শিরোনাম
◈ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন : অধ্যাপক আলী রীয়াজ  ◈ হাসিনার সম্মানসূচক ডিগ্রি বাতিল করবে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ◈ ফের সংঘর্ষে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পোড়ার তথ্যটি সঠিক নয়: অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ◈ পারভেজ হত্যায় আলোচিত সেই দুই ছাত্রী সাময়িক বহিষ্কার ◈ মানুষের জীবন বিপন্ন করে দাবি আদায়ের শিক্ষা কে দিয়েছে ডাক্তারদের: সেনাবাহিনীর মেজর মেজবাহ উদ্দিন (ভিডিও) ◈ বিচার বিভাগসহ চার ইস্যুতে বিএনপি-জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের তৃতীয় দফা বৈঠক ◈ বিরলে কৃষক ভবেশের মৃত্যুর ৪ দিন পর থানায় হত্যা মামলা ◈ ফ্লোরিডায় উড্ডয়নের আগেই প্লেনে আগুন, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ২৮২ যাত্রী (ভিডিও) ◈ পরীক্ষাকেন্দ্রে হট্টগোল, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ১২ শিক্ষককে অব্যাহতি!

প্রকাশিত : ০৩ জানুয়ারী, ২০২৫, ১০:৩৭ দুপুর
আপডেট : ০৩ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

১৫ দিনের পুঁজি দিয়ে রাস্তায় বেশি দিন হাঁটা যায় না: গয়েশ্বর

১৫ দিনের পুঁজি দিয়ে রাস্তায় বেশি দিন হাঁটা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, আমরা ছাত্রদের অভিনন্দন জানাই। তবে ১৫ দিনের পুঁজি দিয়ে রাস্তায় বেশিদিন হাঁটা যায় না। ১৬ বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি। প্রত্যেকটা রক্তের মূল্য আছে- যে সর্বশেষ রক্ত দিয়েছে তারও আছে, যে সবার আগে দিয়েছে তারও আছে।গতকাল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি’র উদ্যোগে কর্মিসভা ও সদস্য ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি’র সভাপতি এডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী।গত ১৬ বছর যাবত বিএনপি আন্দোলন করছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ছাত্রদের কোটাবিরোধী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮ দফার মধ্যে সরকার পতনের দাবি ছিল না। তারা যখন এই আন্দোলনে নামছে আমরা পরদিন তাতে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছি, আমি একজন সাক্ষী। ছাত্ররা আন্দোলনে নামার পরপরই আমি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে একটি মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠালাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি আমার মোবাইলে কল করলেন।

বললেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে সবাইকে ডেকে বসি। বিকাল চারটার দিকে কথা, ছয়টায় জরুরি দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকলেন তিনি। সেই বৈঠক থেকে ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানানো হলো এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সক্রিয় হয়ে উঠলেন। টেলিফোনে তিনি সবার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করলেন। আমাকে বললেন, শুধু নৈতিক সমর্থন যথেষ্ট না, সবাইকে সক্রিয় করতে হবে। আমি বললাম অবশ্যই সক্রিয় করতে হবে। তবে, দলীয় ব্যানার ছাড়া আমরা সবাই এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করবো। আমাদের ছাত্র-যুবক নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে পড়লো। হাসিনা কিন্তু বার বার বলছে এটা বিএনপি’র ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, এরপর আমরা সর্বাত্মক সমর্থন জানালাম। আমরা বিএনপি’র পোশাক ছেড়ে হয়ে গেলাম ছাত্র-জনতা। এই আন্দোলনে শুধুমাত্র ছাত্রের বাবা-ই নামেনি, দেশের সব মানুষ নেমেছিল। এদেরকে কে নামিয়েছিল, এই বিএনপি-ই নামিয়েছিল। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ছাত্র সামনে ঘোরাঘুরি করে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু ছাত্র সেদিন মারা গেছে। আমাদের ছাত্ররা গত ১৬ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ করতে পারিনি। কিন্তু আপনাদের আওয়ামী লীগ চিনতে পারলো না কেন? তাহলে নিশ্চয়ই ডাল মে কুচ কালা হে। তিনি আরও বলেন, ছাত্ররা তিনটি আন্দোলন করেছে। যে আন্দোলনের মাধ্যমে ভিপি নুর নেতা হয়েছেন। দ্বিতীয়ত বাড্ডায় দুই বাসের চাপায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। সেবার শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছিল।  সর্বশেষ জুলাই মাসে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেন, সেখানে আমরা সমর্থন দিলাম। কিন্তু আমাদের ১৬ বছরের আন্দোলনে আপনারা কবে নেমেছেন?  সেই কারণে জনগণের কাছে মুখ্য হচ্ছে গণতন্ত্র, নির্বাচন, নির্বাচিত প্রতিনিধি ও নির্বাচিত সরকার।মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের ছবক শুনতে জাতি রাজি নয় বলে মন্তব্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও ’৭৫-এর ৭ই নভেম্বরের পরাজিত শক্তি মিলে যারা জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন, তাদের রুখে দেয়ার ক্ষমতা এদেশের জনগণ রাখে। তাদের ছবক শুনতে জাতি রাজি নয়।  

রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরাও সংস্কার চাই, এজন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। কিন্তু এই যে তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি) যেটা দিতে চায়, সেটা আমাদের না দিলেও আমরা তা কোনো না কোনোভাবে পেয়েছি। সেখানে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এদের ঘাড়ে চাপছে ’৭১-এ যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তারা। আকারে ইঙ্গিতে তারা বলতে চায় ৫ই আগস্ট (২০২৪ সাল) দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাহলে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গরু-ছাগল রক্ত দিয়েছে, নাকি মানুষ রক্ত দিয়েছে? ৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তাদের ছবক শুনতে জাতি রাজি না। 

তিনি বলেন, আমরা অনেককেই ক্ষমা করতে পারি, ভুলে যেতে পারি। ক্ষমা মহত্ত্বের লক্ষণ। কিন্তু ক্ষমা করার পর একই কাজ যদি আবার করেন, তাহলে ভুলে গেলে চলবে না। মুক্তিযুদ্ধ ও ৭ই নভেম্বরের পরাজিত শক্তি মিলে যারা জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন, তাদের রুখে দেয়ার ক্ষমতা এদেশের জনগণ রাখে। সেই নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য নেতৃত্বও আছে। জিয়াউর রহমান হারিয়ে গেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই জায়গা থেকে শুরু করেছেন। সেখান থেকেও নেতৃত্ব চলে এসেছেন তাদের যোগ্য উত্তরসূরি তারেক রহমান। যুক্তরাজ্য থেকে দল ও দেশবাসীকে সংগঠিত করে বিজয় নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু এর ফলাফল যতক্ষণ পর্যন্ত গোলায় না উঠে, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি সক্রিয় আছেন আমরাও সক্রিয় আছি। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সবচেয়ে সৌভাগ্যের বিষয় আমি মুক্তিযুদ্ধ করতে পেরেছি। বাংলাদেশে স্বাধীনতার যুদ্ধ তো বার বার হবে না, আমরা সেই যুদ্ধটা করতে পেরেছি। সেই ডাকটাই দিয়েছিল রাজনীতির বাইরের একজন মেজর তার নাম জিয়াউর রহমান। যার নাম মানুষের অন্তরে অন্তরে। যে আশা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, সেই আশা পূরণ হয়নি বলেই তো আওয়ামী লীগের এমন পরিণতি হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যদিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই কিন্তু সরকার গঠন করা হয়েছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোস্তাক।   

তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর  সিপাহী-জনতার সংগঠিত হওয়ার মধ্যদিয়ে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেন তিনি। ৯০ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের সিপাহী-জনতার বিপ্লব এবং ৯০তে গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারের পতন- এসব কি ইতিহাসের অংশ নয়? এসব কি ইতিহাসের পাতা থেকে বের করে দেবেন? স্বাধীনতাযুদ্ধ থেকে প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্র-জনতা ছিল। তারা কি রাষ্ট্রক্ষমতায় বসেছিল? সূত্র : মানবজমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়