শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:০৩ দুপুর
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি

মহসিন কবির : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ইস্যু নিয়ে দেশজুড়ে চলছে তোলপাড়।বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নভাবে মতামত দিয়েছেন রাজনীতিবিদরা। তবে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে গুঞ্জন।    
 
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে মধ্যম সারির নেতারা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তাদের বক্তব্যে কখনো বলছেন এই রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতায় রেখে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্পিরিটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাকে অপসারণ করতেই হবে। 

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইতালির বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আমিনুর রহমান সালামের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে কোনো সময় পদত্যাগ করবেন। তার পদত্যাগ করা উচিত। তার রাষ্ট্রপতি হওয়ার যোগ্যতা নেই। তিনি আপাদমস্তক একটা দুর্নীতিবাজ লোক।

অপর এক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, যে লোকটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানকে অপমানিত করেছেন।স্বৈরাচারীদের, ষড়যন্ত্রকারীদের সাহস জুগিয়েছে। এই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসাকে বাধাগ্রস্ত করেছেন। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত তিনি একটা দুর্নীতিবাজ। 
অনতিবিলম্বে এই লোকটিকে বিদায় করতে হবে। সেই লোকটা যদি সেখানে বসে থাকে তাহলে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাকে বিদায় করা জরুরি। যদি তাকে বিদায় না করে তাহলে কীভাবে বিদায় করতে হয় তা আমাদের জানা আছে। 

এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাউদ্দিন আহমেদ প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক অনির্ধারিত বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দেখছি যে পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তাদের দোসররা নানা কৌশলে-নানাভাবে দেশে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট তৈরির চেষ্টা করছে। দীর্ঘদিন লড়াই করে, বহু সঙ্গীর রক্তের বিনিময়ে আমরা যে পরিবর্তন অর্জন করেছি।

তিনি বলেন, এই পরিবর্তন সুরক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় করা দরকার। কেউ যাতে কোনোভাবে দেশে নতুন করে সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট তৈরি করতে না পারে, এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি এসব কথা বলেন।   

এদিকে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাষ্ট্রপতির পদে শূন্যতা এই মুহূর্তে রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টি করবে, সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হবে। যেটা জাতির কাম্য নয়। 

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চান কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রপতির পদটা একটা সাংবিধানিক পদ, একটা প্রতিষ্ঠান, সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। এই পদে পদত্যাগে হঠাৎ করে শূন্যতা সৃষ্টি হবে এবং সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে, রাষ্ট্রীয় সংকটের সৃষ্টি হবে। 

রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণের পথটা বিলম্বিত হয় বা বাধাগ্রস্ত হয়, সেটা জাতির কাম্য না। বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় এসব নেতৃবৃন্দের পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি কথা চাউর হচ্ছে যে, তাহলে কি বিএনপি রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না ?

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়