শিরোনাম
◈ সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা, যে সব বিষয় নিয়ে হতে পারে আলোচনা  ◈ ঢাকা-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার গ্রেফতার ◈ ঘূর্ণিঝড় ‌‘ডানা’ নিয়ে সর্বশেষ যা জানা গেলো ◈ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পল্লী বিদ্যুতের ৬ কর্মকর্তা রিমান্ডে ◈ নির্বাচন নিয়ে আসিফ নজরুলের বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নয়: ধর্ম উপদেষ্টা ◈ হাওরে সাঁতার কাটতে গিয়ে নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার ◈ ২০২৬ সালের মধ্যেই দেশের প্রথম পাতাল রেল চালু করতে চায় কর্তৃপক্ষ (ভিডিও) ◈ জাতীয় মসজিদের নতুন খতিবকে নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহর মন্তব্য ভাইরাল ◈ শেখ হাসিনাকে কোন প্রক্রিয়ায় ফেরত আনা হবে, জানালেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল (ভিডিও) ◈ এতো দাম দেখে অবচেতনমনেই বলে ফেলি আগেই ভালো ছিলাম : হাসনাত আব্দুল্লাহ (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৪ জুলাই, ২০২৪, ০২:৩৭ রাত
আপডেট : ১৭ অক্টোবর, ২০২৪, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রাচ্যের আধ্যাত্মিক ঐক্য

প্রবীর বিকাশ সরকার

প্রবীর বিকাশ সরকার: সুদর্শন এক শিল্পপতি যিনি জাপানের আধুনিকতার সূচনাকালে পাশ্চাত্য প্রভাবে গড়ে তুলেছিলেন সৌন্দর্যচর্চার ব্যবসা কুরাবু কেশোওহীন কাইশা বা ক্লাব প্রসাধনী প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মধ্য দিয়ে মেইজি যুগে কোবে শহরে। যা এখনো সচল। প্রতিষ্ঠাতা নাকায়ামা তাইচি। প্রথমদিকে তিনি নাকায়ামা তাইয়োওদোও নামে একটি বিদেশি প্রসাধনীর বিপনী স্থাপন করেন ১৯০৩ সালে। তখন তার বয়স মাত্র ২১ বছর। ১৯০৬ সালে নিজেই প্রসাধনী প্রস্তুত শুরু করেন। জাপানে প্রসাধনী ব্যবসার সূত্রপাত আরও আগে মধ্যযুগের ১৬১৫ সালে। তখন এদো যুগ শুরু হয়েছে জাপানে সামুরাই শোওগুন তোকুগাওয়া ইয়ায়েসুর মাধ্যমে। তার আমলে চিনের মিঙ বংশের রাজত্বকালে একজন চিনা চিকিৎসক তোকুগাওয়ার উপদেষ্টা হিসেবে এ দেশে আসেন। তার প্রচেষ্টায় প্রচলন ঘটে প্রসাধনী ব্যবহারের। প্রসাধনী প্রস্তুত করে ইয়ানাগিয়া হোনতেন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠান এখনো আছে। 

এরপর একে-একে প্রসাধনী প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান জাপানে বিপুল চাহিদা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা হতে থাকে, যেমন, কানেবোও, হানাওঅ, রাইওন, কুরাবু, শিসেইদোও, কোওসে ইত্যাদি। কুরাবু প্রসাধনীর প্রতিষ্ঠাতা নাকায়ামা তাইচিকে অন্যতম পাইওনিয়ার বলা হয়ে থাকে। তিনি শুধু প্রসাধনী তৈরি নয়, নারীদেরকে আধুনিক করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ক্লাব, ক্যাফে প্রতিষ্ঠা এবং প্রথম ফ্যাশন ম্যাগাজিন প্রকাশ করেন ১৯২৪ সালে নাম জোসেই বা মহিলা। চাররঙা প্রচ্ছদ সহজেই দৃষ্টি কাড়ে এখনো পুরনো ছবি দেখলে পরে। মনেপ্রাণে জাতীয়তাবোধে উজ্জীবিত ছিলেন নাকায়ামা। রাষ্ট্র পরিচালনায়ও তার বিশেষ অবদান রয়েছে। মননশীল চিন্তাকে অগ্রসর করে তুলতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পুরাতোনশা নামে। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বক্তৃতাসংকলন প্রকাশিত হয়েছে ১৯২৪ সালে। প্রায় ২০টির অধিক বক্তৃতা ইংরেজি ও বাংলা থেকে জাপানি ভাষায় অনুবাদকৃত। নাম ইনিশিয়ে নো মিচি বা পুরনো পথ। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নাকায়ামা তাইচি ছিলেন দুই মেরুর মানুষ। রবীন্দ্রনাথ জমিদার আর নাকায়ামা শিল্পপতি। কিন্তু মানবসমাজের অগ্রগতি ও মননশীল কর্মকাণ্ডের দিক দিয়ে দুজনেই ছিলেন অগ্রগামী। এখানেই তাদের মিলন ঘটেছিল। আজ নাকায়ামা তাইচির প্রচেষ্টা যেমন ইতিহাস, তেমনি রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতী আজ ইউনেস্কোর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিশ্বঐতিহ্য। দুই প্রতিষ্ঠানই তারুণ্যের সৌন্দর্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলেছে এখানেই প্রাচ্যের ঐক্য নিহিত।
জাপান প্রবাসী লেখক ও গবেষক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়