বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ডক্টর শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে দুর্নীতির রোল মডেলে নিয়েছে, জামায়াতে ইসলামী একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপ দিতে চায়। এই লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চাঁদাবাজ গোষ্ঠী পালিয়ে গেছে। তবে নতুন বাংলাদেশে কেউ কেউ নতুনভাবে চাঁদাবাজি করছে। মিডিয়ার সুবাদে তাদের চাঁদাবাজির চরিত্র মাঝে-মাঝে ফুঁটে উঠে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে মেহেন্দিগঞ্জ ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়ে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে আওয়ামী লীগ দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে তারা ভারতের মদদে ২০০৯ সালে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতা দখলের পর আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করে। আওয়ামী লীগের সেই কারাগার ছাত্র-জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখে। ছাত্র-জনতার স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে ইসলামী রাষ্ট্রের বিকল্প নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রত্যেক নাগরিককে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রধান বক্তা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ইসলাম ব্যতিত শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় এটি বাংলাদেশের মানুষ এখন বুঝতে পেরেছে। সেজন্য মানুষ দলমত নির্বিশিষে চায় ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হোক। কিন্তু তারা চায় না, যারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, দুর্নীতি, জনগণের সম্পদ বিদেশে পাচার করে। কারণ ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে তারা এসব অপকর্ম চালাতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী জাতির সামনে প্রমান দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা শুধু মসজিদে ইমামতি করার ক্ষমতা রাখে না। তারা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতা ও যোগ্যতা রাখে। শহীদ নিজামী, মুজাহিদ, আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী সহ জামায়াতে ইসলামীর বহু নেতা এমপি হয়েছেন, মন্ত্রী হয়েছেন, চেয়ারম্যান হয়েছেন, মেয়র হয়েছেন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্ব দক্ষতা আর যোগ্যতার সাথে পালন করেছেন। একজন নেতা ২টাকা দুর্নীতি করেছে কেউ কখনো বলতে পারেনি এবং পারবে না। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা জনগণের খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে এবং রাখবে। জনগণের শাসক হয়নি এবং হবে না। আগামীতে জনগণ জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনা দায়িত্ব দিলে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র। তাই তিনি জনগণকে অতিতের মতই জামায়াতে ইসলামীর উপর বিশ্বাস ও আস্থা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
মেহেন্দিগঞ্জ ফোরামের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক মো. ছগির বিন সাঈদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বরিশাল জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার, উপদেষ্টা যথাক্রমে ব্যারিস্টার ইমরান হোসেন, অধ্যাপক রুহুল আমিন, আবুল হোসেন, প্রফেসর ড. ওমর ফারুক, ড. লায়ন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আবদুল বারেক, মাইন উদ্দিন, কাজীরহাট থানা আমীর মাওলানা আবুল হোসেন, বরিশাল জেলা শিবির সভাপতি আবদুল কাদের, মেহেন্দিগঞ্জ ফোরামের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান জুলফিকার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন :