মনজুর এ আজিজ : আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ডাবল সার্কিট লাইনে ফল্ট হওয়ার খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের যশোর, বেনাপোল ও নোয়াপাড়া উপকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট ১০টি জেলায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট। তবে ২৩০ কেভি ঈশ্বরদী-ভেড়ামারা-ঝিনাইদহ লিঙ্ক চালু থাকায় ২৩০ কেভি এবং ১৩২ কেভি লেভেলে সংযুক্ত ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, নড়াইল ও চুয়াডাঙ্গা উপকেন্দ্রসমূহ চালু ছিল। রোববার বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২৩০ কেভি লিঙ্ক ব্যবহার করে পাওয়ার গ্রিডের ন্যাশনাল লোড ডেচপাস সেন্টার (এনএলডিসি) ও অন্যান্য দপ্তরের তাৎক্ষণিক প্রচেষ্টায় দক্ষতার সাথে যশোর, বেনাপোল, নোয়াপাড়া উপকেন্দ্রসমূহ চালু করা হয়। ফলে বর্ণিত এলাকাসমূহে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ৪০০/২৩০/১৩২ কেভি আমিনবাজার এবং ৪০০/২৩০/১৩২ কেভি গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্র থেকে ৪০০ কেভি আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ডাবল সার্কিট লাইনের প্রটেকটিভ রিলের ফল্ট রেকর্ডসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট লাইনের ফল্টের কারণে ১৩২০ মেগাওয়াট বিসিপিসিএল (পায়রা), ১৩২০ মে.ও. আরএনপিএল, ৩০৭ মে.ও. বরিশাল ইলেকট্রিক, ১৩২০ মে.ও. রামপাল, ২২৫ মে.ও. ভোলা নতুন বিদ্যুৎ ও ২২৫ মে.ও. ভোলা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ৫০০ মে.ও. এইচভিডিসি ব্লক-২ ট্রিপ করে প্রায় ২২৭৭ মে.ও. বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৬.১৯ টায় ৪০০ কেভি আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ সার্কিট-১ এবং ৬.২৫ টায় সার্কিট-২ চালু করা হলে ৪০০ কেভি আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ-আমতলী লিঙ্কটি সচল হয়।
সিনক্রোনাইজিং বিদ্যুৎ প্রাপ্তির ফলে ৭ টায় ১৩২০ মে.ও. বিসিপিসিএল (পায়রা) বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এবং ৭:০৮ টায় ইউনিট-২ সিনক্রোনাইজ করা হয় এবং ৭:৩০ টা নাগাদ বর্ণিত অঞ্চলের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রও গ্রিড নেটওয়ার্কে সিনক্রোনাইজ করা হলে ৯ টায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক হয়।
প্রাথমিকভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আমিনবাজার উপকেন্দ্র থেকে প্রায় ৬৫ কি.মি. দূরে এবং গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্র থেকে প্রায় ২৫ কি.মি. দূরে সার্কিট-১ এর ব্লু-ফেজ এবং সার্কিট-২ এর রেড-ফেজ এর মাঝে ট্র্যানজিয়েন্ট শর্ট-সার্কিট সংঘটিত হওয়ার কারণে সার্কিট দুটির উভয় প্রান্ত থেকে সিস্টেম প্রোটেকশনের জন্য ব্যবহৃত প্রটেকটিভ রিলের স্বয়ংক্রিয় অপারেশনে তদসংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহ ট্রিপ করে।
উপরোক্ত তথ্যের বিস্তারিত কারিগরি যৌক্তিকতা অনুসন্ধানের নিমিত্তে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং পাওয়ার গ্রিড থেকে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বর্ণিত ট্রিপিং এর বিস্তারিত কারণসহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আনুষাঙ্গিক বিষয়সমূহ পরিস্কারভাবে জানা যাবে। ওই সময়ে দেশে ১৪ হাজার ৫২০ মে.ও. বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছিল বলে জানানো হয়েছে।