শিরোনাম
◈ বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা: আনন্দবাজারের প্রতিবেদন ◈ ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’র নাম পরিবর্তন ◈ হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক ◈ গত ১৫ বছর বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে তাঁবেদারি করেছে : প্রেস সচিব  ◈ উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ ভাতা বৃদ্ধির দাবীতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেছেন চিকিৎসকরা ◈ রাজধানীর যেসব সড়ক কাল বন্ধ থাকবে, বিকল্প পথে চলার পরামর্শ ◈ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে কৌশলের কথা জানালেন ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি নিয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও) ◈ রাখাইন রাজ্যের মিলিটারি সদরদপ্তর আরাকান আর্মির দখলে, সতর্ক উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত

প্রকাশিত : ০৫ জুলাই, ২০২৪, ১২:১০ রাত
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফেসবুক আধুনিক প্রযুক্তির এক শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার

আহসান হাবিব

আহসান হাবিব: [১] ফেসবুক আসার পর বই পড়া কমে গেছে। কিন্তু লেখা হচ্ছে ফেসবুক আসার আগের চেয়ে ঢের বেশি। বরং বলা যায় যা কিছু প্রকাশযোগ্য তা এই সময়েই লেখা হয়েছে। তাই ফেসবুক আমার কাছে শুধু যোগাযোগ মাধ্যম নয়, আমার চিন্তা প্রকাশের ক্যানভাস। এই সময় নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখি ছাড়াও উপন্যাস লেখা হয়েছে বেশ কয়েকটি। সেগুলি প্রকাশিতও হয়েছে। তাই ফেসবুক আমার কাছে লেখার টেবিল। যা কিছু লিখি, তার ফিডব্যাক পাই বন্ধুদের কাছ থেকে।  নানা বিতর্ক থাকে। আবার যারা বন্ধু নন, তারাও কমেন্ট করেন। নানারকম মন্তব্য। ফলে ফেসবুক শুধু যোগাযোগে আটকে থাকে না, হয়ে ওঠে মতাদর্শিক লড়াইয়ের একটা ক্ষেত্র। বোঝা যায় আমরা কোন সমাজে বাস করছি, মানুষগুলি কেমন, কেমন তাদের চিন্তা। 

[২] আমার পর্যবেক্ষণ হলো এখানে সাম্প্রদায়িক মানুষের বাস বেশি। বলা যায় অসাম্প্রদায়িক মানুষ এখানে বিরল। সাধারণ থেকে অসাধারণ সব ধরণের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা বিরাজ করছে এবং আশ্চর্য, অসাম্প্রদায়িকতা এখানে সন্দেহের চোখে দেখা হয়। ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রগতিশীলতা এখানে চর্চার চেয়ে বরং কেউ করলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই এখানে বেশি ঘটে। বিজ্ঞান এখানে প্রায়োরিটি নয় বরং তার প্রতি নেতিবাচকতা প্রবল। এখানে বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ পেতে আতশি কাঁচ লাগবে। ইনফ্যাক্ট আমরা চিন্তার দিক থেকে এখনো মুক্ত মানুষ হয়ে উঠতে পারিনি। ধর্ম দিয়ে, সম্প্রদায় দিয়ে মানুষ নিজের আইডেন্টিটি খুঁজে। এখানে মানুষ মানেই যে কোন সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হতেই হবে। অথচ জীবনযাপন এবং টিকে থাকার জন্য এটা কোন কাজে আসে না। বরং এসব দিয়ে সমাজে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখা হয় এবং এর মধ্য দিয়ে ধর্মব্যবসায়ীরা লাভবান হয়।

সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় এখানে যারা শিল্পসাহিত্য দর্শন এবং রাজনীতি করে, তাদেরও প্রধান হাতিয়ার ধর্ম। ফলে চিন্তা এবং উদ্ভাবনের দিক থেকে সবচেয়ে পশ্চাদপদ স্থান হচ্ছে এই অঞ্চল। এদের মগজ থেকে ধর্মীয় বিদ্বেষ দূর হওয়া তো দুরস্ত, বরং ক্রমে গেঁড়ে বসছে। আমার ধারণা সাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকে বের হতে না পারলে আমরা আধুনিক চিন্তার জগতে পা রাখতে পারবো না।

[৩] ফেসবুকের আবিষ্কার না হলে সম্ভবত আমি যে টুকটাক গান করি, তা দশজন লোকও জানতো না। ফেসবুক আমাকে এই সুযোগ করে দিয়েছে। একটা গান আপলোড করলে নানারকম মন্তব্য পাই। এই মন্তব্য আমার নিজের উৎকর্ষে কাজে লাগে। একটা গান শেষ হলে একটা সময় পর ফেসবুক আমাকে ট্রিগার করে আরো গান দিতে। কিন্তু গানকে অন্যের কাছে পরিবেশনযোগ্য করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। নিখুঁত একটি গানের জন্য প্রচুর সময় এবং সাধনা লাগে। ফেসবুক এটা করতে আমাকে সমসময় উস্কে দেয়। ফেসবুক না থাকলে এই ট্রিগার আমার ভেতর কাজ করতো কি না, সন্দেহ হয়। সূতরাং ফেসবুক সর্বোতভাবে আমার শিল্পচর্চার একটি চমৎকার মাধ্যম। আমার তাই মনে হয় ফেসবুক আমার সময় হরণ করে না, বরং আমার সময়টাকে অর্থবহ করে তোলে। 

[৪] ফেসবুক এখন আমার কাছে শ্রেষ্ঠ এক নিরাপত্তার নামও। একদিন ফেসবুক না থাকলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। আবার কোন কারণে যদি মানসিক সমস্যা দেখা দেয়, ফেসবুক তা সারাতে এগিয়ে আসে সাফল্যের সংগে। কিভাবে? মন বিষন্ন হলে যদি এই কথাটাই লিখি, তাহলে বন্ধুরা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। তারা নিমেষেই মন ভাল করে দেয়। মন খারাপের কারণ যাই হোক লঘু হয়ে আসে। বুকের ভার কমে যায়। ধীরেধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে। আগে মন খারাপ হলে ঠিক হতে তিনদিন লাগতো, এখন তিন ঘণ্টাতেই উধাও। কারণ ফেসবুকের বন্ধু। অথচ এরা কয়েকজন ছাড়া আমার কেউ চেনা নয় বাস্তব জীবনে। [৫] ফেসবুক আধুনিক প্রযুক্তির এক শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার। লেখক: কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়