শিরোনাম
◈ ২৭ বাংলাদেশির বাঁচার আকুতি, চাইলেন সরকারের সাহায্য ◈ পরিবারের জিম্মায় অভিনেত্রী শাওন ও সাবাকে ছেড়ে দিয়েছে ডিবি ◈ ৩২ নম্বরের আন্ডারগ্রাউন্ডে আয়নাঘরে মিললো মানুষের চোখ ও চুল! (ভিডিও) ◈ ইউরোপিয়ান ফুটবলে বার্সেলোনা ও লিভারপুলের জয়, ইন্টার মিলানের পরাজয় ◈ আ.লীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আসছে : আসিফ মাহমুদ ◈ সরকার বিরোধী অপপ্রচারের বিপুল পরিমাণ লিফলেটসহ তিনজনকে গ্রেফতার ◈ প্রাথমিকের নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিচার্জ-জলকামান ◈ আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পত্তিতে হামলা না চালানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ◈ ভারতে বসে কীভাবে দল চালাচ্ছে আ.লীগ নেতারা? ◈ ফের ঢাকা-দিল্লি কূটনৈতিক উত্তেজনা: টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:০৮ দুপুর
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রিপোর্টাস ডায়েরী: আমার ওপর হামলার নেপথ্যে

 মো: ওমর ফারুক, ফেইসবুক থেকে : গত বুধবার ৫ ফেব্রুয়ারী রাত বারোটার ঘটনা। শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটির হামলা-ভাঙচুর-আগুন চালানোর লাইভ দিচ্ছিলাম টেলিভিশনে। যদিও রাত আটটা থেকেই পুরো সময়টাই লাইভে ছিলাম। এমনকি সাংবাদিকতার এথিকস মেনেই লাইভে আমি কথা বলছিলাম,ঘটনা দেখা‌চ্ছিলাম।

লাইভ চলাকালে কয়েকবার বলেছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ি এটি। সেখানে কারা, কিভাবে, কেন এবং কোন প্রেক্ষাপটে বাড়িটিতে ভাঙচুর চালাচ্ছে সবই আমি বলেছি। একজন রিপোর্টার হিসেবে প্রকৃত ঘটনা দর্শকদের সামনে আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র। এটা আমার মি‌নিমাম দা‌য়িত্ব। 

ঠিক এই সময় দাড়ি-টুপিওয়ালা এক ব্যাক্তির আপত্ত্বি কেন আমি বঙ্গবন্ধু শব্দটি বলেছি। ওই ব্যক্তি কয়েকবার লাইভের মধ্যেই স্লেজিং করছিল। কিন্তু আমি তেমন পাত্তা দেইনি। তবে লাইভ শেষ করার পর, ওই ব্যক্তির দাবী আমি যেন আবার লাইভে গিয়ে বঙ্গবন্ধু কেন বলেছি তার জন্য ক্ষমা চাই, আবার টেলিভিশন লাইভে যাই।

কিন্তু আমি বিষয়টিতে খুবই অপরাগ জানালাম । আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, ভুল কি বলেছি! কিন্তু সেটির উত্তর না দিয়ে ওই ব্যক্তি সেখানে মব সৃষ্টির পায়তারা করছিল এবং সবশেষ সফলও হয়েছে। মবের অংশ হিসেবে শত শত মানুষ আমাকে ঘিরে ধরে ফেলেছে। ফ্যাসিবাদের দোসর, দালাল বলে গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করছে, আবার কেউ কেউ গায়ে হাতও দিয়ে। আবার কেউ পানি ভর্তি বোতল দিয়ে আমার দিকে ঢিল ছুড়ে মারছে। এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল সেই সময়টায়।

এই সময় কালেরকন্ঠের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার মেহেদী, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার জাহিদ ভাইসহ আরো অনেক সাংবাদিক আমাকে চারদিক দিয়ে ঘিরে ধরে রেখেছে, বাইরের কেউ যেন আমার ওপর হাত তুলতে না পারে সেই জন্য। যার কারনে আমাকে বাচাতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক কিল ঘুষি খাচ্ছিলো। তারপরও তারা আমাকে নিরাপত্তা দেয়ার সর্বচ্চো চেষ্টা করেছে।

তারা আমাকে চারদিকে ঘিরে ধীরে ধীরে ৩২ নম্বরের বাড়িটি থেকে মূল সড়কে নেয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু এর মধ্যে ক্ষনে ক্ষনে মব তৈরী হচ্ছে। এক মব থেকে বের হচ্ছি, আরেকটি জায়গা মব হচ্ছে। কারন যে ব্যক্তি দাড়ি টুপিওয়ালা প্রথমে মব তৈরী করছিল সেই ব্যক্তিই উত্তেজনা তৈরী করে প্রতিটি জায়গায় মব তৈরী করেছে, নানা উস্কানিমূলক কথা বলে।

এইসময় আমাকে কেউ কেউ বলছে ছাত্রলীগ, আবার কেউ বলছে ফ্যাসিবাদের দোসর এভাবে অনেকেই আমার গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করে‌ছে।

কিন্তু এই যে বল্লাম এক জন মব তৈরী করেছে। শুরু থেকেই ওই ব্যক্তি এখনো হাত ধরে রেখেছে আমার । তার বক্তব্য আমি তার কাছে ভিডিও বার্তা দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। কিন্তু এতে আমি কোনোভাবেই রাজি ছিলাম না। কারন আমি যা বলেছি সাংবাদিকতার এথিকস মেনেই বলেছি।

পরে ওই ব্যক্তি থেকে অন্যান্য সাংবাদিকরা আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে, একটি অচেনা বাইকে তুলে দিয়েছে । পরে বাইকটি আমাকে আসাদ গেইটে নামিয়ে দিয়েছে সাথে তখন ছিল কালের কন্ঠের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক মেহেদি।

এখন আসি আমার সর্ম্পকে। আমাকে যারা চেনেন বা কাছ থেকে দেখেছেন তাদের অনেকেই জানেন আমি সাংবাদিকতায় পক্ষপাত্বিতহীন করার চেষ্টা করেছি সবসময়। আওয়ামীলীগ সরকারের সময় তাদের অনেক বড় রাঘোব বোয়ালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালিয়েছি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে । যা সারা দেশে নানান সময় আলোচনা সৃষ্টি করেছে। শুধু তাই নয়, গুম খুন নিয়ে আমার অনেক প্রতিবেদন রয়েছে যেগুলো তখন অনেকেই করার সাহস পায়নি । ২০১৮ সা‌লের রাতের ভোট নি‌য়েও আ‌মি মানবজ‌মি‌নে থাকার সময় প্রতি‌বেদন ক‌রে‌ছিলাম।  আমি সেসময় যে প্রতি‌বেদনগু‌লো করেছি,এখনো সার্চ দিলে পাওয়া যাবে।

অথচ সাংবাদিক হিসেবে সেই আমাকেই হামলার শিকার হতে হলো।

সবশেষ বলবো,মব তৈরী করাও ফ্যাসিস্টের বড় লক্ষণ। যেমন,এক ফ্যাসিস্ট লোকান্তরে লক্ষ ফ্যাসিস্ট ঘরে ঘরে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়