শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্রেসক্লাবের সামনে মারধর ◈ পলাতক পুলিশ সদস্যরা এখন ‘সন্ত্রাসী’ বিবেচিত হবে, দেখামাত্রই গ্রেফতার ◈ দুই মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক (ভিডিও) ◈ প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন লোক বসাবো : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (ভিডিও) ◈ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ: এবারও ডাক পায়নি জাপা ◈ নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা, বেঁচে গেলেন অল্পের জন্য ◈ সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করতে চায় ইসরায়েল ◈ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন : সাড়ে চারশ কোটি টাকার ময়লা-বাণিজ্য হাত বদল ◈ এবার ভয়ংকর সেই আয়নাঘর নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন ◈ নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ নজরুল

প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:১৮ রাত
আপডেট : ১৭ অক্টোবর, ২০২৪, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নতুন প্লট।।

নাসির উদ্দিন : বাবা এসেছেন দেখতে। এক বছর দেখা নেই। বাবাকে দেখেই হাউমাউ কান্নায় ছুটে আসে ঝর্ণা। ঝড়ের বেগে জড়িয়ে ধরেন বাবাকে। আলতো করে পিঠে হাত রাখেন বাবাও। বাবার অমনোযোগী হাত টের পায় ঝর্ণা। এমন আদর আবেগহীন নতুন বাবাকে সে বুঝতে পারে। কারণ সে বীরাঙ্গনা হাউসের বাসিন্দা, সমাজের চোখে নষ্ট। যুদ্ধের পাপ তাকে অস্পৃশ্য করেছে। মুক্তিযুদ্ধে দেশ মুক্ত হয়েছে কিন্তু সে হয়েছে সমাজচ্যুত বন্দী। পরিবারও তাকে অস্বীকার করছে। সাথে তার মতোই কয়েকশো যুবতী। 

২১ জুলাই ২০২৪। বিকাল ৫টা। অটোরিকশা নিয়ে  যাত্রাবাড়ীর দনিয়ায় অপেক্ষা করছিলেন ওবায়দুল। কয়েকজন যুবক এগিয়ে আসে। তারা রক্তাক্ত দুজনকে অটোতে উঠিয়ে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে যেতে বলে। ওবায়দুল মাথা ঘুরিয়ে দেখে দুজনের একজন তারই একমাত্র ছেলে আমিনুল (১৬)। স্টিয়ারিং ছেড়ে হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দেয় ওবায়দুল। 

এভাবেই বারেবারে জীবন-সম্ভ্রম বিলিয়েছে এদেশের দরিদ্র মানুষ। রক্ত ঢেলে জাতির কলঙ্ক তিলক মুছে নতুন স্বপ্ন বুনে দিয়েছে তারা। বদৌলতে ক্ষমতায় বসে একদল মধ্যবিত্ত। তাদের কাঁধে চড়ে উচ্চবিত্তই রাষ্ট্রের মালিক হয়। রাষ্ট্রের সহায়তায় তারা টাকার পাহাড়ে চড়ে বসে। ব্যাংক বীমা খায়, গরীবের চাল ডালের সিন্ডিকেট বানায়। নেতা আমলাদের দাস বানিয়ে লুটপাট দূর্ণীতি অর্থপাচারের স্বর্গ তৈরি করে। তাদের পক্ষে দু:শাসন চালিয়ে গরীবকে নি:স্ব করে সরকার। গরীব আরও গরীব হয়। ধনীর বিত্ত কেবলই বাড়ে। এই দূর্ণীতি দু:শাসন অবসানের লক্ষণ নেই। কারণ রাষ্ট্র যন্ত্রের মালিক এই ধনিক শ্রেণী। রাজনীতির মাঠে তাদের পক্ষে যাত্রাপালা করে রাজনৈতিক দলগুলো। কেউ পালায়, কেউ মুক্ত হয় পলাতক জীবন থেকে। একদল বিবেকের গান গায়। গরীবের বিবেক আপ্লূত হয়। মাঝে মূহুর্তকাল অশ্লীল নাচের বিনোদন চলে। এই আপ্লূত বিবেক আর চটুল বিনোদনের ফাঁকে রক্তের হোলি খেলায় মেতে ওঠে দরিদ্র জনগণ।

অবস্থার পরিবর্তন নেই, বরং এখন আমরা তাদের পক্ষে উৎসব করে মানুষ খুন করি। প্রায় প্রতিদিন অসভ্যতা দিয়ে গড়া এই সভ্যতার বলি হচ্ছে নিরীহ মানুষ। মুক্তিযুদ্ধে এদেশের দরিদ্র শ্রেণী ও কৃষকের সন্তানেরাই জীবন দিয়েছে। এবারের আন্দোলনেও জীবন দিয়েছে একই শ্রেণীর মানুষ। মধ্যবিত্ত ও ধনিক শ্রেণী বরাবর সুবিধাভোগী। বর্তমানের এই নতুন রাজনৈতিক খেলায়ও পাহাড় সমতলে প্রাণ দিচ্ছে নিরীহরা। ক্ষমতার এই খেলা বোঝেনা দরিদ্র অক্ষমেরা। সহমর্মিতা আবেগ আহাজারিও নিম্নবিত্ত ও দরিদ্রদেরই বেশী। এটাকে পুঁজি করতেই শুরু হয় নতুন প্লট। সামনেও নতুন প্লট। আরও রক্ত লাগবে। সেই তালিকায় আরও শত দরিদ্র নিম্নবিত্ত যুক্ত হবে। 

২০০৬ সালের কথা মনে আছে? বিএনপি জামাতের শেষ বছর। হাওয়া ভবনের উত্তাপে বিএনপি পুড়ছে। খুন, দূর্ণীতি, সন্ত্রাস চাঁদাবাজিতে জোট সরকার বিপর্যস্ত। খাদ্য ঘাটতি, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়া, স্থবির অর্থনীতি, জঙ্গীবাদ, গ্রেনেড হামলা ইত্যাদিতে সরকারের দশা বেসামাল। নির্ভেজাল নির্বাচনে ক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন। প্রস্তুত হলো ভেজাল পথ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে পছন্দের বিচারপতির বয়স বাড়ানো হলো। মাঠে আওয়ামী লীগও প্রস্তুত। 'বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনি'। ক্ষমতার রণডঙ্কা বেজে উঠল। ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠা নিয়ে রাজধানী দখলের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হলো। ফলাফল ওয়ান ইলেভেন এবং সেনা সমর্থিত অগনতান্ত্রিক শাসন। 

তখনকার প্রধান লক্ষ্য ছিল মাইনাস টু। দুই মহিলায় অতিষ্ট বিচ্ছিন্ন সুশীল সমাজের অবিচ্ছিন্ন কর্মসূচি। বাহন সেনা নেতৃত্ব। তখন মূখ্য ভূমিকায় আসতে চেয়েছিলেন বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা। নাগরিক শক্তি নামে দলও ঘোষণা করেছিলেন। সাথে প্রথম আলো ডেইলি স্টারের সুশীল গ্রুপ। দুই দলের পোড় খাওয়া জাঁদরেল নেতারাও ছিলেন ওয়ান ইলেভেনের বিচ্ছিন্ন রশিতে। কিন্তু তখন মিশন সফল হয়নি। কারণ ড. ইউনূসের গ্রহণযোগ্যতা ছিলনা। সেই অপূর্ণতা এনে দিয়েছে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ। ইউনুসের ওপর নিপীড়ন তাকে সিমপ্যাথির একটা ইমেজ এনে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের দেয়া ইমেজে পুরনো বৃত্ত পূরণের পথে হাঁটছে সেই পুরনোরা। আগ্নেয়গিরির সেই পুরনো উদগীরণ পুরোদমে আবার সক্রিয়। সেই পথচলা শুরু হবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো সাহাবুদ্দিন থেকে। এজন্য পাহাড় থেকে সমতল সর্বত্রই ছড়ানো হচ্ছে অস্থিরতা। এই অস্থিরতা দেশী বিদেশি অনেকেই জানেন আগে থেকেই। অস্থিরতার পেছনের ক্রীড়নক বাইরের বড়ো শক্তি।

ফেসবুক থেকে নেয়া

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়