মনিরুল ইসলাম : বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি কর্মসূচি বিনিময় বাড়াতে আজারবাইজানের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে সম্মত হয়েছেন। তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জন্য বাংলাদেশে আপনাদের উপস্থিতি বাড়ানো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মঙ্গলবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলনুর মাম্মাদভের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি ঢাকায় দূতাবাস খোলা এবং ঢাকা ও বাকুর মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আজারবাইজান একটি প্রত্যন্ত দেশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা উপমন্ত্রীকে বলেন, সরাসরি ফ্লাইট বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জ্বালানি সংক্রান্ত পড়াশোনার সুযোগ করে দেবে এবং আজারবাইজানের শিক্ষার্থীরাও বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাত থেকে শিখতে উৎসাহিত বোধ করবে।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, এখানে দূতাবাস খুললে ভিসা সমস্যাও দূর হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, অবকাঠামো এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের ওপর আলোকপাত করা হয়। আলোচনাকালে প্রধান উপদেষ্টা গত নভেম্বরে বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। তিনি কপ-২৯ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনের জন্য আজারবাইজান সরকারকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বাকুতে তাদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠানোর জন্য প্রেসিডেন্ট আলিয়েভকে ধন্যবাদ জানান। প্রধান উপদেষ্টা আজারবাইজানের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং বিপুল মানবসম্পদের সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমরা আপনাদের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের প্রায় ১৮ কোটি মানুষ রয়েছে যার অর্ধেকই তরুণ। তাই এখানে কোনো শিল্প স্থাপন করলে শ্রমিকের অভাব হবে না।
আজারবাইজানের উপমন্ত্রী মাম্মাদভ বলেন, তার দেশ দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩৫তম বার্ষিকীর আগে বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়। আমরা এখানে আমাদের সম্পর্ক গভীর করতে এসেছি।
উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাম্মাদভ প্রধান উপদেষ্টাকে দুর্নীতি দমন এবং জনসেবা সরবরাহে দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য আজারবাইজানের ‘আসান’ এবং ‘ডিওএসটি’ মডেলগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণও তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা ‘আসান এবং ডিওএসটি’ ধারণার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে এই প্ল্যাটফর্ম তৈরির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বছরের জুলাই মাসে আজারবাইজানে অনুষ্ঠেয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার ১৭তম শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতির একটি আমন্ত্রণপত্র প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেন।