শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্রেসক্লাবের সামনে মারধর ◈ পলাতক পুলিশ সদস্যরা এখন ‘সন্ত্রাসী’ বিবেচিত হবে, দেখামাত্রই গ্রেফতার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ দুই মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক (ভিডিও) ◈ প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন লোক বসাবো : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (ভিডিও) ◈ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ: এবারও ডাক পায়নি জাপা ◈ নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা, বেঁচে গেলেন অল্পের জন্য ◈ সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করতে চায় ইসরায়েল ◈ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন : সাড়ে চারশ কোটি টাকার ময়লা-বাণিজ্য হাত বদল ◈ এবার ভয়ংকর সেই আয়নাঘর নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন ◈ নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ নজরুল

প্রকাশিত : ২৮ জুলাই, ২০২৪, ০২:০৮ রাত
আপডেট : ১০ অক্টোবর, ২০২৪, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দিনশেষে সকলেই দাবার বাক্সের গুটি মাত্র!

হাসান মোরশেদ

হাসান মোরশেদ: নেট ছিলো না। যাদের কাছে ফোন নাম্বার ছিলো তাঁদের অনেকে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে ফোন করে, টেক্সট করে খোঁজ নিয়েছেন। নেট আসার পর ইনবক্সে অনেকের উদ্বিগ্ন ম্যাসেজ পেয়েছি। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আদারবক্সে কিছু হুমকি-ধামকি ম্যাসেজও এসেছে। দেশছাড়া করে ফেলা হবে, ইত্যাদি। এসব নতুন কিছু নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে দীর্ঘ সংশ্লিষ্টতায় এসবে অভ্যস্ত আমরা অনেকেই। চোরা আইডির এসব হুমকিদাতাদেরও ধন্যবাদ। ঘটে যাওয়া ঘটনা বিষয়ে নিজের কিছু মতামত লিখে রাখি। নট ম্যান্ডেটরি, এগুলো কারো সাথে মিলতে হবে।

[১] প্রায় দুই শতাধিক মানুষের হত্যাকাণ্ডের দায় অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে। ইস্যুভিত্তিক কিংবা সরকার পতনের আন্দোলন করাও নাগরিকের অধিকার। কতোটা অহিংসপন্থায়, রাজনৈতিক কৌশল প্রয়োগ করে সরকার এসব সামলাবে তার উপর নির্ভর করে সরকারের সাফল্য। এই ক্ষেত্রে সরকার চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। কোনো বাগাড়ম্বর দিয়ে এই ব্যর্থতা ঢাকা যাবে না। আন্দোলনকারী, আন্দোলনের বিপক্ষের, নিরপেক্ষ, ছাত্র, পথচারী-প্রত্যেক মানুষের জীবন অমূল্য। চরম বিরোধী যে তারও জীবনের নিরাপত্তা বিধান সরকারের মৌলিক দায়িত্ব। 

[২] যে ভয়ংকর মাত্রায় নাশকতা ঘটানো হয়েছে, এর দায় আন্দোলনের নেতৃত্বকে নিতে হবে। এই আন্দোলন বাচ্চাদের নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ছিলেন নেতৃত্বে। এই অঞ্চলে ১৯৪৮ থেকে সকল ছাত্র আন্দোলন এই বয়সের তরুণরাই নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিজেদের ডাকা আন্দোলনে যদি অন্য কেউ ঢুকে নাশকতা ঘটিয়ে ফেলে সেটা আন্দোলনের নেতৃত্বের ব্যর্থতা। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনবেন, ‘...আমাদের যেন বদনাম না হয়’। বদনাম হয়েছে। নাশকতার যে মাত্রা সেটি  রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। 

[৩] কেউ কেউ দেখছি, ১৫ আগস্টের পুনরাবৃত্তির হুমকি দিচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায়। একটু সামলে। ১৫ আগস্ট ঘটিয়ে শেখ মুজিবকে শারীরিকভাবে পৃথিবী থেকে সরানো গেছে। কিন্তু ১৫ আগস্টই তাঁকে অমরতা দান করেছে। এই আন্দোলনেও বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন উক্তির ব্যবহার প্রমাণ করেছে, স্টিল হি ইজ দ্য পাওয়ার। ‘শেখ মুজিব ঘোড়ার ডিম’Ñ শ্লোগান যারা দিয়েছেন তাদের পূর্বপুরুষরা ১৫ আগস্টের খুনিদের সূর্যসন্তান উপাধি দিয়ে নিজেরা চির অন্ধকারে তলিয়ে গেছেন। [৪] যা ঘটেছে সেসবের জিওপলিটিক্যাল ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ আছে। সেগুলো খুব ইন্টারেস্টিং। আজকের পৃথিবীতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে হিসাব ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না। এখন সময় নয়। আরেকটু স্থির হলে পর সেসব মিলিয়ে নেবেন, অনেক হিসাব-নিকাশ স্পষ্ট হবে। 

প্রতিবেশী ভারত রাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সহ অনেককে বাংলাদেশের সহিংসতা বিষয়ে উৎসাহী দেখা গেছে। অনেকের উৎসাহ খুব আন্তরিক, আমাদের কাছের বন্ধুবান্ধবই তো। তবে কারো কারো উৎসাহ একেবারে বিপ্লবের লাল রঙ মাখানো। অবশ্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ‘দুই কুকুরের লড়াই’ বলা তত্ত্বও পশ্চিমবঙ্গীয় বিপ্লবীদের কাছ থেকেই এসেছিলো। ভারতীয় বন্ধুরা বাংলাদেশের প্রতি উৎসাহ রেখে নিজেদের রাষ্ট্রের মনিপুরের দিকেও একটু মনোযোগ দিতে পারেন, ওখানে দীর্ঘদিন থেকে বড্ড রক্তপাত ঘটে চলছে। বন্ধু, বন্ধু না, শত্রু, শত্রু না- সকলে নিরাপদ থাকুন। দিনশেষে সকলেই দাবার বাক্সের গুটি মাত্র। লেখক ও গবেষক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়