শিরোনাম
◈ আমাদের পরামর্শ হয়তো আর দরকার নেই, এজন্য ডাকেনি : মুজিবুল হক চুন্নু ◈ পরামর্শ ইতিবাচকভাবে নিয়েছে সরকার: বৈঠক শেষে গণফোরাম ◈ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্রেসক্লাবের সামনে মারধর ◈ পলাতক পুলিশ সদস্যরা এখন ‘সন্ত্রাসী’ বিবেচিত হবে, দেখামাত্রই গ্রেফতার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ দুই মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক (ভিডিও) ◈ প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন লোক বসাবো : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (ভিডিও) ◈ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ: এবারও ডাক পায়নি জাপা ◈ নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা, বেঁচে গেলেন অল্পের জন্য ◈ সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করতে চায় ইসরায়েল ◈ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন : সাড়ে চারশ কোটি টাকার ময়লা-বাণিজ্য হাত বদল

প্রকাশিত : ২৫ জুলাই, ২০২৪, ০৪:১৭ দুপুর
আপডেট : ০৯ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোটা আন্দোলন, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সূত্র

ড. আহমদ আল কবির

ড. আহমদ আল কবির : কোটা সংস্কার আন্দালন শুরু হয়েছিলো শান্তিপূর্ণভাবেই। কিন্তু তিন-চার দিন পরেই দেখা যায়, সেই আন্দোলন আর ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণে নেই। পুরো আন্দোলনটি একটি স্বার্থান্বেষী মহল, দেশের যারা উন্নয়ন চায় না, অগ্রগতি চায় না, দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের দীর্ঘদিনের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ছাত্রদের কোটা আন্দোলনকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। এর মধ্যদিয়ে তারা দেশব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ করে। বিশেষ করে ঢাকা নগরীর সকল সেবা খাতে, মেগাপ্রকল্প, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প, যেগুলো আমাদের কাছে আইকন হিসেবে পরিচিত, সেই প্রকল্পগুলোকে টার্গেট করে তারা বিভিন্ন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যায়। এতে হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়, শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। আন্দোলনে যারা সক্রিয় ছিল, তাদের মধ্যেও অনেকে প্রাণ হারায়। কারণ তারা ওই সময় হিংস্র হয়ে উঠেছিল এবং ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ছিল। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের সাহায্য করে তাদেরও প্রাণ হারাতে হয়। এ ধরনের প্রাণ হারানো আমাদের কারো কাছে কাম্য নয়। কিন্তু যখন এই ঘটনাগুলো ঘটছিল তখন যে হিংস্র অবস্থা এবং মানুষের জান-মালের যে অবস্থা, খুবই খারাপ অবস্থায় চলে যায়। সেই দিন থেকে সরকার কারফিউ জারি করে এবং সেনা বাহিনীর সাহায্য নিয়ে পুরো পরিস্থি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। 

আমরা লক্ষ্য করেছি, আইশৃঙ্খলা বাহিনী যখন এই হিংস্র অবস্থা চলছিল, এই যে সন্ত্রাসী অবস্থা চলছিল তখন জান-মালের ক্ষতি যাতে না হয় সেই দিকে তাকিয়ে তারা অনেক অপারেশনে যেতে পারেনি। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবেই পুরো কাজটি করে। সেবা খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, এর মধ্যে হাসপাতালও বাদ পড়েনি, জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্রও বাদ পড়েনি এবং উন্নয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রগুলোকে যেমন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং মেট্রোরেলেও আঘাত হানে। এই অবস্থায় অর্থনীতির ওপরে ব্যাপক চাপ পড়বে। অতি সম্প্রতি আমাদের মুদ্রা নীতি এসেছে। যখনই বাস্তবায়নের দিকে যাবে ঠিক তখনই দেখলাম এ ধরনের হিংস্র আচরণ। যারা স্বাধীনতাবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী, উন্নয়নের বিরোধী তারাই এ কাজগুলো একটার পর একটা চালিয়ে যাচ্ছিলো। এই অবস্থায় আমরা শান্তি চাই, যাদের প্রাণ চলে গেছে তাদের সমবেদনা জানাই। অন্য দিকে যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে, তাদের শাস্তিবিধানে সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে। আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সব প্রতিষ্ঠান সচল করতে হবে। আমাদের ইন্টারনেট সার্ভিস কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর চালু হলেও অনেক ধীর গতি। ফলে অফিস-আদালতে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ইন্টারনেট খুব দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে।   

আমাদের যেসব ছেলে-মেয়ে আউটসোর্সসিংয়ে জড়িত তারা ঘরে বসে কিছু করতে পারছে না, যারা অফিসে আদালতে কাজ করে তাদের জন্য ইমেইল, ফ্যাক্স না থাকায় অন্যদিকে ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনার কাজ থেকে বঞ্চিত। এসব আমাদের সচল করতে হবে। মূদ্রাস্ফীতির প্রভাব ১০ শতাংশের কাছাকাছি, মুদ্রাস্ফীতি থেকে রক্ষা করে পুরো কার্যক্রম গতিশীল করতে চাইলে আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আরও পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। ২২ জুলাই মাননীয় প্রধামন্ত্রী আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন, তারাও চান শান্তি, পাশাপাশি যারা হিংস্র কর্মকাণ্ড চালিয়েছে তাদের শাস্তিও চান। তারাও সাহায্য চেয়েছেন তাদের উৎপাদন, এক্সপোর্ট, ইমপোর্ট চালু রাখার জন্য। যে ক্ষতি হয়েছে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের পরিকল্পিত ও সম্মন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। উন্নয়নকে গতিশীল করতে চাইলে অবশ্যই সম্মন্বিতভাবে উদ্যোগের প্রয়োজন। যখন এসব কর্মকাণ্ড চলবে তখন সামনের দিনগুলোর দিকে তাকিয়ে কৃষিকে বাদ দিয়ে কোনো কিছু চিন্তা করা উচিত নয়। একদিকে যেমন শিল্প উৎপাদন চলবে, পাশাপাশি কৃষির দিকে নজর দিতে হবে। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদেরও বুঝতে হবে দেশ বাঁচলে সবকিছু আছে। তাদের কোটা আন্দোলন শেষ হয়েছে, তারা কোনো কারণেই যাতে আর বাড়াবাড়ি না করে । 

তাদের বুঝতে হবে অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের বাব-মা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদেশ আমাদের, মুক্তিযোদ্ধের মাধ্যমে এদেশ পেয়েছি। ধ্বংসের মাধ্যমে কিছু হয় না। ধ্বংসাত্মক কাজ যারা করেছে তারা দেশের শুত্রু, জনগণের শুত্রু, সাধারণ মানুষের শুত্রু। আমরা চাই সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে এ অবস্থার উন্নয়ন ঘটুক। আমরা এখনো অনেক কম দামে বিশ্ববাজারে কাপড় রপ্তানি করে । তবে এই প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন বাড়ে তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গত এক সপ্তাহে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এখনই প্রডাকশনে যেতে হবে, শ্রমিক ভাই-বোনদেরও বলবো তারাও যেন সতর্ক থাকে। যারা স্বাধীনতা বিরোধী, মুক্তিবিরোধী তারা বিভিন্ন ফন্দি আটবে। এখানে বিদেশিদেরও হাত থাকা অস্বাভাবিক নয়। এসব কাজ থেকে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
পরিচিতি : সাবেক চেয়ারম্যান, রূপালী ব্যাংক। শ্রুতিলিখন : ইশাদুল মিয়া  

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়