ভারতের উদ্দেশ্যে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, প্রতিবেশীদের প্রতি সম্মান রেখে বলতে চাই আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই। আমাদেরকে আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন। আপনাদের পাকঘরে কি রান্না করা হচ্ছে আমরা জিজ্ঞেস করি না। আমাদের পাক ঘরে উঁকি মেরে তাকানোর চেষ্টা করবেন না।
আমাদেরকে আপনারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলেন ভালো। আপনাদের নিজের চেহারা আয়নাতে একটু দেখে নেন। আপনারা যাদেরকে সংখ্যালঘু বলেন- তাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন। আমাদেরকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সবক দিতে হবে না। যুগ যুগ ধরে এদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।
এদেশের মানুষ তার প্রমাণ দিয়েছে। গতকাল দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, চোর- ডাকাতের লিডার মুখ ভরা বুলি দিয়েছিলেন, আমি অমুকের মেয়ে, আমি দেশ ছেড়ে পালাবো না। এই ভোটচোর, গণতন্ত্র হরণকারী, ফ্যাসিস্টরা পালিয়ে গেছে। এরা রাজনীতিবিদ নয়, এরা দুর্বৃত্ত। এদের প্রত্যেকটি অপকর্মের বিচার হবে।
দেশের মালিকরা দেশে আছে আর ভাড়াটিয়ারা পালিয়ে গেছে। শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৫ বছর একটি ফ্যাসিস্ট সরকার জাতির ঘাড়ে চেপে বসে জাতির সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। দেশকে কার্যত কবরস্থানে পরিণত করেছিল। সাড়ে ১৫ বছর তারা খুন ও গুমের রাজ্য কায়েম করেছিল। জামায়াতকে প্রথম টার্গেটে পরিণত করা হয়েছিল মন্তব্য করে শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের যারা ছিলেন দেশপ্রেমিক। যাদের সততায় দেশবাসী মুগ্ধ ছিল। সে সমস্ত নেতৃবৃন্দকে ঠাণ্ডা মাথায় মিথ্যা অভিযোগ এনে সাজানো কোর্ট এবং পাতানো সাক্ষী দিয়ে আর ব্রাসেলস থেকে রায় এনে খুন করা হলো। কাউকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হলো।
আমাদের শীর্ষ ১১ নেতাকে খুন করলো। তারা কাউকে গুম খুন থেকে ছাড় দিলো না। এরপর এক এক করে অন্যান্য দল আলেম-ওলামা এমনকি সাংবাদিকরাও রেহাই পেলেন না। তিনি ২৪-এর ২য় স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণ করে বলেন, তারা বাংলা মায়ের গর্বিত সন্তান। যাদের কারণে আমরা ওই জালিমদের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলায় কোনো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নেই। কেন- মৌলভীবাজার কী অপরাধ করেছে। তিনি বলেন- বাংলাদেশের মৌলভীবাজারে সবেচয়ে বেশি চা বাগান। রাষ্ট্রীয় যথাযথ পর্যবেক্ষণ না থাকায় চা শিল্প ধ্বংস হওয়ার পথে। মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মো. ইয়ামির আলী ও সহকারী সেক্রেটারি হারুনুর রশিদের যৌথ সঞ্চলনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম ও সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবিুবুর রহমান।
বক্তব্য রাখেন- মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র ফয়জুল কবির ময়ূন, হবিগঞ্জ জেলা আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলার সাবেক আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব ও মো. আবদুল মান্নান, হেফাজতে ইসলামের জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবদুস সবুর, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি শরীফ মাহমুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমদ খান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আমিনুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের মৌলভীবাজার শহর শাখার সভাপতি তারেক আজিজ, ছাত্রশিবিরের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি হাফেজ আলম হোসাইন, বড়লেখা উপজেলার সাবেক আমীর মো. কমর উদ্দিন, মৌলভীবাজার পৌর শাখার আমীর ও জেলা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ মাওলানা তাজুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলা আমীর মো. ফখরুল ইসলাম, বড়লেখা উপজেলার আমীর মো. এমদাদুল ইসলাম, রাজনগর উপজেলার আমীর আবু রাইয়ান শাহীন, কুলাউড়া উপজেলার আমীর অধ্যাপক আব্দুল মুনতাজিম, জুড়ী উপজেলার আমীর আব্দুল হাই হেলাল, শ্রীমঙ্গল উপজেলার আমীর মাওলানা ইসমাঈল হোসেন, কমলগঞ্জ উপজেলা আমীর মো. মাসুক মিয়া প্রমুখ। উৎস: মানবজমিন।
আপনার মতামত লিখুন :