শিরোনাম
◈ ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’র নাম পরিবর্তন ◈ হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক ◈ গত ১৫ বছর বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে তাঁবেদারি করেছে : প্রেস সচিব  ◈ উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ ভাতা বৃদ্ধির দাবীতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেছেন চিকিৎসকরা ◈ রাজধানীর যেসব সড়ক কাল বন্ধ থাকবে, বিকল্প পথে চলার পরামর্শ ◈ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে কৌশলের কথা জানালেন ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি নিয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও) ◈ রাখাইন রাজ্যের মিলিটারি সদরদপ্তর আরাকান আর্মির দখলে, সতর্ক উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত ◈ লন্ডন-যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ কোটি টাকা পাচার : হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

প্রকাশিত : ১০ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:১৯ রাত
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কুষ্টিয়ায় হত্যার চেষ্টার দায়ে শেখ হাসিনাসহ ৪৭ জনের নামে মাহমুদুর রহমানের মামলা

ফয়সাল চৌধুরী, কুষ্টিয়া : ৬ বছর আগে কুষ্টিয়ায় আদালত প্রাঙ্গণে হামলার শিকার হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। 

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পুলিশের সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সাবেক পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীসহ মোট ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। 

মামলার আসামিরা হলেন:-
১. শেখ হাসিনা (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) , ২. আসাদুজ্জামান খান কামাল (তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), ৩. মাহবুবুল আলম হানিফ (তৎকালীন কুষ্টিয়া সদর- ৩ আসনের সংসদ সদস্য) , ৪. হাসানুল হক ইনু ( তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী ও কুষ্টিয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য), ৫. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ( পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক-আইজিপি), ৬. এস এম মেহেদী হাসান ( পুলিশের তৎকালীন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার), ৭. সদর উদ্দিন খান ( কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি), ৮. আতাউর রহমান আতা ( শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি) , ৯. নাসির উদ্দিন ( পুলিশের তৎকালীন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা),  ১০. মনিরুজ্জামান ( কুষ্টিয়া আদালতের তৎকালীন কোট ইন্সপেক্টর), ১১. মো. ইয়াসিন আরাফাত তুষার ( কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি) , ১২. সাদ আহমেদ ( কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক), ১৩. রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব ( তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি'র ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি), ১৪. সজীব শেখ ওরফে এসকে সজিব, ১৫. রেদওয়ান রনি, ১৬.  মো. হাসিবুল ইসলাম সুইট, ১৭. লাম, ১৮. শশী, ১৯. রাকিব, ২০.   জয়নাল আবেদীন, ২১. রবিউল ইসলাম, ২২. রেজাউল ইসলাম স্বপন, ২৩. আবু তৈয়ব বাদশা, ২৪. মীর অভি, ২৫. শিমুল, ২৬. মাহমুদ হাসান ( কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি'র যুগ্ম সম্পাদক ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক), ২৭. ডাবলু মোল্লা ওরফে জীবন মাহমুদ ডাবলু, ২৮. হাসিব কুরাইশী, ২৯.  অভি, ৩০. ফেরদৌস খন্দকার, ৩১. সোহাগ, ৩২. মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ৩৩. রাসেল, ৩৪. আতিকুর রহমান অনেক, ৩৫. শামীম রুমি, ৩৬. সবুজ, ৩৭. ফিরোজ কায়সার ( কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি'র সাংগঠনিক সম্পাদক), ৩৮. এডভোকেট ইমরান হোসেন দোলন, ৩৯. এডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী (সাবেক পিপি), ৪০. মানব চাকি, ৪১. ইমরান পারভেজ রাসেল, ৪২. রাকিব আহমেদ, ৪৩. সজীব আহমেদ, ৪৪. মোঃ বাঁধন, ৪৫. মাখন, ৪৬. সুজন, ৪৭. মোঃ অন্তর। ছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১৫-২০ জনকে।

মামলার করার সময় সেখানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদাল হোসেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ ছিলেন।

মামলার নথির বরাতে কুষ্টিয়া সদর মডেল থানার ওসি বলেন, বাদী মাহমুদুর রহমান ২০১৮ সালের ২২ জুলাইয়ে একটি মানহানি মামলার আসামি হিসেবে কুষ্টিয়া আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। তখন এজাহার নামীয় আসামিদের নির্দেশে তাকে দিনভর অবরুদ্ধ করে রেখে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আদালত চত্বরেই তার ওপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।

তাকে মারধর, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে গুরুতর আহত করে।

এ ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে দেওয়া মোট ৪৭ জনের নামে এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে জানিয়ে ওসি মাহফুজুল বলেন, “মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়েছে কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই আবু তাহেরকে।”

মাহমুদুর রহমান দুপুরে থানায় এজাহার জমা দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তার ওপর হামলার চিত্র তুলে ধরেন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুর রহমান বলেন, আমার ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

তিনি আরও বলেন, ৬ বছর আগে ২০১৮ সালের ২২ জুলাই আমাকে হত্যা করার উদ্দেশে নৃশংস হামলা হয়েছিল। সেই হামলা করার নির্দেশ দিয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাসদ সভাপতি ও তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারি। এছাড়া ছাত্রলীগের স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ছাড়াও আরও নেতারা জড়িত ছিল। ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও অনেকেই আসামি আছে। আমি ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় মামলা করেছি। পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। এ সময় শেখ হাসিনাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও করেন তিনি। 

পরে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় যোগ দেন মাহমুদুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এএম জুবায়েদ রিপন, সভাপতি আল মামুন সাগর, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিসুজ্জামান ডাবলু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম উল হাসান অপু, জেলা জামায়াত আমির অধ্যাপক আবুল হাসেম প্রমুখ।

সেখান থেকে বেরিয়ে কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র ছাত্রলীগের হামলায় নিহত আবরার ফাহাদের বাসায় যান আমার দেশ সম্পাদক।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার মামলাটি করেন। 

কুষ্টিয়ায় দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় ২০১৮ সালের ২২ জুলাই বিকেলের দিকে মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদ ১০ হাজার টাকা জামানতে স্থায়ীভাবে তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার পর দুপুর ১টা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন।

২০১৮ সালের ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ায় আদালত থেকে (ওই মামলার) মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা হয়। আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়ার সময় লাঠি ও ইটের আঘাতে তিনি আহত হন। তাকে বহনকারী গাড়ির গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়