শিরোনাম
◈ সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা, যে সব বিষয় নিয়ে হতে পারে আলোচনা  ◈ ঢাকা-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার গ্রেফতার ◈ ঘূর্ণিঝড় ‌‘ডানা’ নিয়ে সর্বশেষ যা জানা গেলো ◈ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পল্লী বিদ্যুতের ৬ কর্মকর্তা রিমান্ডে ◈ নির্বাচন নিয়ে আসিফ নজরুলের বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নয়: ধর্ম উপদেষ্টা ◈ হাওরে সাঁতার কাটতে গিয়ে নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার ◈ ২০২৬ সালের মধ্যেই দেশের প্রথম পাতাল রেল চালু করতে চায় কর্তৃপক্ষ (ভিডিও) ◈ জাতীয় মসজিদের নতুন খতিবকে নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহর মন্তব্য ভাইরাল ◈ শেখ হাসিনাকে কোন প্রক্রিয়ায় ফেরত আনা হবে, জানালেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল (ভিডিও) ◈ এতো দাম দেখে অবচেতনমনেই বলে ফেলি আগেই ভালো ছিলাম : হাসনাত আব্দুল্লাহ (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১০ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৩১ দুপুর
আপডেট : ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জানুয়ারিতে ফিরতে পারেন তারেক, বাধা হয়ে আছে মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রায় ১৭ বছর আগে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর দেশ ছেড়ে লন্ডনে চলে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত ১৭ বছরের মধ্যে এবারের পালাবদলের পর তার দেশে ফেরার সুযোগ তৈরি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। দলটির একাধিক নেতা বলছেন, আসছে জানুয়ারিতে দেশে ফেরার পরিকল্পনা রয়েছে তারেকের।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপরই তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি জোরালোভাবে আলোচনায় আসে। কবে নাগাদ তিনি দেশে ফিরতে পারেন, তা নিয়েও আলোচনা আছে। তবে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথে কাঁটা হয়ে আছে বিগত এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া মামলাগুলো। এর মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করেছে বিএনপি। অন্যদিকে আইনি পথে মামলা মোকাবিলার কথাও বলেছেন বিএনপি নেতা ও আইনজীবীরা, যাতে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথ সুগম হয়।


তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে  বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন , আগামী বছরের শুরুতে অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে ঢাকা ফেরার পরিকল্পনা রয়েছে তারেক রহমানের। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা দলটির এক নেতা বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে দেশে ফেরার বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। তবে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির এক আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। 

যদিও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন ইউনুস সরকারের তরফ থেকে মামলা প্রত্যাহার বা তারেক দেশে আনার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা করা হবে বলে কোন আশ্বাস দেয়া হয়নি। তবুও পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথ আগের চেয়ে বিস্তৃত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্তত তারেক রহমানের জন্য আগের চেয়ে নমনীয় একটি রাজনৈতিক পরিবেশ এখন সৃষ্টি হয়েছে যা কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাধা হয়ে আছে তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো। 

তারেকের বিরুদ্ধে মামলাগুলো যে অবস্থায় আছে :

বিগত দুই সরকারের আমলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য ৩৩টি মামলার তথ্য জানাতে পেরেছেন দলের আইনজীবীরা। এর মধ্যে এক-এগারোর সরকারের সময় হয়েছে ১৭টি মামলা। আর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয়েছে ১৬টি। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা, বিভিন্ন জেলায় মানহানি মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব মামলার সঠিক পরিসংখ্যান বিএনপি আইনজীবীদের কাছে নেই।

এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেকের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা করা হয়। এসব মামলার মধ্যে দুর্নীতির মামলা বেশি। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, অর্থ পাচার, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও ২০টির বেশি মামলা হয়েছে। তবে বিএনপির আইনজীবীরা জানান, মানহানির অভিযোগে দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা হয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে এখনো সেভাবে জানা যায়নি। তারেকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার মধ্যে এ পর্যন্ত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচার, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে করা মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। সব মামলাতেই তাকে পলাতক দেখিয়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। বাকি মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ ও বিএনপির মধ্যে বিভক্তি : 

বিএনপি  ইতিমধ্যেই তারেক রহমান সহ বিএনপি নেতাকর্মীদের  বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করেছে। তবে এ বিষয়ে ইউনুস সরকারের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে তারেক রহমানের মামলার বিষয়ে দলের মধ্যে দুই রকমের মত রয়েছে। একপক্ষ চাইছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার যেহেতু মিথ্যা, গায়েবি, ভুয়া ও সাজানো অভিযোগে মামলা দিয়েছে এবং বিচার বিভাগের ওপর চাপ প্রয়োগ করে রায় দিয়েছে, তাই মামলাগুলো সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রত্যাহার করা হোক। আবার কেউ কেউ চাইছেন, আইনি প্রক্রিয়ায় মামলা মোকাবিলা করতে।

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তারেক রহমানের ৯ বছর ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের তিন বছরের সাজা হয়েছে। ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এই কারাদন্ডাদেশ দেন। তারেক রহমানকে দুই ধারায় তিন ও ছয় বছর করে সাজার রায় দেওয়া হয়। এই সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তাকে তিন কোটি টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাস সাজাভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে এর মধ্যে একটি ব্যাতিক্রমি খবর হচ্ছে গত ২৫ আগস্ট আরেকটি মামলা প্রত্যাহার করেন দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক পারভেজ আহম্মেদ চৌধুরী। ৭ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক বাবুল আকতার মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। এটিকে অনেকেই সমঝোতার ইঙ্গিত বলছেন। তবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর কি সবঝোতা হয় তার ওপরই নির্ভর করছে তারেক রহমানের দেশে ফেরা।

তথ্যসূত্র : দেশ রুপান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়