আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। দলের নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, স্বচ্ছ রাজনীতি করার প্রতিশ্রুতিতে আওয়ামী লীগ সুযোগ পেতে পারে। তবে এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করে আরেক নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার অনুমতি দিতে পারে শুধু শহীদ পরিবার।
তবে এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, সবার জন্য নির্বাচনের পরিবেশ উন্মুক্ত রাখলে বিতর্কমুক্ত থাকবে অন্তর্ভুক্ত সরকার।
গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের তকমা পাওয়া দলটিকে নিষিদ্ধ করার জোর দাবি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। গতকাল শনিবার (১৯ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়টি উত্থাপন করেছেন একসময়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ।
কিন্তু কেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এমন অনাস্থা? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই দলটিকে শেখ হাসিনা সিস্টেমেটিকলি রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের আমলে সবচেয়ে অত্যাচারের শিকার হয় বিএনপি। তবুও আমীর খসরু বলছেন উদারপন্থি দল হিসেবে সবার রাজনীতি করার অধিকার চান তারা। তিনি বলেন, সকলের রাজনীতি করার অধিকার আছে। কেউ যদি স্বচ্ছ রাজনীতি করতে চায়, আমার মনে হয় দেশের মানুষ স্বাগত জানাবে।
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গণহত্যার দায়ে অ্যাডলফ হিটলারের দলের নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে সালাউদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্তের প্রশ্নে বিষয়টি ছেড়ে দেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ইচ্ছার ওপর।
তিনি বলেন, যারা দেশের জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে নির্বিচারে, তাদের কি এতো তাড়াতাড়ি বাংলাদেশের মানুষ রাজনীতি অঙ্গনে প্রবেশাধিকার দিবে? তারা কি বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার মতো অবস্থায় বর্তমানে আছে? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জার্মানিতে হিটলারের দল ২০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ছিল যদি আমি ভুল না বলে থাকি। কেন? তাদের দেশের অভ্যন্তরে গণহত্যা চালানোর জন্য। অনেকটা কি বাংলাদেশের গণহত্যার সঙ্গে সদৃশতা পাওয়া যায় না?
তবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি পেন্ডুলামের মতো ঝুলে থাকলে নির্বাচনের ভবিষ্যৎ কি? অংশগ্রহণমূলক হবে নাকি সেই একদফা ভোটের পুনরাবৃত্তি?
এ প্রসঙ্গে রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ বলেন, তারা আসলো বা আসলো না, সেটা বড় বিষয় না। কিন্তু আপনি তাকে বাধা দেবেন না বা দিচ্ছেন না, এরপর যদি তারা নির্বাচনে না আসে এই দায়-দায়িত্ব তো কেউ নেবে না। এটার ওপর তো নির্বাচনের বৈধতা, অবৈধতা নির্ভর করবে না।
এছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিচারের মাধ্যমে আগামী দিনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ। উৎস: নিউজ24
আপনার মতামত লিখুন :