শিরোনাম
◈ প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে যা বললেন তাসনিম জারা ◈ যুক্তরাষ্ট্র  ১৭ হাজার টন খাদ্য পাঠিয়েছে রোহিঙ্গাদের জন্য ◈ নাগরিকত্ব আইনে কেন পরিবর্তন এনেছে ইতালি, নতুন নীতিতে কী আছে?  ◈ বাংলাদেশের মতো ভারতেও অভ্যুত্থানের শঙ্কা: দি ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন ◈ বিএনপির বিরুদ্ধে এনসিপির বিস্ফোরক অভিযোগ ◈ প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর: নতুন অধ্যায়ের সূচনা বাণিজ্য-বিনিয়োগে  ◈ আরও কঠোর হচ্ছে ভারতে বিদেশিদের প্রবেশ-অবস্থান  ◈ গুলশান-বনানীর সড়ক ব্যবহারে যে নির্দেশনা দিলো ট্রাফিক বিভাগ ◈ ঈদ আনন্দ মিছিলে মূর্তি প্রদর্শনী নিয়ে জামায়াতের বিবৃতি ◈ ড. ইউনূসের প্রতিনিধিকে মার্কিন উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন, যে আলোচনা হলো

প্রকাশিত : ০৪ জুলাই, ২০২৪, ০২:৩৭ রাত
আপডেট : ১৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রাচ্যের আধ্যাত্মিক ঐক্য

প্রবীর বিকাশ সরকার

প্রবীর বিকাশ সরকার: সুদর্শন এক শিল্পপতি যিনি জাপানের আধুনিকতার সূচনাকালে পাশ্চাত্য প্রভাবে গড়ে তুলেছিলেন সৌন্দর্যচর্চার ব্যবসা কুরাবু কেশোওহীন কাইশা বা ক্লাব প্রসাধনী প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মধ্য দিয়ে মেইজি যুগে কোবে শহরে। যা এখনো সচল। প্রতিষ্ঠাতা নাকায়ামা তাইচি। প্রথমদিকে তিনি নাকায়ামা তাইয়োওদোও নামে একটি বিদেশি প্রসাধনীর বিপনী স্থাপন করেন ১৯০৩ সালে। তখন তার বয়স মাত্র ২১ বছর। ১৯০৬ সালে নিজেই প্রসাধনী প্রস্তুত শুরু করেন। জাপানে প্রসাধনী ব্যবসার সূত্রপাত আরও আগে মধ্যযুগের ১৬১৫ সালে। তখন এদো যুগ শুরু হয়েছে জাপানে সামুরাই শোওগুন তোকুগাওয়া ইয়ায়েসুর মাধ্যমে। তার আমলে চিনের মিঙ বংশের রাজত্বকালে একজন চিনা চিকিৎসক তোকুগাওয়ার উপদেষ্টা হিসেবে এ দেশে আসেন। তার প্রচেষ্টায় প্রচলন ঘটে প্রসাধনী ব্যবহারের। প্রসাধনী প্রস্তুত করে ইয়ানাগিয়া হোনতেন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠান এখনো আছে। 

এরপর একে-একে প্রসাধনী প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান জাপানে বিপুল চাহিদা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা হতে থাকে, যেমন, কানেবোও, হানাওঅ, রাইওন, কুরাবু, শিসেইদোও, কোওসে ইত্যাদি। কুরাবু প্রসাধনীর প্রতিষ্ঠাতা নাকায়ামা তাইচিকে অন্যতম পাইওনিয়ার বলা হয়ে থাকে। তিনি শুধু প্রসাধনী তৈরি নয়, নারীদেরকে আধুনিক করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ক্লাব, ক্যাফে প্রতিষ্ঠা এবং প্রথম ফ্যাশন ম্যাগাজিন প্রকাশ করেন ১৯২৪ সালে নাম জোসেই বা মহিলা। চাররঙা প্রচ্ছদ সহজেই দৃষ্টি কাড়ে এখনো পুরনো ছবি দেখলে পরে। মনেপ্রাণে জাতীয়তাবোধে উজ্জীবিত ছিলেন নাকায়ামা। রাষ্ট্র পরিচালনায়ও তার বিশেষ অবদান রয়েছে। মননশীল চিন্তাকে অগ্রসর করে তুলতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পুরাতোনশা নামে। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বক্তৃতাসংকলন প্রকাশিত হয়েছে ১৯২৪ সালে। প্রায় ২০টির অধিক বক্তৃতা ইংরেজি ও বাংলা থেকে জাপানি ভাষায় অনুবাদকৃত। নাম ইনিশিয়ে নো মিচি বা পুরনো পথ। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নাকায়ামা তাইচি ছিলেন দুই মেরুর মানুষ। রবীন্দ্রনাথ জমিদার আর নাকায়ামা শিল্পপতি। কিন্তু মানবসমাজের অগ্রগতি ও মননশীল কর্মকাণ্ডের দিক দিয়ে দুজনেই ছিলেন অগ্রগামী। এখানেই তাদের মিলন ঘটেছিল। আজ নাকায়ামা তাইচির প্রচেষ্টা যেমন ইতিহাস, তেমনি রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতী আজ ইউনেস্কোর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিশ্বঐতিহ্য। দুই প্রতিষ্ঠানই তারুণ্যের সৌন্দর্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলেছে এখানেই প্রাচ্যের ঐক্য নিহিত।
জাপান প্রবাসী লেখক ও গবেষক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়