শিরোনাম
◈ দেশের ৮ জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যু ◈ সারাদেশের সব পলিটেকনিকে টানা এবার শাটডাউন ঘোষণা ◈ সরকার যেসব শর্ত দিয়েছে মানবিক করিডোরের জন্য  ◈ কাঙ্ক্ষিত বাণিজ্যের জন্য পাকিস্তান-বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা ◈ আমরা আরেকটা গাজা হতে চাই না: রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ প্রসঙ্গে ফখরুল (ভিডিও) ◈ অভিনেতা ইরেশ জাকেরের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যা বললেন ◈ প্রথম আলোর ঈদ কার্টুন ইস্যুতে সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন, ৪ মে আদেশ ◈ সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য বেতন গ্রেড নিয়ে সুখবর ◈ বিল পরিশোধ না করায় ইউনাইটেড গ্রুপের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন ◈ ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০৮ রাত
আপডেট : ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলার আহ্বানে যা বলেছিলেন মোদি: আল জাজিরাকে ড. ইউনূস (ভিডিও)

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না বলে উল্লেখ করেছেন। রবিবার আল জাজিরায় প্রকাশিত ‘টক টু আল জাজিরা’ নামের ওই সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, নির্বাচন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান, সাবেক সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন তিনি। 

সাক্ষাৎকারে আল জাজিরার সাংবাদিক নিয়েভ বার্কার শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের বিষয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্য জানতে চান। এ সময় তিনি বলেন, বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনাকে নিষ্ক্রিয় রাখার অনুরোধ করেছিলেন। তবে মোদি জানান, ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উন্মুক্ত থাকায় শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। 

আল জাজিরা সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, শেখ হাসিনা নিজেকে এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দাবি করে ভারতে থেকে বিবৃতি দিচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এটিকে কীভাবে দেখে? 

জবাবে ড. ইউনূস বলেছেন, ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে মোদির সঙ্গে আমার আলোচনায় আমি স্পষ্ট করেছিলাম, শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখতে চাইলে তা আপনার ইচ্ছা। কিন্তু তার উচিত নয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য করা। তার বক্তব্য জনগণকে উত্তেজিত করছে এবং আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে।

তখন নিয়েভ বার্কার জানতে, মোদি কী বলেছিলেন?

তখন ড. ইউনূস বলেন, তিনি বলেছিলেন, ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সবার জন্য উন্মুক্ত। সেখানে কারও বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।

আল জাজিরা সাংবাদিক প্রশ্ন করেন,  অর্থাৎ আপনি বলছেন, মোদি বলেছেন ভারতে বাকস্বাধীনতা বন্ধ করতে পারবেন না। ফলে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর কোনও নিশ্চয়তাও পাননি। এ অবস্থায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের কী প্রভাব পড়বে?

প্রধান উপদেষ্টা এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা আমাদের দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করতে হবে। আমরা আমাদের আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত চাওয়া হয়েছে, তবে এখনো কোনও সাড়া পাইনি। আইনি প্রক্রিয়া এগিয়ে গেলে বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে উঠবে।

সাক্ষাৎকারে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেছেন, এটি দলের (আওয়ামী  লীগ) উপর নির্ভর করবে — তারা অংশগ্রহণ করবে কি না। আমরা এখনও জানি না; তারা কিছু ঘোষণা করেনি। যখন তারা করবে, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।

এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শুধু নির্বাচন কমিশন নয়। অন্যান্য দল বা আইনগত বিধানও এর মধ্যে আসতে পারে, যার অধীনে তাদের অংশগ্রহণের অনুমতি নাও হতে পারে।

ভারতের আগে চীন সফর করার সিদ্ধান্ত কি ইচ্ছাকৃত কি না ও এর মাধ্যমে কোনও বার্তা দিতে চেয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে

ড. ইউনূস বলেন, আমি আমার প্রতিবেশী দেশগুলোকেই সফর করছি। ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, সাড়া পাইনি। তাই প্রথমে চীন গেলাম। এরপর মালয়েশিয়া যাবো। এর আগে থাইল্যান্ডের ব্যাংককেও ছিলাম।  আমি আশেপাশের অনেক দেশেই সফর করছি এবং চেষ্টা করছি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সংগঠন সার্ককে আবার সক্রিয় করতে। সার্ক এখন অচল অবস্থায় রয়েছে। আমি সব সার্ক নেতাদের আহ্বান জানাচ্ছি—চলুন একসঙ্গে কাজ করি, আবার যোগাযোগ বাড়াই।  একইসঙ্গে বিমসটেক নিয়েও কাজ করছি। বলছি, আসুন একত্র হই, সমস্যা মেটাই এবং এগিয়ে চলি। মূল লক্ষ্য হলো—দেশগুলোকে একত্র করে মানুষের জীবনমান উন্নত করা।  বর্তমানে বাংলাদেশ বিমসটেকের চেয়ারম্যান, তাই এই দায়িত্ব গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি আমরা আসিয়ান সদস্যপদ পাওয়ার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।

এ সময় সাংবাদিক জানতে চান, আপনি আঞ্চলিকভাবে যার সঙ্গে সম্ভব, তার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে ভারত কিছুটা উদাসীনতা দেখিয়েছে। এখন কি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার দিকে ঝুঁকছেন?

এর জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমি ‘উদাসীনতা’ বলবো না।  এটা সাময়িক একটা বিষয়। আমাদের একসঙ্গে সমাধান করতে হবে।  আমি এটাকে চূড়ান্ত বা দীর্ঘস্থায়ী কিছু মনে করি না।  বন্ধুত্বই টিকে থাকার চাবিকাঠি। আমি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার ওপর জোর দিচ্ছি।  ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিশ্বের সেরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কগুলোর একটি হওয়া উচিত।

আরেক প্রশ্নে সাংবাদিক জানতে চান, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে আপনার প্রতি অসন্তোষ দেখিয়েছেন। শোনা যায়, আপনি তাকে হারানোর জন্য তহবিল দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে আপনার অনুদানের কথা উল্লেখ করা হয়। এখন ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় ফিরছেন, এই প্রেক্ষিতে কি আপনি সে সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত?

এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,  ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে।  কোনও সমস্যা নেই।  আমরা একসঙ্গে কাজ করছি এবং শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছি। 

আল জাজিরার নিয়েভ বার্কার  জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্রকে কি এখনও নির্ভরযোগ্য অংশীদার মনে করেন? আপনার কি বেইজিং আর ওয়াশিংটনের মধ্যে কোনও একটি পক্ষ বেছে নিতে হচ্ছে?

তখন ড. ইউনূস বলেন,  না।  এটা কোনও পক্ষ নেওয়ার বিষয় নয়।  সবাই আমাদের বন্ধু—যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু, চীন বন্ধু, ভারতও বন্ধু। অনুবাদ: বাংলাট্রিবিউন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়