শিরোনাম
◈ সেভিয়াকে হারিয়ে দুই নম্বরে উঠে এলো রিয়াল মাদ্রিদ ◈ আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশ নেয়ার কতটা সুযোগ রয়েছে? ◈ অস্ট্রেলিয়ান ট্রাভিস হেড ভারতের মাথা ব্যথার কারণ  ◈ দিল্লিতে অবৈধ ১৭৫ বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করলো পুলিশ, শহরজুড়ে তল্লাশি ◈ ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজ জয়কে অপ্রত্যাশিত বলছেন আলাউদ্দিন বাবু ◈ দীর্ঘ বছর ক্রিকেট খেলার পর আমাদের একটা স্টেজে আসা উচিত: কোচ সালাহউদ্দিন ◈ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা (ভিডিও) ◈ বিশেষ বিধান জারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ ২৯ ডিসেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া ◈ ভারতে যদি গদি সাংবাদিক হয়, বাংলাদেশে তেলবাজি সাংবাদিক: মতিউর রহমান চৌধুরী (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৪ জুলাই, ২০২৪, ০২:২১ রাত
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যুক্ত বাংলায় ধর্মীয় সম্প্রীতি

শামসুদ্দিন পেয়ারা

শামসুদ্দিন পেয়ারা: ভাঙা বাঙলা জোড়া লাগলে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব বাড়বে বলে অনেকে আশঙ্কা করেন। আশঙ্কাটি অমূলক। দুই বাঙলা এক হবার সবচেয়ে বড় পূর্বশর্তই হলো হিন্দু-মুসলিম ধর্মীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব ও বিরোধ প্রশমন ও দূরীকরণ। ধর্মীয় বিরোধের কারণেইতো ১৯৪৭-এ এক বাঙলা ভেঙে দুটুকরো হয়েছিল এবং এখনো সেই বিভক্তি অব্যাহত রয়েছে। দুই পরস্পরবিরোধী ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে কিছুটা সাম্প্রদায়িকতা থাকবেই। সাথে থাকবে উগ্রপন্থীদের উস্কানি। তবে ক্রমে সাম্প্রদায়িকতার ধার, তাপ ও চাপ কমে আসবে। উগ্রসাম্প্রদায়িকতা দূর না হলে দুই বাঙলা এক হবে কি করে? ওটা দূর হতেই হবে।

দুই বাঙলা এক করে বৃহৎ বাঙলা রাষ্ট্র কায়েম করতে হলে বাঙলার হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়কেই আরো অনেক বেশি উদার যুক্তিনির্ভর সভ্য ও মানবিক হতে হবে। একে অন্যের উপর চেপে বসার মনোভাব পুরোপুরিভাবে ত্যাগ করতে হবে। হিন্দুরা ভাবতে হবে মুসলমানরা আমাদের ভাই,  মুসলমানরা ভাল। মুসলমানরা ভাবতে হবে হিন্দুরা আমাদের ভাই, হিন্দুরা ভাল। জাত-পাত, ছোঁয়াছুয়ি -এসব থাকবেই। এখনো আছে না? তাতে কি ওদেশ চলছে না? কবে জাতপাত, ছোঁয়াছুয়ি দূর হবে, তারপর বাঙলা এক হবে, সে অপেক্ষায় বসে না থেকে, সবার আগে ভাঙাবাঙলাকে জোড়া দিতে হবে। তারপর ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা, জাতপাত, হিন্দু মুসলিম, বামুনশূদ্র, ছুৎমার্গ এসব ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে। যুক্তবাঙলায় ঘরে-বাইরে সর্বত্র সকলের নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। চৌকাঠের ভেতরে অথবা মসজিদ মন্দির গির্জা প্যাগোডা গুরুদোয়ারা সিনাগগসহ সকল ধর্মের উপাসনালয়ে সকল ধর্মাবলম্বীদের অবাধ প্রবেশাধিকার থাকবে। সকল নাগরিকের মর্যাদা হবে সমান তারা সকলে সমমানসম্পন্ন মানুষ হিসাবে বিবেচিত হবেন। 

কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদন পাঠ করুন। তাহলে অসাম্প্রদায়িক যুক্ত বাঙলার একটা খসড়া ধারণাচিত্র পাওয়া যাবে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল  সম্প্রীতির জয় হোক। ২৫ বছর ধরে তাঁদের দোকানে কাজ করতেন রামদেব। সেই কর্মীর শেষযাত্রায় কাঁধ দিলেন মুসলিম কর্তা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপিত হল পশ্চিমবঙ্গের পটনায়। দীর্ঘদিন তাঁদের হোসিয়ারির দোকানে কাজ করতেন এক হিন্দু কর্মী। সেই কর্মীর শেষযাত্রায় শামিল হলেন মুসলিম মালিক। রামদেবের দেহ কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে গেলেন মহম্মদ রিজওয়ান খান। পটনায় হোসিয়ারির দোকান রয়েছে মহম্মদের। সেখানে গত ২৫ বছর ধরে কাজ করতেন রামদেব। তাঁকে পরিবারের সদস্যের মতোই দেখতেন মহম্মদ। গত সপ্তাহে মারা গিয়েছেন রামদেব। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তাঁর শেষকৃত্যে শুধু মহম্মদ নন, আরও অনেক মুসলিম প্রতিবেশী শামিল হন। রিজওয়ানের কথায়, রামদেব আমার বাবার মতোই ছিলেন। যখন আমার দোকানে কাজ খুঁজতে এসেছিলেন, তখন তাঁর বয়স ৫০-এর কাছাকাছি। আমি বলেছিলাম, আপনি ভারী কাজ পারবেন না। রামদেব বলেন, তিনি হিসাবের কাজ দেখতে পারবেন। রিজওয়ান আরও বলেন, শেষদিকে বয়সের ভারে আর কাজ করতে পারছিলেন না রামদেব। আমি তাঁকে বিশ্রাম নিতে বলেছিলাম। এও বলেছিলাম, বেতন পাঠিয়ে দেব। সেই নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। রামদেব ছিলেন তাঁর অভিভাবকের মতোই, বললেন রিজওয়ান। লেখক: মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়