আত্মগোপন থেকে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ. আরাফাত নিউইয়র্ক বাংলা লাইফের এক টকশোতে বলেন, শেখ হাসিনা তার শেষ জীবন টুঙ্গিপাড়া কাটাতে চেয়েছিলেন।
৫ই আগস্টের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘৫ তারিখে যখন উত্তরার দিক থেকে ছেড়ে দেওয়া হলো এবং তারপরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এসে বলা হলো যে মব চলে এসেছে, তাকে যদি এখন গণভবন থেকে না সরানো হয় তাহলে এসএসএফ এবং পিজিআর-এর যে সাংবিধানিক রুলস তাদেরকে গুলি ছুড়তে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সেখান থেকে সরানো না হলে আবার আরো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে। তারা একটা হিসেব করে বললো ৪৫ মিনিটের মতো সময় পাওয়া যাবে।”
তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি যদি বঙ্গভবন যেতে না পারেন তাহলে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় চলে যাবেন।
তিনি আরো বলেন, “ভারতে চলে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিলো না। এটা প্রশ্নই আসে না। আমি যতটুকু জেনেছি পরবর্তীতে উনাকে অনেকটা জোরপূর্বক হেলিকপ্টারে উঠানো হয়েছিলো, দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার একটা বিষয় ছিলো। কিন্তু তিনি শেষপর্যন্ত টুঙ্গিপাড়ায় যেতে চেয়েছিলেন, দেশ ছাড়তে চাননি।”
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যেটা বলা হচ্ছে তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন, পালিয়ে গেছেন, যে শব্দগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে এসব বের হবে। উনাকে জোর করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিলো।”
তিনি আরো গুলি বা হতাহত করে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আরাফাত বলেন, “এটি একেবারেই মিথ্যা কথা। কারণ তিনি ৪ তারিখে বিকালের পর থেকে আমাদের বলেছিলেন, তিনি আর ক্ষমতায় থাকতে চান না। তিনি এভাবেই বলেছিলেন, আমি দেশ চালাতে পারছি না, এত সমস্যা হচ্ছে, ওরা দেশ চালাক, আমি টুঙ্গিপাড়ায় চলে যাবো। তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দিতে ৪ তারিখে বেশ কয়েকবার বলেছিলেন। কাজেই আমরা যারা প্রত্যক্ষদর্শী, আমরা জানি এসব একবারেই মিথ্যা কথা।
সজীব ওয়াজেদ জয় ফোন করে তাকে যেটা বোঝানোর ব্যাপার ছিলো সেটি হচ্ছে তিনি দেশ ছাড়তে চাচ্ছিলেন না , ক্ষমতা তো আগেই তিনি ছাড়তে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি পদত্যাগপত্র লিখে সাইন করবেন, রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করবেন এবং পরবর্তী সরকার যে আসবে, যেভাবে আসবে তিনি দেখাশোনা করবেন। কিন্তু তারা যখন তাকে জোর করে গণভবন থেকে বের করে দেশের বাইরে পাঠাতে চাচ্ছিলো সেইসময় তিনি জিদ করেছিলেন তিনি দেশের বাইরে যাবেন না। তখন শেখ রেহানাকে দিয়ে বোঝানোর যে ব্যাপার বা জয়কে দিয়ে ফোন করানো হয়েছিলো। কিন্তু আগের দিনও তিনি বারবার বলেছিলেন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন না, তিনি টুঙ্গিপাড়ায় চলে যাবেন।”
এ বিষয়ে আরো বলেন, “বরং আমরা দুই-একজন বলেছিলাম যে আপনি টুঙ্গিপাড়ায় চলে যাবেন, ক্ষমতায় থাকবেন না, ওরা তো আসলে আপনাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। সামনে আছে একটি আন্দোলন আর পেছন দিকে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গি এবং এসব সন্ত্রাসীদের নিয়ে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিলো। অনেক জটিল একটা পরিস্থিতি ছিলো ৪ এবং ৫ তারিখে। এসব সত্য ধীরে ধীরে বের হবে।” সূত্র : জনকন্ঠ, এস এ টিভি
আপনার মতামত লিখুন :