হচ্ছে একটা অন্তহীন প্রক্রিয়া। যতদিন পৃথিবী থাকবে, এদেশ থাকবে ততদিন সংস্কার চলমান থাকবে। কিন্তু দীর্ঘ ১৭-১৮ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের যে প্রাণের আকাঙ্ক্ষা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে একটি ভোট দেয়া তা পূরণ করতে আপত্তি কোথায়?
আলাল বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে যদি একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তাদের কাছে যে শক্তি, সাহস ও দক্ষতা থাকবে তা দিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। যা এ সরকারের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা আপনাদেরকে সম্মান করি। আমরা আপনাদের অবদানকে স্বীকার করি। একইসঙ্গে বলি যারা অভিজ্ঞ, যারা দেশ পরিচালনা করেছে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ ও সহায়তা নেন। ধর্ম নিয়ে হানাহানি, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি, এরচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে যার যার ধর্ম সুন্দরভাবে এবং স্বাধীনভাবে পালন করা। দেশের মূল সমস্যা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের দিকে মনযোগ দেয়া। আমরা আশা করি সেই প্রয়োজনের কেন্দ্রবিন্দুতে বিএনপি আপনাদের সঙ্গে সবসময় থাকবে।

সংস্কার কমিশনগুলোর কর্মকাণ্ডে নির্বাচনের সময় পিছিয়ে যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, কমিশন সংবিধান পুনর্লিখন করবে না, বরং সংবিধান সংস্কারে অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে কিছু সুপারিশ করবে। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।  

ড. আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের কমিশনকে দুটি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের বিষয়টি আমাদের কমিশনের অংশ নয়। এ জন্য আলাদা কমিশন রয়েছে, সেটা তারা দেখবে। সংবিধানে যতটুকু সংশ্লিষ্ট, সেটুকু নিয়ে আমরা কথা বলব।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেছেন, যে একটা অভূতপূর্ব জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল, তাতে ফাটলের পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে নির্বাচনের সময় নিয়ে সন্দেহ। একটি দল গঠনের সুযোগ করে দিতে সংস্কারের নামে সরকার নির্বাচন প্রলম্বিত করতে পারে—এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছে। এ কারণেই সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে।

জামায়াতে ইসলামী আগের অবস্থান থেকে সরে এসে এখন প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা বলছে। তবে ইসলামী আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল নির্বাচনের আগে পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কথা বলে আসছে। সংস্কার নাকি নির্বাচন- এ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও তাদের সবাই দ্রুত একটি রোডম্যাপ চাইছে।

তরুণদের নতুন দল গঠনের উদ্যোগে আপত্তি করার সুযোগ নেই বলে বিএনপি ও অন্যান্য দল বলছে। কিন্তু তাদের মধ্যে এ নিয়ে নানা সন্দেহ রয়েছে। কারণ, ছাত্র নেতৃত্বের তিনজন অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। সে প্রেক্ষাপটে সরকারের একটা অংশের সহায়তায় ও রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো ‘কিংস পার্টি’ গঠন করা হচ্ছে কি না, এ প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছে।

সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে জামায়াত এখন দ্বৈত ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে বিএনপি ও এর মিত্রদের মধ্যে। তবে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন। দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ গণমাধ্যমকে বলেচেন, তাঁরা দ্বৈত ভূমিকায় নেই। তাঁরা অন্যান্য দলের মতো প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন চাইছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়