শিরোনাম
◈ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশে এবার স্বর্ণের দামে বড় পতন, ভরি কত? ◈ সিলেটে টেস্ট চলাকালে মারা গে‌লেন বিসিবি কর্মকর্তা ◈ স্প্যানিশ লিগ অ‌নেক ঘাম ফে‌লে মায়োর্কাকে হারা‌লো বার্সেলোনা ◈ রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের আরও তিন নেতা গ্রেফতার ◈ চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন প্রশ্নে রুল শুনানি ৩০ এপ্রিল ◈ রোহিঙ্গা সংকট কেবল একটি মানবিক সমস্যা নয়; এটি একটি বহুমাত্রিক সংকট: ড. ইউনূস ◈ চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত ১০ ◈ কুয়েট শিক্ষক সমিতি একপক্ষের চাপে ভিসির পদত্যাগ মেনে নেবে না ◈ চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন পলক, কে কে লুকিয়ে ছিলেন সংসদ ভবনে ◈ আজহারীর কড়া সমালোচনা: ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ ধর্মীয় মূল্যবোধকে করেছে উপেক্ষা, বিলুপ্তির দাবি

প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:২৭ দুপুর
আপডেট : ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আজহারীর কড়া সমালোচনা: ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ ধর্মীয় মূল্যবোধকে করেছে উপেক্ষা, বিলুপ্তির দাবি

‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’র প্রতিবেদনে জনতার ধর্মীয় মূল্যবোধের তোয়াক্কা করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। একই সঙ্গে অনতিবিলম্বে এই কমিশন বিলুপ্তিরও দাবি করেন তিনি।

আজ বুধবার ভোরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ দাবি জানান।

পোস্টে মিজানুর রহমান আজহারী লিখেছেন,‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি জনপরিসরে প্রকাশিত না হলেও গণমাধ্যমে বেশকিছু সুপারিশ উঠে এসেছে। দুঃখজনক ব‍্যাপার হলো- জনতার ধর্মীয় মূল্যবোধের মোটেও তোয়াক্কা করা হয়নি এ সংস্কার প্রস্তাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরোধিতার নাম সংস্কার নয়। রাষ্ট্রীয় এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে, অবশ্যই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধকে আমলে নিতে হবে।’

তিনি লিখেছেন, ‘সুপারিশসমূহে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণের মতো ধর্মীয়-নীতি-অনুসরণকারী আইনগুলোর ওপর আনা হয়েছে সংস্কার প্রস্তাবনা। মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মে স্বতন্ত্র পারিবারিক আইন বিদ্যমান থাকলেও, প্রস্তাব এসেছে- একটি অভিন্ন পারিবারিক আইন তৈরি করা। যুক্তি হিসেবে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ধর্মভিত্তিক পারিবারিক আইনে নারীর প্রতি বৈষম্য বিদ্যমান।’ 

প্রতিটি ধর্মেই বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ উল্লেখ করে আজহারী বলেন, ‘বিয়ের মাধ্যমে দুজন নারী-পুরুষের মাঝে গড়ে ওঠে পবিত্র বন্ধন, তৈরি হয় যৌন-সম্পর্কের বৈধতা। তবে সমাজ ও বাস্তবতা বিবর্জিত একটি বিশেষ শ্রেণি বৈবাহিক সম্পর্কের মাঝেও ধর্ষণের গন্ধ খুঁজে পান। তথাকথিত ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে তারা স্বামী-স্ত্রীর সহজাত খুনসুটিকে দেখানোর চেষ্টা করেন ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ হিসেবে। মূলত, আবহমানকাল ধরে চলে আসা এদেশের পারিবারিক কাঠামো ও ঐতিহ্যকে ভেঙে চুরমার করে ফেলাই এই শ্রেণিটির উদ্দেশ্য।’

এ ছাড়া তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণের ক্ষেত্রে ইসলামের সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা রয়েছে বলে জানান এই ইসলামি বক্তা। তিনি বলেন,‘সেই দিক-নির্দেশনা ও সেসবের কার্যকারিতা যে যাচাই করা হয়নি- ধর্মকে রাষ্ট্রের মুখোমুখি দাঁড় করানো ও নারী-বৈষম্যের হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা থেকেই বিষয়টি স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। তাদের মতে, ধর্ম যেহেতু নারী-সমাজের প্রতিপক্ষ, তাই রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে বিতাড়িত করা জরুরি। সেই লক্ষ্যেই তারা সংবিধানের ২(ক) নং অনুচ্ছেদের সংশোধনী চায়- যেখানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম স্বীকৃত।’ 

আজহারী লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত সংবিধানের ১৮ (২) নং অনুচ্ছেদে পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ হলেও কমিশন সেটি মানতে নারাজ। সংস্কার কমিশনের সদস্যরা পতিতাবৃত্তিকে নিবৃত্ত করার প্রচেষ্টাকে চিহ্নিত করেছেন মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে। উপরন্তু, বেশ্যাবৃত্তিকে তারা পেশা হিসেবে মূল্যায়ন করতে চান। অথচ বেশ্যাবৃত্তি হচ্ছে নারীত্বের সর্বোচ্চ অপমান। চরম অশ্লীলতার এহেন জঘন্য কাজের অস্তিত্ব কোনো সভ্য সমাজে যে থাকতে পারে না, সুস্থ বিবেকবান মানুষমাত্রই তা স্বীকার করবে। তা ছাড়া যাদের জন্য এই আইনের সংশোধনী চাওয়া হচ্ছে অর্থাৎ পতিতারা- তারাও এই অন্ধকার জগতের অভিশাপ থেকে বাঁচতে চায়।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের একাধিক ধারায় পরিবর্তন আনার সুপারিশও করেছেন। সেখানে প্রায় সকল জায়গায় ‘নারী-পুরুষ’ শব্দবন্ধের পরিবর্তে ‘লিঙ্গ পরিচয়’ শব্দদ্বয় ভুক্তির প্রস্তাবনা দিয়েছেন, যা সমকামী, উভকামী, ট্রান্সজেন্ডার- তথা এলজিবিটিকিউ+ মতবাদকে অন্তর্ভুক্ত করবার দূরভিসন্ধি বলেই মনে হয়।

নীতি-আদর্শ বিবর্জিত সমাজ-বিধ্বংসী এসব প্রস্তাবনা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এদেশের জনসাধারণ কেউ মেনে নেবে না বলে জানান আজহারী। তিনি বলেন,‘আমরা দাবি জানাচ্ছি- অনতিবিলম্বে এই বিতর্কিত ‘‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’’ বিলুপ্তি ও এর প্রতিবেদন বাতিল করা হোক। পাশাপাশি সমাজের ধর্মীয় অনুশাসন ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নারী-পুরুষের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়