রুবেল শেখ : ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ২৬ আগস্ট ২০২৪, সোমবার সকাল সোয়া ১১টায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি ছাড়া পান। কারাগারের ডেপুটি জেলার রেজাউল করীম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রেজাউল করীম জানান, আদালত থেকে পাঠানো জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীকে মুক্তি দেওয়া হয়। দীর্ঘ আট বছরের কারাজীবনের পর তিনি মুক্ত হলেন। এ মুক্তির পর তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে চলছে নানা আলোচনা ও জল্পনা।
আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ড:
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবী থানার পলাশনগরে নিজের বাসার সামনে নির্মমভাবে খুন হন ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার। রাজীবের বাবা পল্লবী থানায় এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ দায়ের করেন। এই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীকে ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট বরগুনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার একটি আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনসহ চারটি মামলা দায়ের করা হয়।
জামিন এবং অন্যান্য মামলা:
কারাগার সূত্রে জানা যায়, মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীর বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর মধ্যে গতকাল উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অন্যান্য মামলাগুলো ইতোমধ্যেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে জামিনের আদেশ পাওয়ার পরপরই তার কারামুক্তি ঘটে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীর জামিনে মুক্তি রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, তার মুক্তির পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পুনর্গঠনের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে, মুক্তমনা ব্লগারদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, যারা অতীতে এই ধরনের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের বিভিন্ন সংগঠন এ ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা মনে করেন, এই মুক্তি দেশের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে দুর্বল করতে পারে।
মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী মুক্তির পর তার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে, তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল বাড়ছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুফতি জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় গতকাল রোববার ২৫ আগস্ট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন পান তিনি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে করা আরও তিনটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :