ফজলুল বারী: শেখ হাসিনা কেন চীন সফর সংক্ষিপ্ত করে চলে এলেন? এটা নিয়ে অনেকের অনেক রকম গবেষণা। চীন তা নিজের মতো করে বুঝুক। ভারত বুঝুক তার নিজের মতো করে। কোটা আন্দোলনকারীরা বুঝুক। তবে একখান সাফ কথা মনে রাখা ভালো। তাহলো মুক্তিযোদ্ধাদের গালি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের যা খুশি বলে শেখ হাসিনার কাছ থেকে কিছু পাবার আশা করে লাভ নেই। এখন যারা সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি তারা মুক্তিযুদ্ধের সৃষ্টি। তোমাদের বাপ বদলাতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের বাপ বদলায় না। এখান থেকে আখেরে তোমরা কিছু পাবে না। মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধররা বেঁচে থাকতে বাংলাদেশের কোথাও তোমরা চাকরি বা কাজ করতে পারবে না। তোমাদের বয়স কম। এটাই তোমাদের শুধরানোর সময়।
শেখ হাসিনাকে চিনতে, বুঝতে শিখতে তোমাদের হিসাবের ভুল হয়ে গেছে। লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের শত্রুপক্ষের বংশধরদের মিলমিশ হয় না। বৈষম্যই হয়। এই বৈষম্য থাকবে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে। তেলে আর পানিতে মিলবেনা। শেখ হাসিনার বাপ মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। শেখ হাসিনার দুই ভাই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। পারলে বলো তো সোনা এর জন্য তুমি হাসিনা কেন এতদিন ক্ষমতায় থাকবে! শুধু তাই নয়, আগামীতে রেহানা, পুতুল এরাও হয়তো বাংলাদেশ চালাবে। এরাই মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধর। পারলে ঠেকাও! কপালে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে তোমরা মুক্তিযোদ্ধাদের যা খুশি বলেছো। এই পতাকা সেখান থেকে তুলে নিতে গিয়ে তোমাদের কপালটাও অক্ষত থাকবে না।
মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মকে যা খুশি বলা তোমরা কাদের লোক কার খুঁটির জোরে নাচো রেললাইনে সিমেন্টের ট্রাক তুলে দিয়ে ট্রেন বন্ধ করেছো, তা বাংলাদেশ চিনে ফেলেছে। তোমাদের স্বপ্নপূরণে বিএনপি-জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত তোমাদের অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষা করতে থাকো। চাকরি আর করা হবে না। বাংলাদেশটা তোমাদের নানা-দাদাদের ফাঁসির জন্য। ক্ষমতার জন্য না। সেই দিন আর আসবে না। শুধু নিজেদের চাকরির লোভে তোমরা মানুষের পথ আটকে দুর্ভোগ দিয়েছো। পথ বন্ধ করে দেওয়ায় কত মানুষ জরুরি কাজে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেনি। বিদেশগামী যাত্রীটি ফ্লাইট মিস করেছে। বাতিল হয়েছে তার ভিসা, বিদেশের চাকরি। আর তোমরা আনন্দে রাস্তায় বসে টাস খেলেছো? এর মাশুল তোমরা কড়ায় গন্ডায় পাবে।
তোমাদের সবার ছবিগুলো আছে ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বে স্বাধীন দেশে তোমাদের আর চাকরি বিয়েসাদি করা লাগবে না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষেরা তোমাদের বাড়িঘর চিহ্নিত করেছে। সেখান থেকে টেনে নামিয়ে রাস্তায়ই বসাবে। কারণ তোমরা নিজের চাকরির লোভে মানুষকে কষ্ট দিয়েছো রাস্তায়। যে যা করেন তার পরিণতি সে রকমই হয়। অনেকে বলছেন, চীনের কাছে বাংলাদেশের আরও অনেক পাবার আশা ছিল। চীন ব্যবসায়ী দেশ। তার লাভলোকসান তারাই বুঝে। এরজন্য এখানে আগে আগে নিজেরাই বলে তিস্তা প্রকল্পে ভারত থাকলেও তারা একসঙ্গে কাজ করতে চায়। আর শেখ হাসিনা চান চীন ভারতের প্রতিযোগিতায় তিস্তা প্রকল্প হোক। তাতে বাংলাদেশেরই লাভ।তিস্তার পানিÑ এটা এখন রাজনৈতিক শ্লোগান হিসেবে ভালো। কিন্তু বাস্তবে শুকনো মওসুমে পানি কোথাও থাকেনা। নদী শুধু বাংলাদেশে ভরাট হয়নি। ভারতেও ভরাট হয়েছে। বর্ষার পানি জমিয়ে রেখে আধার তৈরি করে আমাদের ভবিষ্যতে কৃষি কৃষক মৎস্যসম্পদ বাঁচাতে হবে। শুকনো মওসুমে পদ্মা সেতুর নীচেও চর পড়ে।
পায়রা বন্দর মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ করতে চেয়েছে চীন। এতে করে দক্ষিণের জেলাগুলো রেল যোগাযোগের আওতায় আসবে। চীনকে দেখে এখানে ভারতও পার্টি। ভারত চীন প্রতিযোগিতা করুক। যেটা বাংলাদেশের জন্য লাভবান সেটাই শেখ হাসিনা করবেন। যারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করবে তাদের সংগে ব্যবসা বেশি করবেন শেখ হাসিনা। জগতের সব সম্পর্কই অর্থনৈতিক। সাফ কথা বাংলাদেশ বংশপরম্পরায় চলবে মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের নেতৃত্বে। অন্য কারো নয়। যা ভাগ তোদের দেশ পাকিস্তানে। ১১ জুলাই ২০২৪।
https://www.facebook.com/profile.php?id=61552204160274
আপনার মতামত লিখুন :