শিরোনাম
◈ ভারতের সাম্ভালে মুসলিম সংসদ সদস্যকে বিদ্যুৎ চুরির জন্যে ২ কোটি টাকা জরিমানা ◈ কেউ যেন জাতির মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে না পারে: মির্জা ফখরুল (ভিডিও) ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অসন্তোষ, ২০২৫ সালেই নির্বাচন চায় বিএনপি নেতারা ◈ পুলিশ ও জনগণ একে অপরের পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে কাজ করবে: সিটিটিসি প্রধান  ◈ বড়দিন উপলক্ষে নৌভ্রমণ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ৩৮ জনের প্রাণহানি ◈ বিএনপি অফিসে আ.লীগের হামলা, আহত ১০ ◈ ২৫ ক্যাডারের নতুন সংগঠন ◈ চলতি মাসের ২১ দিনে এক টাকাও রেমিট্যান্স আসেনি যে ১০ ব্যাংকে ◈ আত্মসমর্পন করে আদালতে শেখ হাসিনার নামে আওয়ামী নেতাদের শ্লোগান (ভিডিও) ◈ ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে দেশে ফিরলো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা

প্রকাশিত : ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৭:৩৬ বিকাল
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : মনিরুল ইসলাম

নেতাদের কথাবার্তায়-চলাফেরায় নির্ভর করছেন বিএনপির আগামীর ভবিষ্যৎ: তারেক রহমান

মনিরুল ইসলাম  : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সামনের যে নির্বাচন হবে, এটি এতো সহজ না। এই নির্বাচন বাংলাদেশের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে অনেক কঠিন হতে যাচ্ছে। মানুষের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। কেউ যদি কোনো ভুল করে থাকে তাহলে একজন নেতা হিসেবে তাকে সঠিক পথে নিয়ে আসা আপনার দায়িত্ব।  গতকাল সোমবার দিনব্যাপী খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপি প্রদত্ত ৩১ দফা বিষয়ক খুলনা বিভাগীয় কর্মশালায় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় এবং খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিএনপির সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমরা ক্ষমতায় যাইনি, যাব কিনা জানি না। তখনই ক্ষমতায় যেতে পারব, যখন জনগণের সমর্থন পাব। নেতাকর্মীদের সকল কর্মকান্ড হচ্ছে বিএনপির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামী দিনে এমন হতে হবে যাতে জনগণ আপনার সাথে থাকে, বিএনপির সাথে থাকে। দলকে রক্ষা করা, সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সকলের। আপনাকে আপনার দায়িত্ব পালন করতে হবে। জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন। বাংলাদেশের জনগণের আস্থা বিএনপির ওপর আছে। এটি ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার এবং আমাদের সকলের।  

রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক ময়মনসিংহ বিএনপির বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তারেক রহমান আরও বলেন, বিগত ৫ আগষ্টের পর সমাজে অনেক মানুষ সংস্কার নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু বিগত ৫ মাস আগে এনিয়ে কেউ কথা বলেনি। কিন্তু বিএনপি বিগত দুই বছর আগে রাষ্ট্র মেরামতে সংস্কার নিয়ে কথা বলেছে, তখন কেউ জানত না স্বৈরাচার কখন বিদায় হবে। বিএনপি দেশের কথা চিন্তা করে সংস্কার প্রস্তাবে তা প্রমাণ হয়েছে। গত ২ থেকে ৩ মাস ধরে কিছু কিছু মানুষ সংস্কার নিয়ে যা যা কথা বলছেন, তা বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে আছে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ কারো নেই। এটি বিএনপির একক প্রস্তাব নয়, সমমণা বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করে বিএনপির ২৭ দফা থেকে ৩১ দফা করা হয়েছে। এই ৩১ দফা দেশের সকল মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে হবে।

বিএনপি বিশ্বাস করে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। মনে রাখতে হবে- বিএনপি ক্ষমতায় নেই, বিএনপি এখনো ক্ষমতায় যায়নি। ক্ষমতা যেতে পারব কী-না তা জনগণের সমর্থনের ওপর নির্ভর করছে। বিএনপির প্রতি দেশেবাসির আস্থা আছে জানিয়ে তারেক রহমান আরও বলেন, মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে। আস্থা ধরে রাখা অনেক কঠিন কাজ। এই আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব বিএনপির নেতাকর্মীদের। দিন যত যাচ্ছে তত পরিস্কার হচ্ছে, সামনের নির্বাচন সহজ হবে না। হতে পারে আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ দুর্বল।

