মনিরুল ইসলাম : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশ রক্ষার ‘বিভাজন’ ছেড়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা জীবনের শেষ অংশে চলে আসছি আমরা… আমরা একেবারে জীবন সায়াহ্নে। সায়াহ্নে এসে আপনাদের বলতে চাই, যদি আপনারা দেশকে রক্ষা করতে চান, আপনারা স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে চান, আপনাদের অধিকারকে রক্ষা করতে চান তাহলে আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হউন। বিভাজনের কাছে আপনারা কখনো মাথা নোয়াবেন না, অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াবেন না, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আমরা ডা. মিলন যে কারণে প্রাণ দিয়েছেন তাকে স্মরণ করে সেটাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে জন্য প্রাণ দিয়েছেন একটা স্বাধীন সার্বভৌ্ম বাংলাদেশ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে যে কারণে ৬ বছর ধরে তিলে তিলে ভুগেছেন কারাগারের অন্ধকারে।এটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, তারেক রহমান সাহেব আজকে দীর্ঘ বছর ধরে প্রবাসে নির্বাসিত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা সেই গণতন্ত্র, গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রকেই প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করি।
‘অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রতি অনুরোধ’
অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এই অন্তবর্তীকালীন সরকার কিন্তু কারো দয়া দান নয়। এদেশের ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে এই সরকার তৈরি করা হয়েছে।সুতরাং এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সেটাকে স্বীকার করে নিয়ে পুরোপুরিভাবে এদেশের জনগনের যে মূল লক্ষ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সেই লক্ষ্যে যাওয়াটাই তাদের জন্য সর্বোত্তম বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, আরেকটা কথা পরিস্কার করে বলতে চাই, যারা অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন তারা এমন কোনো কথা বলবেন না দয়া করে তা জনগনের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে।
বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন-ড্যাবের উদ্যোগে নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. শামসুল আলমের স্মরণে ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাষ্ট্র গঠনে চিকিৎসক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে চিকিৎসক নেতা ডা. মিলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। ডা.মিলনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয় এবং ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। সেই থেকে প্রতি বছর দেশের বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনীতিক দল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনটি শহীদ ডা. মিলন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
এদিকে, সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে ডা. শামসুল আলম স্মৃতি সৌধে নব্বইয়ের ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ নব্বইয়ের ডাকসু ভিপি আমান উল্লাহ আমানের পুস্পমাল্য অর্পন করেন। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর নেতৃত্বে চিকিৎসকরাও মিলনের স্মৃতি সৌধে পুস্পমাল্য অর্পন করে।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের মহাসচিব আব্দুস সালাম, সিনিয়র নেতা আবদুস সেলিম, মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, জহিরুল ইসলাম শাকিল, শহিদুর রহমান, শহীদুল আলম, সিরাজুল ইসলাম, মোস্তাক রহিম স্বপন, মেহেদী হাসান প্র্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
আপনার মতামত লিখুন :