তারপরও আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য অনেক কঠিন। এখন মানুষ অনেক সচেতন। মানুষ সব জানে। গত ২/৪ মাসে কেউ যদি কোন ভুল করে থাকে, সবার দায়িত্ব তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা। যেকোন মূল্যে জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। তাই আজকের এই ৩১ দফার আলোচনা এখানেই সীমাবদ্ধ না রেখে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। আগামীদিনে বিএনপির সরকার গঠন করলে কী করবে, তা রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফায় আলোচনা করা হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিসহ দেশের প্রতিটি সেক্টরকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে কাজ করবে, বলেও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

নেতাদের কথাবার্তা ও চলাফেরার ওপর বিএনপির আগামীর ভবিষত নির্ভর করছে, বলে মন্তব্য করে তারেক রহমানবলেন, নেতাকর্মীদের এমন কিছু করতে হবে যাতে জনগণের সমর্থন থাকে। দল রক্ষা করতে এবং দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সবার। তাই জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন। 

এর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে ফ্যামিলি কার্ড এবং কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড তৈরি করব। ফ্যামিলি কার্ডটি হবে পরিবারের মা বা স্ত্রীর নামে। এতে তার পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা বাড়বে। একই সঙ্গে কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড করা হবে। যা প্রতি মৌসুমে কৃষকের সার-বীজ বা আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করবে।  

তারেক রহমান বলেন, নারীর যোগ্যতা ও মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করা উচিৎ। এটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করা উচিত। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে নারীদের জন্য শিক্ষাব্যবস্থা ফ্রি করে দিয়েছিলেন। প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি ফ্যামিলি কার্ড তৈরি করব। প্রান্তিক মানুষকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মিনিমাম সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। এটি সব শ্রেণিপেশার মানুষ পাবে। ফ্যামিলি কার্ডটি পরিবারের মা বা স্ত্রীর নামে দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে তার মর্যাদা বাড়বে। আর যে অর্থ সাশ্রয় করবে সেই অর্থ সন্তানের স্বাস্থ্য ও লেখাপড়ায় ব্যয় করবে। এতে ভবিষ্যৎ সুন্দর একটি প্রজন্ম তৈরি হবে। সঞ্চিত অর্থ ৫ থেকে ১০ বছর পর তার অর্থনৈতিক শক্তি হবে। এতে পরিবারে তার আত্মমর্যাদা বাড়বে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সম্পদ দেশের প্রান্তিক মানুষের জন্য। বিশেষ কোনো ব্যক্তির জন্য নয়। দেশের সম্পদ কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেটি আমরা চেষ্টা করব। 

এর আগে এদিন সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ বিভাগের ৭টি ইউনিটের ৫১২ জন প্রশিক্ষনার্থী নেতৃবৃন্দের অংশ গ্রহনে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মো: নজরুল ইসলাম খান। এ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ঈসমাইল জবি উল্লাহ, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ডা: মাহাদী আমিন, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, সাবেক এমপি রেহানা আক্তার রানু, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবীবা। এ সময় কর্মশালাটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহগণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী।

এছাড়াও প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাবেক এমপি মনিরা সুলতানা মনি, মাহমুদুল হাসান রুবেল, ডা: মাহাবুবুর রহমান লিটন, লাইলী বেগম, ড. শামছুজ্জামান মেহেদী, আরিফা জেসমিন, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক জাকির হোসেন বাবলু, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ‍্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ‍‍্যাপক শেখ আমজাদ আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম.এ হান্নান খান, শামীম আজাদ, শাহ শিব্বির আহম্মেদ ভুলু, লিটন আকন্দ, কায়কোবাদ মামুনসহ ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এদিকে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আনিদ্য ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়ার সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ আলমগীর পাভেল, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ড, বিএনপির সহ ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলী প্রমুখ। কর্মশালায় খুলনা বিভাগের ১১টি ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়